Hare to Whatsapp
রাজ্যে গুণগতমানের শিক্ষা প্রদানে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুলাই ২১, : রাজ্যে গুণগতমানের শিক্ষা প্রদানে রাজ্য সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স' হিসাবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। তবেই শিক্ষাক্ষেত্রে দেশের মধ্যে রাজ্যের মুখ আরও উজ্জ্বল হবে। ২০ জুলাই কুঞ্জবনস্থিত ইনস্টিটিউড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিস ইন এডুকেশন-এর (আইএএসই) বর্ষব্যাপী হীরক জয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সভ্যতার অগ্রগতির যুগেও ছাত্রছাত্রীদের পাঠাগারে গিয়ে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বই পড়ার মধ্য দিয়েই মস্তিষ্কের উৎকর্ষতা বাড়ে। ল্যাপটপ বা মোবাইলের মাধ্যমে পড়াশুনা করলে মস্তিষ্কের উৎকর্ষতা বাড়েনা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রায়শই বলে থাকেন যে যাদের কাছে জ্ঞান থাকবে আগামীদিনে পুরো পৃথিবী তাদের হাতের মুঠোয় থাকবে। তাই ছাত্রছাত্রীদের মূল্যবোধের শিক্ষা প্রদানে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আরও আন্তরিক হতে হবে। ছাত্রছাত্রীদেরও আদর্শ শিক্ষকের গুণাবলী অনুসরণ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটা ঐতিহ্য রয়েছে। আগে বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য নালন্দা, তক্ষশিলার মতো প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়তে আসতো। প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা ব্যবস্থা বর্তমানেও প্রাসঙ্গিক। পুঁথিগত বিদ্যার সাথে সাথে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাতে ছাত্রছাত্রীরা যাতে এগিয়ে যেতে পারে সেজন্যই অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর দেশে নুতন জাতীয় শিক্ষানীতি তৈরী করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছাত্রছাত্রীদের গুণগত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সহ নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে। তাই ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট টিউশনের উপর নির্ভরতা কমিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের গুরুত্ব দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলা চর্চার উপরও গুরুত্ব দিতে হবে। তবেই সে মানসিক ও শারীরিকভাবে সমৃদ্ধ হবে। রাজ্য সরকার শিক্ষার পরিকাঠামোগত উন্নয়নে আন্তরিক। বাজেটেও শিক্ষার জন্য সবথেকে বেশী বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিস ইন এডুকেশনের উন্নয়নের জন্যও এবারের বাজেটে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, ডেন্টাল কলেজ সহ বহু সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলিকে ভিত্তি করেই রাজ্যে শিক্ষার হাব গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার কাজ করছে। এক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ইআরসি-এন সিটিই-র চেয়ারপার্সন প্রফেসর নিলীমা ভগবতী বলেন, আজকের দিনটি এই প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। কোনও প্রতিষ্ঠান ৬০ বছর সুনামের সঙ্গে পরিচালনা করা সহজ বিষয় নয়। প্রধামন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রবর্তন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। অনুষ্ঠানে শিক্ষাদপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী বলেন, রাজ্যে গুণগত শিক্ষা প্রদানে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের এই প্রচেষ্টায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্তরিক অংশগ্রহণ আরও প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিস ইন এডুকেশনের অধ্যক্ষ ডঃ রত্না রায় বলেন, ১৯৬৪ সালে এই প্রতিষ্ঠানে পথচলা শুরু হয়। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষক প্রশিক্ষণ ছাড়াও এনসিটিই-র গাইড লাইন অনুসারে সিলেবাস তৈরীতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা। ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিস ইন এডুকেশনের হীরক জয়ন্তী উৎসব পালন উপলক্ষ্যে এই প্রতিষ্ঠানের ৩ জন প্রাক্তন কর্মীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা:) মানিক সাহা সংবর্ধনাস্বরূপ তাদের হাতে স্মারক উপহার তুলে দেন৷