Share Whatsapp

উন্নত দন্ত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানে আধুনিক প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, আগষ্ট ২৬, : চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্যকর্মীগণ রাজ্যে রোগীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। জনগণকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য পরিষেবার সাথে যুক্ত সকলস্তরের কর্মীদের প্রতি ভরসা রাখতে হবে। তাদের প্রতি সহনশীল হতে হবে। ২৫ আগস্ট প্রজ্ঞাভবনে রাজ্যের দন্ত চিকিৎসকদের নিয়ে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। ন্যাশনাল ওরাল হেলথ প্রোগামের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনের এই কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে।বর্তমানে রাজ্যেই বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে। চিকিৎসা ব্যবস্থার এই উন্নতি হওয়ার ফলে রাজ্য থেকে বহির্রাজ্যে চিকিৎসা প্রদানের ক্ষেত্রে রেফারেল রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে উন্নত দত্ত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানে আধুনিক প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। রাজ্যে দন্ত চিকিৎসার উন্নয়ন ও প্রসারের লক্ষ্যে আই জি এম হাসপাতাল কমপ্লেক্সে রাজ্যবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। শীঘ্রই কলেজটিতে ৫০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে বি ডি এস কোর্সে পঠন পাঠন শুরু করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নের লক্ষ্যে স্পেশালিটি, সুপার স্পেশালিটি পরিষেবা চালু করেছে। জিবি হাসপাতাল ও আইজিএম হাসপাতালে রেফারেল রোগীর চাপ কমানোর উদ্দেশ্যে জেলা ও মহকুমা হাসপাতালগুলিকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। প্রতিটি জেলা হাসপাতালে দ্রুত ও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে ট্রমা কেয়ার সেন্টার স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ত্রিপুরা, গোমতী এবং ধলাই জেলা হাসপাতালে ট্রমা সেন্টার চালু করা হয়েছে। রাজ্যের মৌলিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য ১০০টি নতুন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এরজন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটেও প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রাখা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পৌঁছে দিতে করবুক, কুমারঘাট এবং পানিসাগর কমিউনিটি হেলথ সেন্টারকে মহকুমা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়াও বক্সনগর, কাঞ্চনমালা, মোহনপুর, কল্যাণপুর, নতুনবাজার এবং অম্পিতে ৬টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার হাসপাতালে ‘মেরা হাসপাতাল পোর্টাল' চালু করা হয়েছে। এই পোর্টালটি ই-হাসপাতাল প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত করা হয়েছে,যা ক্যান্সার পীড়িত রোগীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে সহায়ক হবে। এছাড়াও আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও জিবিপি হাসপাতাল সহ সমস্ত জেলা হাসপাতালগুলোতে ই-রেডিওলজি এবং টেলি-রেডিওলজি পরিষেবা চালু হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারত - প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা চালু হয়েছে। এই যোজনায় রাজ্যে প্রায় ১৩ লক্ষ আয়ুষ্মান কার্ড সুবিধাভোগীদের প্রদান করা হয়েছে। ২ লক্ষের উপর সুবিধাভোগী এই প্রকল্পের সুযোগ লাভ করেছেন। আয়ুষ্মান ভারত জন আরোগ্য যোজনায় রাজ্যের যে সমস্ত পরিবার আওতাভুক্ত হতে পারেনি তাদের জন্য রাজ্য সরকার মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা নামে একটি নতুন প্রকল্প চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরজন্য চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে ৫৯ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। তাতে রাজ্যের অবশিষ্ট ৪.৭৫ লক্ষ পরিবার উপকৃত হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার দীর্ঘ ২৩ বছর পর চিকিৎসকদের প্রমোশন প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ত্রিপুরা হেলথ সার্ভিস রুলস-এর সংশোধন করে টি এইচ এস-এর ক্যাডার স্ট্রেংথ ১৪৮০ থেকে বৃদ্ধি করে ২১৭০ করা হয়েছে এবং জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার ক্যাডার ও স্পেশালিস্ট মেডিক্যাল অফিসার ক্যাডার তৈরী করা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ১টি করে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট নেশামুক্তি কেন্দ্র স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরজন্য চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থানও রাখা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ড. দেবাশিষ বসু বলেন, ডেন্টাল সার্ভিসের উন্নয়ন ও প্রসারে রাজ্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে। জনগণকে দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসা পরিসেবা প্রদানের লক্ষ্যে জেলা ও মহকুমা স্তরের হাসপাতালগুলিতেও আধুনিক দন্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা চালু করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ভারপ্রাপ্ত মিশন অধিকর্তা ডা: নূপুর দেববর্মা এবং ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েসনের রাজ্য শাখার সভাপতি ডা: সমীর রঞ্জন দত্ত চৌধুরী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পদ্মশ্রী ডা: শাহদাব মোহম্মদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা ডা: অঞ্জন দাস, মেডিক্যাল এডুকেশনের অধিকর্তা ডা: হরপ্রসাদ শর্মা, ত্রিপুরা হেলথ সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা ডা: সুপ্রিয় মল্লিক প্রমুখ।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.