Hare to Whatsapp
অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের কারণেই যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যন্ত্রনা বাড়ছে : বিদ্যুৎ মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুন ৩, : আগরতলা, ৩ মে রাজ্যকে লোডশেডিং মুক্ত রেখে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদান বদ্ধপরিকর সরকার। শনিবার উত্তর বনমালীপুরস্থিত বিদ্যুৎ নিগমের প্রধান কার্যালয়ে পরিষেবা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখে এ কথা বলেছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ। নিগমের আধিকারিকদের মন্ত্রী বলেছেন, প্রচণ্ড গরমে মানুষ যখন হাঁসফাঁস করছেন, সেসময়ে পরিষেবা ক্ষেত্রে কোনরকম অসুবিধা যেন না হয়, এই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেবার জন্যও মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন । বিদ্যুৎ মন্ত্রী জানিয়েছেন , বর্তমান সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা দুর্গাপূজার সময়কালীন চাহিদাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাজ্যে বিদ্যুতের ব্যবহার ছিল ৩৪৪ মেগাওয়াট। যা এই বছরের রেকর্ড। দুর্গাপূজার সময়ও এত বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় না বলে তিনি জানিয়েছেন। নিয়মিত চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় অত্যন্ত চড়া দামে অন্যান্য রাজ্য থেকে রাজ্যকে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে। রাজ্য সরকারের মূল লক্ষ্য, কোনোভাবেই যেন এই গরমে মানুষকে বিদ্যুতের অভাবে কষ্ট না পেতে হয়। কিন্তু একই সঙ্গে মন্ত্রী এও বলেছেন, অত্যন্ত পরিতাপের হলেও সত্যি, একাংশ মানুষ বিদ্যুৎ নিগমকে ঘুমে রেখে নিজেদের মতো করে বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছেন। যা কোনোভাবেই সংগত নয়। তিনি জানান, বিদ্যুৎ চাহিদার উপর ভিত্তি করে প্রতিটি পরিবারেই সিঙ্গেল ফেজ,ডবল ফেজ,কিংবা ট্রিপল ফেজ সংযোগ নেবার সুযোগ রয়েছে। দেখা গিয়েছে সিঙ্গেল ফেজ সংযোগ নিয়ে কোন কোন বিদ্যুৎ গ্রাহক প্রয়োজনের কারণে কেউ ঘরে এসি মেশিন লাগাচ্ছেন, কখনও কখনও দু-তিনটি মেশিন লাগিয়ে দিচ্ছেন, অনেকে বিরতিহীনভাবে এসি ব্যবহার করছেন। ফ্রিজের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছেন। অথচ এব্যাপারে বিদ্যুৎ নিগমকে অবহিত না করার কারণে নিগম ওই এলাকার ট্রান্সফরমারের লোড নির্ধারণ সহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারছে না। যে কারণে মানুষের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন এলাকায় ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে যাচ্ছে, কখনো কখনো পুড়ে যাচ্ছে অন্যান্য যন্ত্রাংশ। যা সারাই করতে গিয়ে বেশকিছু সময় ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। আর এতে করেই সাধারণ ভোক্তাদের ভোগান্তি বাড়ছে। এক্ষেত্রে রাজ্যের সর্বস্তরের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ মন্ত্রী অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের আগে বিদ্যুৎ নিগমকে অবহিত করুন। অর্থাৎ বাড়িতে, অফিসে কিংবা কারখানায়, দোকানে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ হবে এমন যন্ত্রাংশ ব্যবহারের আগে নিগমের ছাড়পত্র নিয়ে আসতে হবে। এতে করে ওই এলাকায় ট্রান্সফর্মার সহ পরিষেবা প্রদানকারী অন্যান্য বিষয়ে নিগম কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই সজাগ থাকবে। অন্যথায় ঘনঘন যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে গোটা এলাকার মানুষকে বিদ্যুৎ ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। ১৯১২ কল সেন্টারও এদিন মন্ত্রী ফের ঘুরে দেখেছেন । পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রাহকরা এই নম্বরে ফোন করে না পেলে একটু ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করার জন্যও গ্রাহকদের অনুরোধ জানিয়েছেন মন্ত্রী। ১৯১২ এর পাশাপাশি ৯৮৬৩৫৯৬০৮১ নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ করে অভিযোগ জানালেও একই রকম ভাবে সুরাহা হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। আবার গুগল প্লে স্টোর থেকে বিদ্যুৎ বন্ধু (Bidyut Bandhu) অ্যাপ ডাউনলোড করেও সেখানে যেকোনো রকম অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি বিল প্রদান সহ অন্যান্য সমস্ত পরিষেবা পাওয়া যায়। রয়েছে @TSECLCCare টুইটারের সুবিধাও। পাশাপাশি ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের ওয়েবসাইট www.tsecl.in এ গিয়েও যে কেউ পরিষেবা সংক্রান্ত যেকোনো অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি সমস্ত রকম পরিষেবা সংক্রান্ত সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।
বিদ্যুৎ মন্ত্রীর রতন লাল নাথ এদিন লালবাহাদুর ব্যায়ামাগার সংলগ্ন বনমালীপুরস্থিত নিগমের সবচেয়ে পুরানো কার্যালয়টি সফর করে এই কার্যালয়টিকে কিভাবে সাজিয়ে তোলা যায় এ বিষয়ে নিগম কর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন। বিদ্যুৎ মন্ত্রীর সঙ্গে এদিন ছিলেন নিগমের ব্যবস্থাপক অধিকর্তা দেবাশিস সরকার এবং অতিরিক্ত ব্যবস্থাপক মিতা সাহা সমেত অন্যান্য আধিকারিকরা ।