Hare to Whatsapp
রাজ্যের গর্ব কুইন আনারসের জিআই ট্যাগ ব্যবহারের অনুমোদন পেলেন চাষিরা
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মে ২৬, : কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ আজ আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে ডোনার মন্ত্রকের অধীনস্ত 'নর্থ ইস্টার্ন রিজিওন্যাল এগ্রিকালচারেল মার্কেটিং কর্পোরেশন' অর্থাৎ নেরাম্যাক আয়োজিত কুইন আনারসের জিআই ট্যাগিং ব্যবহারের অনুমোদন প্রদান অনুষ্ঠানের সূচনা করেন| এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের ৩০০ জন আনারস চাষি নেরাম্যাকের প্রক্রিয়াকৃত শংসাপত্রের জি.আই. ট্যাগিং (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন) ব্যবহার করার অনুমতি প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য উত্তরপূর্বাঞ্চলের ১৩টি পণ্যের জন্য এই ভৌগলিক নির্দেশক বা জি.আই ব্যবহার করার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে ত্রিপুরার কুইন আনারস একটি।
ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই ট্যাগ হল এমন একটি চিহ্ন যা একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক অবস্থান থেকে উদ্ভূত বা তৈরি হওয়া পণ্যের জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রাকৃতিক ভাবে উৎপন্ন বা মনুষ্যসৃষ্ট যে পণ্যগুলোর খ্যাতি রয়েছে, সেগুলোকেই এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। উত্তরপূর্বাঞ্চলে এর প্রসারে কাজ করছে ডোনার মন্ত্রকের অধীনস্ত 'নর্থ ইস্টার্ন রিজিওন্যাল এগ্রিকালচারেল মার্কেটিং কর্পোরেশন', যা নেরাম্যাক নামেই বিশেষ পরিচিত।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের কৃষকদের মানোন্নয়ন ও উপার্জন বৃদ্ধির লক্ষ্যে যেভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা অভূতপূর্ব। তিনি রাজ্যের আরও নানা পণ্যের জি.আই. ট্যাগিং হওয়ার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষির দীর্ঘস্থায়িত্ব, কৃষকদের অধিকার রক্ষা এবং দেশের কৃষিজাত পণ্যের রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কেন্দ্ৰীয় সরকারের বৃহত্তর উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এই জিআই ট্যাগের প্রক্রিয়া। এই প্রচেষ্টাকে রাজ্যের কৃষকরা বিশেষভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের ফসলের বিমার সুযোগ থেকে শুরু করে কৃষি রেল, কৃষির সরঞ্জাম প্রদান সহ নানা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজ্য সরকারও কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্যে কুইন আনারস ছাড়াও নানা রকম ফসল, খাবার, ঐতিহ্য রয়েছে, যেগুলোর জি.আই. ট্যাগ সম্ভব। এগুলো নিয়েও যাতে ভবিষ্যতে কিছু কাজ হয়, তার জন্য রাজ্য সরকার প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে।”
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট জি.আই. বিশেষজ্ঞ পদ্মশ্রী প্রাপক ডক্টর রজনীকান্ত দ্বিবেদী জি.আই. ট্যাগিং কেন প্রয়োজন, এটা হলে কৃষকদের কী লাভ হবে, এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি কুইন আনারসের গুণমান নিয়ে প্রশংসা করেন| অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে নেরাম্যাকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অবসরপ্রাপ্ত কোমোডর রাজীব অশোক জানান, জিআই ট্যাগিংয়ের ফলে ত্রিপুরার কুইন আনারসের অনন্য গুণমান ও খ্যাতির বিশেষ স্বীকৃতি আসবে। কীভাবে অনারস চাষিরা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে এই ট্যাগিং ব্যবহার করে উপার্জন ও জীবিকার সুযোগ বৃদ্ধি করতে পারেন, তা নিয়েও আলোচনা করেন তিনি। অনুষ্ঠানে কৃষি সচিব অপূর্ব রায়, উদ্যান ও ভূ- সংরক্ষণ দফতরের অধিকর্তা ডক্টর পি.বি. জমাতিয়া, কৃষি অধিকর্তা শরদিন্দু দাস, নাবার্ডের জেনারেল (ত্রিপুরা) লোকেন দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।