Hare to Whatsapp
রাজ্যের প্রান্তিক জনপদগুলিতে গুণগত শিক্ষার প্রসারে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ২৭, : রাজ্যে গুণগত শিক্ষার সম্প্রসারণ সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। প্রান্তিক জনপদগুলিতেও গুণগত শিক্ষার প্রসারে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। ২৬ সেপ্টেম্বর লংতরাইভ্যালি মহকুমার ছৈলেংটা ইংরেজী মাধ্যম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের নবনির্মিত দ্বিতল ভবনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। বিদ্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বিকাশে সরকার শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রের বিকাশে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। রাজ্যে ১২৫টি বিদ্যালয়কে বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১০০টি বিদ্যালয়কে বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয় করা হয়েছে। আরও ২৫টি বিদ্যালয়কে বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয় প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে। ছৈলেটা ইংরেজী মাধ্যম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়কেও বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয় করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু করেছে। নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি আমাদের রাজ্যেও কার্যকর হচ্ছে। এই নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি আগামী দিনে শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করে তুলবে। তাছাড়াও ছাত্রছাত্রীদের দক্ষতা বিকাশেও সহায়ক ভূমিকা নেবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা রাজ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়নে গৃহিত কর্মসূচিগুলির উল্লেখ করে বলেন, নিপুন ত্রিপুরা ও মিশন মুকুল প্রকল্প শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন আনছে। শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়নে চলতি অর্থবছরের বাজেটে পিএম শ্রী প্রকল্পে প্রতিটি ব্লকে একটি করে মডেল স্কুল স্থাপনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এজন্য বাজেটে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনা চলতি অর্থবছর থেকে চালু হবে। এই যোজনায় দ্বাদশমান পরীক্ষায় প্রথম ১০০ জন ছাত্রীকে বিনামূল্যে স্কুটি দেওয়া হবে। দিব্যাঙ্গজন ছাত্রছাত্রীদের জন্য চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ স্কলারশিপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টিচিং লার্নিং মেটিরিয়্যাল তৈরী রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক নতুন দিশা নিয়ে আসছে। পিএম শ্রী ও বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পে রাজ্যের ৪০০টি সরকারি বিদ্যালয়কে আধুনিকিকরণ করা হবে। রাজ্যে শিক্ষার পরিকাঠামোর উন্নয়নে আগামী ৫ বছরে ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। রাজ্য সরকার শিক্ষায় ছাত্রীদের উৎসাহিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারি মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠরত ছাত্রীদের বিভিন্ন ধরণের ফি মকুব করা হয়েছে। ২০২২- ২৩ অর্থবছরে রাজ্য সরকার ছাত্রীদের মধ্যে ৪৪ হাজার ৬০০টি সাইকেল বিতরণ করেছে। এই প্রকল্পটি চলতি অর্থবছরেও চালু থাকবে।
এজন্য বাজেটে ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গুণগত শিক্ষার সম্প্রসারণে রাজ্যের ৭৫২টি বিদ্যালয়ে স্মার্ট ক্লাস শুরু করা হয়েছে। ৬০৪টি বিদ্যালয়ে ইনফরমেশন কম্পিটিশন টেকনোলজি প্রজেক্ট চালু হয়েছে। আরও ২৯৪টি বিদ্যালয়ে এই প্রকল্প চালুর প্রক্রিয়া চলছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিকাশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। অ্যাক্ট ইস্ট পলিসিতে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিকাশে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন ও জনসাধারণের আর্থসামাজিক মান উন্নয়নে গতি এসেছে। ধলাই জেলাকে আসপিরেশন্যাল জেলা হিসেবে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক শম্ভুলাল চাকমা এবং ধলাই জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা ডা. সিদ্ধার্থ শিব জয়সবাল। উপস্থিত ছিলেন আমবাসা বিএসি'র চেয়ারম্যান পরিমল দেববর্মা, পুলিশ সুপার অভিনাশ রাই, সমাজসেবী জ্যোতিলাল সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এমডিসি সঞ্জয় দাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা শিক্ষা আধিকারিক যতন কুমার দেববর্মা। উল্লেখ্য, ভারত সরকারের নীতি আয়োগ প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় ছৈলেংটা ইংরেজী মাধ্যম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর জন্য ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা।