Hare to Whatsapp
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির পরিবেশ যাতে স্বাস্থ্যকর হয় সে বিষয়ে দপ্তরকে আরও যত্নবান হতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, এপ্রিল ১৩, : শিশুদের প্রাক বিদ্যালয় শিক্ষা, পুষ্টি ও যত্নের বিষয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তাছাড়াও গর্ভবতী মহিলা ও প্রসূতি মায়েদের পুষ্টি এবং তাদের প্রতি যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রেও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজ্যের সমস্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির আরও উন্নতিকরণ করার পাশাপাশি কেন্দ্রগুলির পরিবেশ যাতে স্বাস্থ্যকর হয় সেই বিষয়ে দপ্তরকে আরও যত্নবান হতে হবে। ১২ এপ্রিল সচিবালয়ের ২নং সভাকক্ষে আয়োজিত সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের প্রতি আরও যত্নবান হতে সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।
পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির বর্তমান অবস্থা নিয়ে দপ্তরকে একটি প্রতিবেদন তৈরী করতে হবে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির উন্নতি করতে হবে। পাশাপাশি নিয়মিতভাবে আধিকারিকদের ক্ষেত্র পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করাও দরকার। তিনি বলেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির মান এমন হতে হবে যাতে সমাজের সব অংশের অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পাঠাতে উৎসাহী হন। মুখ্যমন্ত্রী সখি নিবাসে থাকার ক্ষেত্রে আধিকারিকদের নিয়মিত মনিটরিং করার কথা বলেন এবং সখি নিবাসে থাকার সময়সীমা সম্পর্কে দপ্তরকে আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।
পর্যালোচনা সভায় সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায় সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে দপ্তরের বিভিন্ন কর্মসূচির উপর আলোকপাত করেন। তিনি জানান, রাজ্যে ৯,৯১১টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মাধ্যমে ৬ মাস থেকে ৬ বছর পর্যন্ত ৩, ১৭,৩২৭ জন শিশু এবং গর্ভবর্তী মহিলা সহ ৩৬, ১৫৩ জন মহিলা বিভিন্ন পরিষেবা পাচ্ছেন। তিনি বলেন, মারাত্মকভাবে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের পুষ্টিযুক্ত অতিরিক্ত খাবার দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে পরিশ্রুত পানীয়জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ২১৪টি নুতন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলার অনুমোদন পাওয়া গেছে। ১৪৩টি কাজ শেষ করা হয়েছে। বাকিগুলি তৈরীর কাজ চলছে। ৩১৩টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উন্নতিকরণের জন্য অনুমোদন পাওয়া গেছে। ৩,৩৯২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শৌচালয়ের সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। আরও ১৮৭৮টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এই সুবিধা প্রদান করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পোষণ অভিযান ২.০ প্রকল্পে ৯,৯১১ টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এলপিজি সংযোগ দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলিতে সংযোগ দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। ৯৪৬টি নিউট্রি গার্ডেন স্থাপন করা হয়েছে।
সভায় সচিব জানান, শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি যথাযথভাবে হচ্ছে কিনা তা নিরুপনের জন্য সবকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ৯,৯১১ গ্রোথ মনিটরিং যন্ত্র দেওয়া হয়েছে। আরও নুতন করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১০,৭৩৫টি স্মার্টফোন প্রদান করা হয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সুপারভাইজারদের মধ্যে। মুখ্যমন্ত্রী মাত্র পুষ্টি উপহার প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ৮,৩২৪ জন গর্ভবতী মা উপকৃত হয়েছে। ব্লু পুনর্বাসন এলাকায় মোট ৪৪টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, গার্হস্থ হিংসার শিকার হলে মহিলা বা মেয়েদের সহায়তার জন্য প্রতিটি জেলায় ওয়ান স্টপ সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যে ৩টি স্বধর গৃহ রয়েছে। আগামীতে প্রত্যেকটি জেলায় কমপক্ষে একটি শক্তি সদন গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দপ্তরের উদ্যোগে মহিলা সুরক্ষায় ১৮১ হেল্পলাইন নাম্বার চালু রয়েছে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৬৪৪১ জন দিবাঙ্গকে চলন সামগ্রি এবং ৩৩,০৯১ টি ইউডিআইডি কার্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও সচিব ত্রিপুরা বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও, মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযান, পোষণ পাখোবা, প্রধানমন্ত্রী মাত্র বন্দনা যোজনা, প্রবীণ নাগরিকদের জন্য প্রকল্প, সামাজিক ভাতা, মিশন বাত্সল্য প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
পর্যালোচনায় সভায় সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা মন্ত্রী টিংকু রায়, প্রধান সচিব পুনিত আগরওয়াল, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী, দপ্তরের অধিকর্তা স্মিতা মল আলোচনায় অংশ নেন।