Hare to Whatsapp
দেশের পরম্পরাগত শিল্পক্ষেত্রের বিকাশে পিএম-বিশ্বকর্মা যোজনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে : কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় প্রতিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ১৯, : দেশের পরম্পরাগত শিল্পক্ষেত্রের বিকাশে পিএম-বিশ্বকর্মা যোজনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। এই যোজনা সমাজে পিছিয়ে পরা কারু ও কারিগরী শিল্পীদের দেশের উন্নয়নের মূলধারায় যুক্ত করারও এক প্রয়াস। ১৭ সেপ্টেম্বর আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২নং প্রেক্ষাগৃহে পিএম-বিশ্বকর্মা যোজনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ নয়াদিল্লিতে যশভূমি - দোয়ারকায় এক অনুষ্ঠানে পিএম-বিশ্বকর্মা যোজনার উদ্বোধন করেন। নয়াদিল্লিতে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, কেন্দ্রীয় উদ্যোগ ও বাণিজ্য মন্ত্রী পীযুষ গোয়েল, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, কেন্দ্ৰীয় মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পমন্ত্রী নারায়ণ রানে, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ভানু প্রতাপ বার্মা প্রমুখ। নয়াদিল্লিতে পিএম-বিশ্বকর্মা যোজনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২নং প্রেক্ষাগৃহে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। নেপকো'র (নর্থ ইস্টার্ণ ইলেকট্রিক পাওয়ার করপোরেশন) উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আগরতলা রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতনলাল নাথ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের প্রধান সচিব কে এস শেঠি, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, নেপকো'র কারিগরী বিভাগের আঞ্চলিক অধিকর্তা নরেন্দ্র শর্মা। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আজ দেশের জন্য এক শুভদিন। যারা রাষ্ট্র নির্মাণে কাজ করে তাদের কল্যাণে, পিএম-বিশ্বকর্মা যোজনার সূচনা হল। এই যোজনার মধ্যদিয়ে নির্মাণ, হস্তকারু ও কারিগরী শিল্পীদের আত্মনির্ভর হতে সহায়তা দেওয়াই নয়, তাদেরকে সম্মানিতও করা হচ্ছে। অবহেলিত একটি গোষ্ঠীর বিকাশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই যোজনা রূপায়ণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই যোজনা দেশের গ্রামীণ এলাকার অর্থনৈতিক বিকাশেও ভূমিকা নেবে। অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, পিএম-বিশ্বকর্মা যোজনায় ১৮টি বৃত্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই যোজনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে ১৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দেশের চিরাচরিত, ঐতিহ্যের ধারাকে বিকশিত করে আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা বলেন, এই যোজনায় ক্ষুদ্র হস্তকারু ও কারিগরী শিল্পীদের অর্থনৈতিক বিকাশে সহায়তা দেওয়া হবে। হস্তকারু ও কারিগরী শিল্পীদের উৎসাহিত করতেই এই যোজনা চালু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নেপকো'র কারিগরী বিভাগের আঞ্চলিক অধিকর্তা নরেন্দ্র শর্মা। তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী কারিগরী শিল্পীদের বিকাশে এই যোজনার সূচনা হয়েছে। এই শিল্পীদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘বিশ্বকর্মা” হিসেবে অবহিত করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন এই যোজনার সহায়তায় আজকের বিশ্বকর্মারা আগামীদিনে উদ্যোগপতি হবেন। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নেপকো'র কার্যকারী অধিকর্তা (হাইড্রো) সমীরণ গোস্বামী।
পিএম-বিশ্বকর্মা যোজনা গ্রামীণ ও শহরে ভারতের প্রথাগত শিল্পী ও কারিগরদের সহায়তার এক নতুন কেন্দ্রীয় প্রকল্প। এই যোজনায় ১৮টি প্রথাগত বৃত্তিকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এই ১৮টি বৃত্তি হল কাষ্ঠ শিল্পী (ছুতোর), নৌকা প্রস্তুতকারক, অস্ত্র প্রস্তুতকারক, লৌহ শিল্পী (কামার), হাতুড়ি ও সরঞ্জাম নির্মাতা, তালার মিস্ত্রী, স্বর্ণ শিল্পী (স্যাঁকরা), মৃৎ শিল্পী (কুমোর), ভাস্কর, চর্মকার, রাজমিস্ত্রী, ঝুড়ি/মাদুর/ঝাটা নির্মাতা, প্রথাগত পুতুল ও খেলনা প্রস্তুতকারক, কেশ শিল্পী (নাপিত), মালি (মালাকার), রজক (ধোপা), পোশাক প্রস্তুতকারক (দর্জি) ও মাছ ধরার জাল নির্মাতা। এই যোজনার আওতায় শিল্পী ও কারিগরদের শংসাপত্র ও পরিচয়পত্র দিয়ে স্বীকৃতি জানানো হবে। তাছাড়া প্রথম পর্যায়ে এই সমস্ত শিল্পীদের প্রথম পর্যায়ে ১ লক্ষ ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড়যুক্ত বিশেষ ঋণ দেওয়া হবে। তাছাড়া দক্ষতা উন্নয়ন, সরঞ্জামের জন্য উৎসাহ, ডিজিটাল লেনদেনের জন্য উৎসাহ ও বিপণন সংক্রান্ত সহায়তা দেওয়া হবে।