Hare to Whatsapp
অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণীর মানুষের কল্যাণে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে : মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুলাই ২১, : বর্তমান সরকার রাজ্যের সকল অংশের মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। রাজ্যে অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণীর মানুষের কল্যাণে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। সবকা সাথ, সবকা বিকাশের স্লোগানকে সামনে রেখে জাতি, জনজাতিসহ অন্যান্য সকল অংশের মানুষের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করছে। ২০ জুলাই সচিবালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণী কল্যাণ মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা একথা বলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণী কল্যাণ মন্ত্রী শ্রীমতি চাকমা দপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের বিবরণ এবং সুবিধাভোগীদের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি জানান, শিক্ষা ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ওবিসি কল্যাণ দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে, এরমধ্যে অন্যতম হল প্রথম থেকে দশম শ্রেণীতে পাঠরত ওবিসিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের প্রি-মেট্রিক স্কলারশীপ প্রদান। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৫ হাজার ৬৯৬টি আবেদন ন্যাশনাল স্কলারশীপ পোর্টালে জমা পড়েছে। ইতিমধ্যেই ৩ হাজার ৯৫০ জন ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কলারশীপ মঞ্জুর করা হয়েছে ৫৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। একাদশ শ্রেণী থেকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়স্তরে পাঠারত ওবিসিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের পোষ্ট মেট্রিক স্কলারশীপের জন্য ন্যাশনাল স্কলারশীপ পোর্টালে আবেদন জমা পড়েছে ২০ হাজার ৭৩টি। এরমধ্যে স্কলারশীপ হিসাবে ৭ হাজার ৫৪০ জন ছাত্রছাত্রীকে ২১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণী কল্যাণ মন্ত্রী জানান, ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক এবং দ্বাদশ শ্রেণী পরীক্ষায় ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী মেধা তালিকায় শীর্ষস্থান অর্জন করে তাদের ড. বি আর আম্বেদকর মেমোরিয়াল গোল্ড মডেল সম্মান প্রদান করা হয়। তাদের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসাবে নগদ ২৫ হাজার টাকাসহ স্বর্ণপদক এবং শংসাপত্র প্রদান করা হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৬ জনকে এই সম্মান দেওয়া হয়। এজন্য দপ্তরের ব্যয় হয়েছে ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও রয়েছে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ওবিসিভুক্ত যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী ৬০ শতাংশেরও বেশী নম্বর পেয়েছে তাদের প্রত্যেককে ১৫০০ টাকা করে ড. বি আর আম্বেদকর মেরিট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। ২০২২-২৩ সালে ৩ হাজার ২৬২ জন এই অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে এবং এরজন্য দপ্তরের ব্যয় হয়েছে ৪৮ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা। তিনি আরও জানান, ২০২০-২১ সাল থেকে রাজ্য সরকার আর্থিকভাবে দুর্বল ওবিসি সম্প্রদায়ের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। যাদের বাৎসরিক আয় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার নিচে সেই সমস্ত ওবিসিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবছর ৫০ হাজার টাকা করে দুই বছরের জন্য মোট ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়, যা পোস্টমেট্রিক স্কলারশীপের অতিরিক্ত। বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের জন্যই মেধার ভিত্তিতে নির্বাচিত ছাত্রছাত্রীদের এই সহায়তা করা হয়ে থাকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট ৬৬৯টি আবেদন জমা পড়েছে এবং বর্তমানে আবেদনগুলি পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণী কল্যাণ মন্ত্রী জানান, আর্থসামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল দুঃস্থ ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য দপ্তরের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা। ২০২২-২৩ সালে ৬৫ জন রোগীকে ওবিসি কল্যাণ দপ্তরের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা করা হয়। এরজন্য ব্যয় হয়েছে ২ লক্ষ ৯৬ হাজার ১১৬ টাকা। ইতিমধ্যেই ওবিসি কল্যাণ দপ্তর ওবিসিভুক্ত গরীব রোগীদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য বেনিফিসিয়ারী ম্যানেজমেন্ট পোর্টালে অনলাইন প্রক্রিয়া চালু করেছে, যাতে সুবিধাভোগীরা সহজেই আর্থিক সহায়তার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। ওবিসিভুক্ত জনগণের জীবনযাত্রার বিকাশে দপ্তরের পক্ষ থেকে ২০২৩-২৪ সালে মৎস্য চাষের জন্য জিরানীয়ার শ্রীনিবাস দেবনাথকে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৪০০ টাকা আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। ৭ জন ওবিসিভুক্ত ছাত্রছাত্রীকে দপ্তরের পক্ষ থেকে শিক্ষা ঋণ হিসেবে ৫ লক্ষ ১৬ হাজার ৫০০ টাকা প্রদান করা হয়েছে। ওবিসি কো-অপারেটিভ ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে রাবার চাষের সঙ্গে যুক্ত ১০০ জন সুবিধাভোগীকে আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদান করা হয়েছে। ওবিসিভুক্ত জনগণের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নের জন্য ত্রিপুরা ও বি সি কর্পোরেশন নয়াদিল্লীর একটি সংস্থার সাথে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। গত এপ্রিল মাসে নলছড়ের দশমিঘাটে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পন্ন হয় এবং ১০০ জন রাবার উৎপাদক সুবিধাভোগীদের মধ্যে আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রদান করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে দপ্তরের অধিকর্তা নির্মল অধিকারী উপস্থিত ছিলেন।