Hare to Whatsapp
জনজাতি এলাকার উন্নয়নে রাজ্য সরকার সংবেদনশীল ও উদ্যোগী : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুলাই ৮, : ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ এলাকার উন্নয়নে ৯,৯৪৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর কর্তৃক সরাসরি ১,১৪৩ কোটি টাকা এডিসিকে দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকাও স্বশাসিত এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হয়েছে। আজ বিধানসভায় বিধায়ক সুদীপ সরকার কর্তৃক ‘রাজ্যের সার্বিক বিকাশের স্বার্থে, এডিসি'র হাতে অধিক ক্ষমতা ও অর্থ প্রদানের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত The Constitution (125th Amendment ) Bill 2019 অবিলম্বে সংসদে পাশা করার জন্য ত্রিপুরা বিধানসভা কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছে' আনীত বেসরকারি প্রস্তাবের উপর আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
বেসরকারি প্রস্তাবের উপর আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, জনজাতি এলাকার উন্নয়নে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার খুবই সংবেদনশীল ও উদ্যোগী। The constitution (125th Amendment) Bill 2019 এই বিলটি ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সালে রাজ্যসভায় উত্থাপিত হয়। বিলটি পরীক্ষা নিরীক্ষার পর স্বরাষ্ট্রবিষয়ক স্থায়ী কমিটির নিকট বিলটি প্রেরণ করা হয়। ৫ মার্চ, ২০২০ স্থায়ী কমিটি তার রিপোর্ট জমা দেয় এবং এই বিলে কিছু সংশোধনের প্রস্তাব রাখে। রিপোর্টে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে এই বিলে বিভিন্ন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সহমতে আনার প্রস্তাব করা হয়। রাজ্য সরকারও সেই মতে জনজাতিদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে মতামত প্রদান করে বিভিন্ন বিষয়ে সংশোধনীতে সম্মতি প্রদান করেছে। এই বিলটি যাতে অতিসত্বর পাশ হয় তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সময় সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, জনজাতিদের উন্নয়নে রাজ্য সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিশায় গঠনমূলক চিন্তাভাবনা নিয়ে এগিয়ে চলছে। সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা, জনজাতি কল্যাণ, বন, শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তি, পূর্ত, সড়ক পরিবহণ, উদ্যান ও ভূমি সংরক্ষণ ও খাদ্য ইত্যদি দপ্তরের মাধ্যমে ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে অধিক অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। স্পেশাল অ্যাসিস্টেন্স সেন্ট্রাল ফান্ডের অধীনে ২০১৮-১৯ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে এডিসি এলাকার পরিকাঠামোগত উন্নয়নে প্রায় ১১৪ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এডিসি এলাকার উন্নয়নে রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা দপ্তরের কাছে ৩৬৪ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তাছাড়াও ভারত সরকারের জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের কাছে ৪৭ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বর্তমান সরকার জাতি, জনজাতিদের সর্বময় উন্নয়নে সর্বদাই আগ্রহী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের সার্বিক কল্যাণে স্টাইপেন্ডের হার বৃদ্ধি, একলব্য মডেল স্কুল স্থাপন ছাড়াও এডিসি এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবার বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণ, মুখ্যমন্ত্রী রাবার মিশন, বনাধিকার আইন বাস্তবায়ণে সরকার সক্রিয় রয়েছে। প্রস্তাবটির উপর আলোচনা করতে গিয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সরকার গঠন হওয়ার পর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের অধিক ক্ষমতা পাওয়া দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। তিনি রাজ্য সরকারের সদর্থক মনোভাবের প্রতি সকলকে বিশ্বাস রাখতে আহ্বান জানান। বেসরকারি এই প্রস্তাবটির উপর আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলনেতা বিধায়ক অনিমেষ দেববর্মা, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক জিতেন্দ্র চৌধুরী, বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ, বিধায়ক চিত্তরঞ্জন দেববর্মা, বিধায়ক শম্ভুলাল চাকমা। আলোচনার পর বিধায়ক সুদীপ সরকারের আনীত বেসরকারি প্রস্তাবটি সভাকর্তৃক বাতিল করা হয়।