Hare to Whatsapp
রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে সরকার সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, আগষ্ট ২৮, : রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে সরকার সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছে। চিকিৎসা পরিষেবার সম্প্রসারণেও সরকারের প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসার জন্য বাইরের রাজ্যে যাওয়ার প্রবণতা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। কারণ রাজ্যেই উন্নত চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে। ২৭ আগস্ট হাঁপানিয়াস্থিত ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ ও ড. বি আর আম্বেদকর মেমোরিয়াল টিচিং হাসপাতালের ১৮তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবসের আয়োজন করা হয়েছিল নবনির্মিত বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী এদিন কলেজের নবনির্মিত বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামেরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ ও ড. বি আর আম্বেদকর মেমোরিয়াল টিচিং হাসপাতালের উন্নতিকল্পে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কোভিডকালীন সময়ে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো থেকে হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির সাথে সাযুজ্য রেখে ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের মান বজায় রাখা প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। পাশাপাশি কলেজের ফ্যাকাল্টি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকাও আবশ্যক। শিক্ষার্থীদের এই মেডিক্যাল কলেজের ইতিহাসের পাশাপাশি যে সমস্ত শিক্ষকরা এই কলেজের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন তাদের সম্পর্কেও জানা দরকার। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় অতি কম সময়ে রাজ্যে আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ডেন্টাল কলেজে পঠন-পাঠন শুরু হবে। ছাত্রছাত্রী ভর্তি সহ ফ্যাকাল্টি নিয়োগের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমবাসায় পিপিপি মডেলে আরও একটি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ প্রভৃতি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এক কথায় সবদিক থেকে রাজ্যে একটি স্বাস্থ্য হাব গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য ১০০টি নতুন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। রাজ্যের প্রতি জেলায় ১টি করে নেশামুক্তি কেন্দ্র স্থাপন করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিকে কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে রূপান্তর করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার ত্রিপুরা হেলথ সার্ভিসকে জেনারেল ডিউটি এবং স্পেশালিস্ট দুটি বিভাগে ভাগ করায় স্পেশালিস্ট চিকিৎসকরা রাজ্যে আসছেন। এজিএমসি ও জিবি হাসপাতালে ৯টি সুপার স্পেশালিস্ট বিভাগ খোলা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় রাজ্যে প্রায় ১৩ লক্ষ আয়ুষ্মান কার্ড সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত জন আরোগ্য যোজনায় রাজ্যের যেসব পরিবার আওতাভুক্ত হতে পারেনি তাদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা নামে একটি নতুন প্রকল্প চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে ৫৯ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রামপ্রসাদ পাল বলেন, আজকের দিনটি একটি স্মরণীয় দিন। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার আন্তরিক প্রচেষ্টায় নবনির্মিত বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামটির আজ উদ্বোধন হলো। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন আগরতলা বিবেকনগরস্থতি রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী শুভাকারানন্দ মহারাজ, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অরিন্দম দত্ত। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ ও ড. বি আর আম্বেদকর টিচিং হাসপাতালের সোসাইটির সিইও স্বপন সাহা। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. প্রমথেশ রায়। তাছাড়া অনুষ্ঠানে এমবিবিএস পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য ফলাফলের জন্য পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার স্বরূপ ছাত্রছাত্রীদের মেডেল ও শংসাপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের বার্ষিক রিপোর্টও পেশ করেন কলেজের অধ্যক্ষ অরিন্দম দত্ত৷