Hare to Whatsapp
৪৫০ জন হকারকে বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী ও ১০০০ টাকা করে বিশেষ অনুদান প্রদান এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে খবরের কাগজ পৌঁছে দেবার জন্য চারটি গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে : বিপ্লব কুমার দেব
By Our Correspondent
আগরতলা, মার্চ ৩১, : বর্তমান সরকার সংবাদ পত্র তথা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও প্রসারে বিশ্বাসী। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত এই সংকটময় সময়ে, গত কিছুদিন হকার ভাইদের কিছু সমস্যার জন্য রাজ্যে পত্রিকা বিলি বন্ধ ছিল।এই অবস্থায় তাদের স্বার্থে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এগুলি হল, ৪৫০ জন হকারকে বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী ও ১০০০ টাকা করে বিশেষ অনুদান প্রদান এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে খবরের কাগজ পৌঁছে দেবার জন্য চারটি গাড়ির ব্যবস্থা করা। গোটা প্রক্রিয়া দেখভালের জন্য তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের একজন আধিকারিককে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
উত্তর ভারত বিশেষ করে কেরলে দিনপঞ্জি লেখার প্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে।এই ঐতিহ্য সুপ্রাচীন কালের। বাড়ীর প্রায় প্রত্যেকেই বিশেষ করে তাদের বয়স পাঁচ বছর তারাও দিনপঞ্জী লিখে থাকে। তাদের এই অভ্যাসের ধারা প্রত্যেকের জীবনকে নানা ভাবে যেমন সমৃদ্ধ করে তেমনি সৃষ্টির সমুদ্রে সাঁতার কাটতে উৎসাহ দিয়ে থাকে।এই সময়ে দিনপঞ্জি তাদের নানাভাবে সাহায্য করছে ।
এখন দুনিয়া জুড়ে লকডাউন।করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে গোটা বিশ্ব প্রায় লকডাউন। আমাদের দেশেও লকডাউন অব্যাহত।কবে পরিস্হিতির উন্নতি হবে, সংক্রমণ রোধ হবে তা বলা অনিশ্চিত।তবে এপ্রিলর ১৪ পর্যন্ত যে চলবে তাতো ঘোষিত।
কিন্তু সমস্যা হল অন্যত্র।সময় কাটানো দূঃসহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।সময় যেন কাটতেই চায় না। ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের তো আরো মহা মুস্কিল। ওদের ঘরের বাইরে,উঠানে খেলার ফুসরৎ নেই।অথচ এই সময়টা তাদের জন্যে ছোটাছুটি বা খেলার সময়।
কিন্তু না,ওরা ঘড়ের বাইরে যেতেই পারেনা বা যেতে দেয়া হয়না।বলি ঘড়ের ভেতর কতক্ষণ এরা থাকবে,ছবি আঁকবে, গীটার বাজাবে কিংবা গান গাইবে? মহা মুস্কিল।ফ্যাসাদে মা-বাবারা। যতটুকু জানি এই কদিনে কিন্তু এরা মনমড়া হয়ে গেছে,মুখের হাসি উবে গেছে,অনেকে কান্নাকাটি করছে। কোমলমতি শিশুদের মানসিক অবস্থা বিশেষ ভাল নয়। বাইরের চ্যানেল গুলি ওদের কাউন্সেলিং করার পরামর্শ দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে কে কাকে কাউন্সিলিং করবে বা কে করাবে তা দূরহ ব্যাপার।মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রা বারবার বলছেন শিশুদের মনের দিকে সবিশেষ নজর রাখতে। আরো এতদিন ঘড়ে বন্দী থাকার বিষয়টি কিন্তু হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। ওদের যেমন ক্যারাম ,লুডো,খেলাটা এই সুযোগে শিখিয়ে দিতে হবে।এতে কিন্তু এরা কদিন হয়তো হাসিখুশি থাকবে। অবলুপ্ত প্রায় ঘরের /গ্রাম বাংলার খেলা গুলি তুলে এনে শিখিয়ে দিতে হবে।
বড়দেরই প্রচন্ড সমস্যা হচ্ছে। যারা উচ্চ রক্তচাপ,রক্তশর্করায় ভুগছেন তাদের অবস্থা কিন্তু খুবই কাহিল। এরা দুবেলা ওয়াক করে প্রেসার,সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতেন। কিন্তু এখন হয়েছে মহা মুশকিল। এরা হাঁটা তো দূরের কথা পায়চারি করতে পারছেন না। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী একবেলা হাঁটার সংস্হান রয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে কে কার কথা বা নির্দেশিকা শুনে? অবগত থাকলেই তবে এরা সুবিধা দিতে পারে।
লেখক,কবি, শিল্পী তো এদের সৃষ্টির উন্মাদনা নিয়ে সময় কাটিয়ে দিতে পারে।তবে এঁরা ও বেশী সময় সৃষ্টির সমুদ্রে সাঁতার কাটতে পারে না।
প্রধানমন্ত্রী যোগের পরামর্শ দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ও দিয়েছেন। নি:সন্দেহে ভাল পরামর্শ। কিন্তু আমরা কজন যোগে অভ্যস্ত? প্রানায়াম করাতো আরো দূরহ ব্যাপার। সামান্য উল্টো পাল্টা হলেই প্রান বের হয়ে যেতে পারে।
বলছিলাম কেরালার শতাব্দী প্রাচীন দিনপঞ্জি লেখার ট্রাডিশনের কথা।ওটাকে বলা হয়ে থাকে ফ্যামিলি ডায়েরী।এতে সুবিধা অনেকটাই বেশি।যেমন যে কেউ ডায়েরী ঘেঁটেই বলে দিতে পারেন তার পূর্ব পুরুষদের আদি বৃত্তান্ত।জানতে পারে এঁরা যারা স্বর্গত: এরা কে কি করতেন,শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ নানা তথ্য।
আমাদের এখানে অনেকের পক্ষেই বলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায় পিতামহ, প্রপিতামহ দের নাম বলা। পূজা, নানা আচার অনুষ্ঠানে এসবের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমরা বলতেই পারিনা।পিতৃ তর্পন এ আবশ্যক পূর্ব পুরুষদের নাম গোত্র। আমরা বলতেই পারিনা। কিন্তু কেরালার বছরের বালকের কাছে এসব তথ্য ঠোঁটস্হ।
এই লক ডাউনের ওখানে যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমন সমস্যা হচ্ছে আমাদেরও। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ও এই বিষয়টির উপর জোর দিয়েছেন।