Hare to Whatsapp
আগরতলায় নেরাম্যাকের বিপণন ও ভ্রাম্যমান বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন করলেন কৃষিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, আগষ্ট ১৮, : গোটা বিশ্ব জুড়েই এখন জৈব ও প্রাকৃতিক চাষের উৎপাদিত পণ্যের ব্যাপক আগ্রহ ও চাহিদা। দেরিতে হলেও আমাদের ত্রিপুরায়ও শুরু হয়েছে যার প্রসার। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে দুই হাজার হেক্টর থেকে অনেকটাই বেড়ে গিয়ে এখন কুড়ি হাজার হেক্টর জমিতে জৈবচাষ পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে বলে এক পরিসংখ্যানে জানিয়েছেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ।
আর এই জৈবচাষের এবং প্রাকৃতিক চাষের উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণ থেকে শুরু করে অন্য নানা ক্ষেত্রে কৃষকদের এবং স্বসহায়ক দলের সদস্যদের সহায়তা করে চলেছে নেরাম্যাক অর্থাৎ ‘উত্তরপূর্ব আঞ্চলিক কৃষি বিপণন নিগম’। শুক্রবার(১৮ আগস্ট) আগরতলার প্যারাডাইস চৌমুহনিতে উদ্যানবিদ্যা দফতরের অফিসের সামনে যাদের একটি নতুন বিপণন কেন্দ্র বা আউটলেটের উদ্বোধন করলেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ। যেখানে ত্রিপুরার বিভিন্ন পণ্যের পাশাপাশি উত্তরপূর্বের অন্য রাজ্যেরও নানা ধরনের দারুণ-সব জিনিসপত্র কেনার সুযোগ করে দিয়েছে নেরাম্যাক।
উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ২০১১ সালের পর থেকে নেরাম্যাকের কাজকর্মের গতি কিছুটা কমে গেলেও এখন ফের নতুন কলেবরে ব্যাপক উদ্যমে গোটা রাজ্যজুড়ে কাজ শুরু হয়েছে। এমনকি যে নালকাটার আনারস প্রক্রিয়াকরণ কারখানা দিয়ে এ রাজ্যে নেরাম্যাকের কাজের সূচনা, সেটাকেও কতটা পুনরুজ্জীবিত করা যায়, তা নিয়েও ভাবা হচ্ছে। এই বছরেই এনিয়ে শুরু হবে কাজ। রতনলাল নাথ জৈবচাষের প্রেক্ষাপটে ভারতের অবস্থানের উল্লেখ করে বলেছেন, বিশ্বে জৈবচাষের ক্ষেত্রে ভারত বর্তমানে চতুর্থ স্থানে রয়েছে। ত্রিপুরায় জৈবচাষের মাধ্যমে আনারস, সুগন্ধি ধান, গোলমরিচ, হলুদ, আদা এগুলোর চাষ হচ্ছে। যাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সমস্ত রকম পদক্ষেপ শুরু হয়েছে। সরকারের এই প্রচেষ্টার ফলে জৈবচাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মধ্যেও। বর্তমানে কুড়ি হাজারেরও বেশি কৃষক কোনো না কোনো জৈবচাষের সঙ্গে যুক্ত আছেন। নতুন নতুন সম্ভাবনার উন্মোচন হচ্ছে এর মধ্য দিয়ে। সম্প্রতি রাজ্যের ভুট্টাকে প্রক্রিয়াকরণের পরে অন্য রাজ্যে রফতানির উদ্যোগ শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় ৩২ মেট্রিক টন এই প্রক্রিয়াকৃত ভুট্টা রফতানির জন্য তৈরি। এক কথায় কৃষকদের আয় বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে রূপরেখার সন্ধান দিয়েছেন, সেই পথ ধরেই কাজ করে চলেছে রাজ্যের কৃষি দফতর।
নেরাম্যাকের এই বিপণন কেন্দ্রের পাশাপাশি এদিন একই সঙ্গে ভ্রাম্যমান বিক্রয়কেন্দ্রেরও সূচনা হয়েছে। যে গাড়িতে বিভিন্ন ফলের রস, চাপাতা, আদা, হলুদ, জ্যাম-জেলি থেকে শুরু করে নানা ধরনের জিনিস পাওয়া যাবে।
অনুষ্ঠানে ছিলেন নেরাম্যাকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অবসরপ্রাপ্ত কোমোডর রাজীব অশোক। তিনি জানান, এই আউটলেটটি ছাড়াও বর্তমানে অরুন্ধতিনগরে, মহকুমা শাসকের অফিসে এবং আখাউড়া স্থল বন্দরে রয়েছে বিপণন কেন্দ্র। খুব শীঘ্রই সাব্রুম, সোনামুড়া এবং আগরতলা রেল স্টেশনেও খোলা হবে এরকম বিপণন কেন্দ্র। অনুষ্ঠানে কৃষিসচিব অপূর্ব রায়, নেরাম্যাকের ত্রিপুরা জোনালের ইনচার্জ শঙ্কর নাথ সহ অন্য আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন।