Hare to Whatsapp
র্যাগিংয়ে পঙ্গু দশমের ছাত্রী !
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, আগষ্ট ২২, : র্যাগিংয়ে বন্ধ হচ্ছে না রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে। আইন করেও স্কুল এবং কলেজে র্যাগিং বন্ধ করতে পারেনি শিক্ষা দফতর। দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে র্যাগিংয়ে নামে মারধর করে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। নিজের পায়ে হাঁটতে পারছে না এই ছাত্রীটি। এরপরও স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসন আহত ছাত্রীর পাশে চিকিৎসার জন্য দাঁড়ায়নি। ছাত্রীর গরিব বাবা ঘরে রেখেই মেয়ের দেখভাল করছেন। এই ঘটনা কুমারঘাটের একলব্য স্কুলের হোস্টেলে। হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে গন্ডাছড়ার মঙ্গল মগ'র মেয়ে সীমায়ু মগ। এখন অসুস্থতার জন্য হোস্টেলেও যেতে পারছে না। দশম শ্রেণির ছাত্রী সীমায়ু পড়াশোনা প্রায় বঙ্গের মুখে গত ১৬ অগস্টে একলব্য স্কুলে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠান ছিলো। শরীরের অসুস্থতার জন্য সীমায়ু অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেনি। বিশ্রাম নিতে নিজের শ্রেণি কক্ষে ঢুকে যান। তা দেখতে পেয়ে স্কুলেরই দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র শ্রেণি কক্ষে ঢুকে সীমা কে গালিগালাজ করে। র্যাগিংয়ে নামে তাকে বিশ্রি ভাষায় কথাবার্তা বলে। পরে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র তার দুই বন্ধুকে ডেকে এনে আবারও সীমায়ু 'কে বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে দেয়। এখানেই থেমে থাকেনি তারা, র্যাগিংয়ে নামে এই ছাত্রীকে মারধর করে। তার মুখে এবং বুকে আঘাত করা হয়। সীমায়ুর বাবা মঙ্গলের অভিযোগ, মারধরের কারণে অজ্ঞান হয়ে পড়ে তার মেয়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গেই ছাত্রীকে কুমারঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাত্রীটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি ছাত্রীর অভিভাবককে জানায়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরদিন নিজের বিছানা থেকে দু'পায়ে দাঁড়াতে পারছিলো না সীমায়ু। নামতে গিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। তাকে আবারও কুমারঘাট হাসপাতালে নেওয়া হয় । চিকিৎসকরা এবার তাকে কৈলাসহর জেলা হাসপাতালে রেফার করে। জেলা হাসপাতাল ছাত্রীকে জিবিপি হাসপাতালে রেফার করতেই এবার স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়েটির বাবাকে খবর দেয়। মঙ্গল সহ পরিবারের লোকজন এই খবর পেয়ে কৈলাসহর হাসপাতালে ছুটে যেতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়েকে তাদের হাতে তুলে দেয়। কিন্তু গরিব পরিবারটির পক্ষে আগরতলা জিবিপি হাসপাতালে এনে মেয়ের চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়ে উঠছে না। এই অবস্থায় গন্ডাছড়ায় মগ পাড়ায় তার নিজের বাড়িতেই মেয়েকে নিয়ে যান মঙ্গল। কোলে করে মেয়েকে বিছানা থেকে আনা-নেওয়া করতে হচ্ছে বাবাকে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে ঘরের মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন মা-বাবা। তারা মেয়ের চিকিৎসার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের সাহায্য চাইছেন। সাহায্য না পেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে আইনের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন মঙ্গল। এই ঘটনা জানাজানি হতেই কুমারঘাটের একলব্য স্কুলে কি ধরনের র্যাগিং চলছে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগিং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ- এক ছাত্রী প্রায় পঙ্গু হয়ে যাওয়ার পরও রাজ্যের শিক্ষা দফতর- এখনও পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। পুলিশ প্রশাসনও নীরব হয়ে আছে।