Hare to Whatsapp
আদিপ্ত, পূজা ও বন্ধনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুন ২, : মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে ১ জুন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানাবিধ সমস্যা নিয়ে মানুষ ছুটে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলতে। সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে মানুষের অভাব, অভিযোগ ও বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে আসা সাধারণ মানুষের সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হয়ে তাদের সমস্যা নিরসনে মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। আগরতলা কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা পাপড়ি সাহা বিরল এক রোগে আক্রান্ত তার সাড়ে চার বছরের পুত্র সন্তান আদিপ্ত পালের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। গত চার বছর ধরে দিল্লির এইমসে আদিপ্তর চিকিৎসা চলছে। এখন পর্যন্ত চারটি সার্জারিও করা হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসকরা গ্রোথ হরমোন থেরাপি করার কথা বলেছেন, যা খুবই ব্যয়বহুল। তেমনি সিধাই মোহনপুরের সাতডুবিয়ার বাসিন্দা দিনমজুর গৌরজিৎ সুত্রধরের ব্লাড কন্যাসারে আক্রান্ত ১২ বছরের কন্যা সন্তান পূজা সুত্রধরের চিকিৎসার জন্য এবং সাব্রুমের বাসিন্দা দিনমজুর নেপাল দাস কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত তার ৬ বছরের ছেলে বন্ধন দাসের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ছুটে আসেন। তাদের সাথে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী আদিপ্ত, পূজা ও বন্ধনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের সচিবকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতেও নির্দেশ দেন।
মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আজ সমস্যার কথা জানাতে সিধাই মোহনপুরের সুন্দরটিলার বাসিন্দা কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত কৃষিজীবি রূপল দেবনাথও এসে ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন থেকে সঙ্গে সঙ্গে আই জি এম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আই জি এম হাসপাতাল থেকে তাকে জিবি হাসপাতালে রেফার করেন। পরবর্তীতে রূপল দেবনাথের ভাগ্নে অভিজিৎ দেবনাথ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রূপলের সমস্যার কথা তুলে ধরলে মুখ্যমন্ত্রী তৎক্ষনাৎ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের রূপলের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। বি-এড পড়ুয়া ধলাই জেলার কমলপুরের বাসিন্দা পারমিতা মোদক আজ মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। পারমিতার মা ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে আগরতলার ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বাবাও শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। আর্থিক অভাবের জন্য পারমিতা তার মা ও বাবার চিকিৎসা করাতে সমস্যা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তার এই সমস্যার কথা তুলে ধরলে মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
চম্পকনগরের বাসিন্দা কৃষিজীবি নিতাই দেববর্মা ক্যান্সারে আক্রান্ত তার স্ত্রী বিশ্বরানি দেববর্মার চিকিৎসা এবং খোয়াইয়ের মুঙ্গিয়াকামীর পরিমল মলসম তার স্ত্রী পোরবাধন মলসমের শারীরিক অসুস্থতার জন্য সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাথে সাক্ষাৎ করেন। তাদের সবার সমস্যার কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। লেম্বুছড়ার সন্ধ্যা দেববর্মাও আজ তার চিকিৎসার জন্য সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। মুখ্যমন্ত্রী সন্ধ্যা দেববর্মার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেন। এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা আজ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষের সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, আগরতলা পুরনিগমের সহকারি মিউনিসিপাল কমিশনার মহেন্দ্র কাম্বে চাকমা, ডিরেক্টোরেট অব হেলথ সার্ভিসের ওএসডি ডা. দিব্যেন্দু বিকাশ দাস এবং সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা অরুণ দেববর্মা।