Hare to Whatsapp
পরিত্যক্ত জলাশয়গুলো চিহ্নিত করে মাছ চাষের উপযুক্ত করে তোলা হবে : মৎস্য মন্ত্রী সুধাংশু দাস
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুন ১৫, : রাজ্যে মাছের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনার মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রকল্পে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ১০০ হেক্টর নতুন জলাশয় সৃষ্টি করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৪ জুন সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে মৎস্য মন্ত্রী সুধাংশু দাস এ সংবাদ জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে মৎস্যমন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যের যে সমস্ত জলাশয়গুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে সেগুলোকে চিহ্নিত করে মাছ চাষের উপযুক্ত করে তোলা হবে। ইতিমধ্যেই দপ্তর পরিত্যক্ত জলাশয়গুলি চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করেছে। মৎস্য মন্ত্রী জানান, রাজ্যে মৎস্য ক্ষেত্রের উন্নয়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সহায়তা হিসেবে ২৪ কোটি ১১ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা মঞ্জুর করেছে। ইতি মধ্যে ৫ কোটি ৭৭ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছে। মৎস্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনার অধীনে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ১৩টি নতুন আই এম সি হ্যাচারি স্থাপন করা হবে, ১০টি রঙ্গিন মাছ পালন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, মাছ বিক্রির জন্য তাপ নিরোধক বাক্স সহ ৫৫টি বাইসাইকেল, ১০০টি মোটর সাইকেল এবং ৫০টি তিন চাকার গাড়ি দেওয়া হবে,খোয়াই জেলার চাম্পাহাওড়ে ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১টি মাছের ভেলু অ্যাডেড ইউনিট স্থাপন করা হবে, ৪২৪৬ জন জেলেকে তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।
মৎস্য দপ্তর ২০২১-২২ থেকে ০০২২-২৩ অর্থবর্ষে যে সমস্ত বিষয়ে সফলতা অর্জন করেছে সাংবাদিক সম্মেলনে তা তুলে ধরে মৎস্যমন্ত্রী জানান, এই দুই অর্থবর্ষে সারা রাজ্যে ২৫০.০৫ হেক্টর নতুন জলাশয় সৃষ্টি করা হয়েছে, ৫০৯.১৮ হেক্টরে মৎস্য চাষের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে, ১টি চিংড়ি হ্যাচারি এবং ৭টি আই এম সি হ্যাচারি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি জানান ১৩টি রঙিন মাছ পালন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে,৫৬টি বায়োফ্লক ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে,৬টি মৎস্য বিপণী চালু হয়েছে, খোয়াই জেলা, পশ্চিম জেলা এবং গোমতী জেলাতে ৩টি জ্যান্ত মাছ বিক্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। মৎস্যমন্ত্রী জানান, মাছের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ১৩টি ফিশ ফিড মিল স্থাপন করা হচ্ছে, মাছ চাষের অফ সিজনে ৬,৩৮১ জন মৎস্যচাষিকে জীবিকা নির্বাহের জন্য জনপ্রতি মাসিক ১০০০ টাকা করে তিন মাসের জন্য ৩০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ৫৭টি মৎস্যচাষী পরিবারকে ঘর নির্মাণের জন্য ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, মাছ বিক্রি এবং পরিবহনের জন্য তাপনিরোধক বাক্স সহ ২৪৩টি বাইসাইকেল, ৭৪টি মোটর সাইকেল এবং ৪৫টি ত্রিচক্রযান প্রদান করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে মৎস্যমন্ত্রী জানান, মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডম্বুর জলাশয়ে ৫৫.৪০ লক্ষ মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনার অধীনে জাতীয় মৎস্য উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ৫টি হ্যাচারি নির্মাণ করা হয়েছে এবং আরও ৫টির কাজ চলছে এবং জাতীয় মৎস্য উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ত্রিপুরার ১১টি প্রধান নদীতে ৩৬.৬০ লক্ষ মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে।এছাড়াও মাছের চাহিদা পূরণে দপ্তরের ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনাও মৎস্য মন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে তুলে ধরেন। সাংবাদিক সম্মেলনে মৎস্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ মাছ খায়।ফলে রাজ্যে মাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে চাহিদার তুলনায় মাছ উৎপাদনের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। মাছের এই ঘাটতি পূরণে দপ্তর বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মৎস্য দপ্তরের সচিব বি এস মিশ্রা এবং অধিকর্তা মোহম্মদ মুসলেমউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।