বিভিন্ন দপ্তরে নবনিযুক্ত কর্মচারীদের জনস্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, এপ্রিল ২৮, : রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নবনিযুক্ত কর্মচারীদের জনস্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার স্বচ্ছতার সাথে নিয়োগনীতি প্রণয়ন করে সরকারি চাকরি প্রদান করছে। আজ যারা সরকারি চাকরিতে যোগদান করেছেন তারা সকলে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছেন। কারোর পরিচিতি এক্ষেত্রে তাদের চাকরি পাওয়াতে কোনও সহায়তা করেনি। রাজ্য সরকারের স্বচ্ছ নিয়োগনীতির ফলেই তা সম্ভবপর হয়েছে। তাই স্বচ্ছতার সাথে সময়ের কাজ সময়ে শেষ করতে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ২৭ এপ্রিল আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে রাজ্য সরকারের পূর্ত দপ্তর, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তর এবং ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেডে নবনিযুক্ত চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগপত্র বন্টন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা এই অভিমত ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে পূর্ত দপ্তরে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে ১৯৭ জন, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরে সি.ডি.পি.ও. এবং আই.সি.ডি.এস. সুপারভাইজর পদে ১২৬ জন এবং ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেডে অ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজার, ক্যাশ কাম জেনারেল ক্লার্ক এবং মাল্টি টাস্কিং স্টাফ পদে ১৫৬ জন সহ মোট ৪৭৯ জনকে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ প্রতীকি হিসেবে কয়েকজনের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সম্প্রতি কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হানায় নিহত পর্যটকদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে যে দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছেন সেই লক্ষ্যে রাজ্য সরকারও দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ৩,২৯৬ জন সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র পেয়েছেন। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১৬ হাজার ৯৪২ জনকে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ করা হয়েছে। তাছাড়াও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আউটসোর্সিং ও চুক্তির ভিত্তিতে ৫,৭৭১ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের মাধ্যমে গত তিন বছরে রাজ্যের শিল্পাঞ্চলগুলিতে ১,৬১৭টি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সমবায়ের মাধ্যমে রাজ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৯ লক্ষ মানুষ সমবায়ের সাথে যুক্ত রয়েছেন। ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশনের উদ্যোগে বর্তমানে রাজ্যে ৫৩,৬২৩টি স্বসহায়ক দল গড়ে উঠেছে। ৪ লক্ষাধিক মহিলা এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ত্রিপুরা আরবান লাইভলিহুড মিশনের আওতায় ৫,৯৪১টি স্বসহায়ক দলে প্রায় ৬৩ হাজারের বেশি মহিলা যুক্ত রয়েছেন। রাজ্যে বর্তমানে ৯১,৮৭১ জন লাখপতি দিদি রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, এই দপ্তর সাধারণ মানুষ ও সমাজের জন্য কাজ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের মাধ্যমে দিব্যাঙ্গজনদের কল্যাণ সহ দপ্তরের নানাবিধ জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের কথা তিনি অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। গ্রামীণ অর্থনীতিতে স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের কর্মচারীদের এবং রাজ্যের পরিকাঠামো উন্নয়নে পূর্ত দপ্তরের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে সমবায় দপ্তরের মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া বলেন, রাজ্য সরকারের স্বচ্ছ নিয়োগনীতির মাধ্যমেই কর্মপ্রার্থীদের নির্বাচন করা হয়েছে। সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর প্রযুক্তি নির্ভর ই-অফিস, ই-ক্যাবিনেট সহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা চালু করেছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে মুখ্যসচিব জে.কে. সিনহা বর্তমান পরিবর্তনশীল যুগে প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে কাজে লাগিয়ে নবনিযুক্ত কর্মচারীদের দায়বদ্ধতার সাথে সরকারি কাজকে ত্বরান্বিত করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণে উৎকর্ষতার জন্য ত্রিপুরা জাতীয়স্তরে পুরস্কৃত হচ্ছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব অপূর্ব রায় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন...