Hare to Whatsapp
রাজ্য সরকারের দায়িত্ব প্রতিভাবানদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেওয়া : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুন ৮, : আমাদের রাজ্যে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। প্রতিভাবানরা এতদিন সুযোগের অভাবে এগিয়ে যেতে পারেনি। রাজ্য সরকারের দায়িত্ব প্রতিভাবানদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দেওয়া। বর্তমান রাজ্য সরকার রাজ্যের প্রতিভাবান যুবক যুবতীদের, কিশোর কিশোরীদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দিচ্ছে। ৭ জুন বিকালে নজরুল কলাক্ষেত্রে ত্রিপুরা ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রথম ব্যাচের ছাত্রছাত্রীদের শংসাপত্র প্রদান ও মউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
গত বছর ২৮ নভেম্বর ত্রিপুরা ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের পথচলা শুরু হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত কলকাতার সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের সাথে যৌথ উদ্যোগে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের পরিচালনায় নজরুল কলাক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানটিতে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনা করছে। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে এই প্রতিষ্ঠানে স্ক্রিন অ্যাক্টিং, ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন, প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট ফর সিনেমা অ্যান্ড টেলিভিশন এবং নিউজ অ্যানকোরিং, রিপোর্টিং অ্যান্ড নিউজ রুম অটোমেশন এই চারটি স্বল্পমেয়াদি কোর্সে ৪৮ জন ছাত্রছাত্রী সাফল্যের সঙ্গে তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করেছে। অনুষ্ঠানে প্রথম ব্যাচের ছাত্রছাত্রীদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ তাদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট ত্রিপুরার উন্নয়নের একটি পালক। এমন একটি ইনস্টিটিউট এখানে তৈরি হবে তা আগে আমরা কখনও ভাবিনি। এ প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, আরও বড় ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার ইচ্ছা রাজ্য সরকারের রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যে সমৃদ্ধ কৃষ্টি ও সংস্কৃতি রয়েছে। রাজ্যের ঐক্য ও সংহতিকে আরও বেশি সুসংহত করতে প্রতিটি ব্যক্তির ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, আমরা যা শিখবো তার গভীরে যেতে হবে। তবেই এই শিক্ষায় স্বার্থকতা আসবে। আমরা চাই ত্রিপুরার সবাই যেন সবদিক দিয়ে এক্সট্রা অর্ডিনারি হয়। স্বল্পমেয়াদি কোর্সে যে ৪৮ জন সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং শংসাপত্র গ্রহণ করেছেন তাদের তিনি শুভেচ্ছা জানান। এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা এবং এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ার কাজে এগিয়ে আসার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সবার প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী। তিনি বলেন, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ক্ষেত্রে পেশাদারি, শিক্ষাগত উৎকর্ষতা প্রদানের মাধ্যমে রাজ্যের যুবক যুবতীদের আরও বেশি উৎসাহী করে তুলতে এবছর টেলিভিশন ও ওটিটি ক্ষেত্রে স্ক্রিন প্লে রাইটিং, স্ক্রিন অ্যাক্টিং দুটি কোর্সে ভর্তির প্রক্রিয়া চলছে। চলতি বছরেই ডিজিটাল সিনেমাটোগ্রাফি, ডিজিটাল অ্যাডিটিং, ফিল্ম ডাইরেকশন এবং সাউন্ড রেকর্ডিং ও ডিজাইনিং বিষয়ে স্বল্পমেয়াদি কিছু কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি কোর্সের জন্য কোর্স ফি বাবদ রাজ্য সরকার ৯০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। ১০ শতাংশ কোর্স ফি দিতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। তিনি বলেন, বহির্রাজ্যে গিয়ে এই কোর্সগুলি করা অনেক বেশি ব্যয়বহুল। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষিত ৪৮ জন ছাত্রছাত্রীকে তিনি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। বক্তব্য রাখেন সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট কলকাতার অধিকর্তা হিমাংশু শেখর খাটোয়া। এসআরএফটিআই-এর পক্ষ থেকে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারক উপহার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের বিষয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র দেখানো হয়। রাজ্য সরকার ও সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের মধ্যে পরবর্তী পর্যায়ের জন্য এই অনুষ্ঠানেই মউ স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য।