Hare to Whatsapp
তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষের কল্যাণে রাজ্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে : তপশিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, এপ্রিল ১২, : তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষের কল্যাণে রাজ্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। রাজ্যের ৩৪টি তপশিলি জাতিভুক্ত জনগোষ্ঠীর কাছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির সুযোগ পৌঁছে দেবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১১ এপ্রিল তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের এক পর্যালোচনা সভায় তপশিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী সুধাংশু দাস একথা বলেন। গুর্খাবস্তিস্থিত জনজাতি উন্নয়ন দপ্তরের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত এই পর্যালোচনা সভায় তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্রা, দপ্তরের অধিকর্তা সন্তোষ দাস, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা, বিভিন্ন জেলা ও মহকুমার উন্নয়ন আধিকারিকগণ, ডিসিএম-গণ, হোস্টেল সুপারগণ ছাড়াও কৃষি, উদ্যানপালন, প্রাণীসম্পদ বিকাশ, পূর্ত, গ্রামোন্নয়ন, পানীয় জল, শিক্ষা, আগরতলা পুরনিগম, ট্রেডার পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। পর্যালোচনা সভায় আলোচনায় অংশ নিয়ে তপশিলিজাতি কল্যাণ মন্ত্রী সুধাংশু দাস দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মচারীদের তপশিলিজাতির আর্থ ও সামাজিক মান উন্নয়নে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শুধু পরিকল্পনা গ্রহণ করলে হবে না। তা বাস্তবায়ণ করতে হবে। পর্যালোচনা সভায় তপশিলি জাতি কল্যাণ মন্ত্রী জানান, আগামী ১৪ এপ্রিল সকাল ১০টায় বিধানসভা প্রাঙ্গণে সংবিধান প্রণেতা ভারতরত্ন ড. বি আর আম্বেদকরের মূর্তি স্থাপনের শিলান্যাস অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা।
পর্যালোচনা সভায় দপ্তরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্রা তপশিলি জাতি অংশের মানুষের কল্যাণে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি তপশিলি জাতি ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষায় উৎসাহিত করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সভায় পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে আলোচনার সূচনা করেন তপশিলিজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা সন্তোষ দাস। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে তপশিলিজাতি জনগণের কল্যাণে ১৬১টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। তাছাড়া গত অর্থ বছরে পোষ্ট মেট্রিক স্কলারশিপের জন্য ন্যাশনাল সার্ভিস পোর্টালে মোট ২১, ১৫৬টি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। এরমধ্যে ১৮,৫৪৪টি আবেদনপত্র উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। প্রি-মেট্রিক স্কলারশিপের জন্য মোট ৭৭৪৬টি আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। এরমধ্যে ৭২২৪টি আবেদনপত্র উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। প্রি-মেট্রিক ক্লিনিং এন্ড হেলথ হেজার্ড প্রকল্পের জন্য মোট ৫০৮টি আবেদনপত্র জমা পড়ে। এরমধ্যে ৩৬৭টি আবেদনপত্র উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। গত অর্থবছরে ড. বি আর আম্বেদকর মেরিট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ৬৩৩৮ জন ছাত্রছাত্রী।
সভায় দপ্তরের অধিকর্তা জানান, বাবু জগজীবন রাম ছাত্রাবাস যোজনায় সোনামুড়া দ্বাদশ শ্রেণী বালিকা বিদ্যালয়ে ৫০ আসন বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। এই যোজনায় ১০০ আসন বিশিষ্ট রাঙ্গামাটি দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে, ৫০ আসন বিশিষ্ট হরিনা হাইস্কুলে এবং ৫০ আসন বিশিষ্ট পাবিয়াছড়া দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে ছাত্রীনিবাস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ১৭টি বোর্ডিং হাউস সংস্কারে ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। ইনকাম জেনারেশন প্রকল্পে ২৪,১০৪ জনকে ১৯ কোটি ৩ লক্ষ টাকা সহায়তা করা হয়েছে। ৩২টি এসসি আদর্শ গ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী আদর্শ গ্রাম যোজনায় ৭ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। দক্ষতা উন্নয়নে ১২৯০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও গত অর্থবছরে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট নিগমগুলি থেকে রাজ্যের তপশিলি জাতি সম্প্রদায়ের ৫২৮৭ জনকে ২৯ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে। সভায় তিনি তপশিলি জাতি ও জনজাতির উপর নৃশংসতা রোধ বিষয়ক ব্যবস্থাদি নিয়েও আলোচনা করেন।