Hare to Whatsapp
১১২ নম্বরে ফোন করুন, ঔষধ ঘরে পৌঁছে যাবে আর যারা বহিঃরাজ্যে যারা আটকে পরেছেন, তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করবে সরকার: মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, মার্চ ৩১, : লকডাউনের অষ্টম দিন আজ ফের ভিডিও বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। সম্প্রতি রাজ্য সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে অবগত করেন এবং প্রত্যেককেই বাড়িতে থাকার জন্য ফের আবেদন করেন।
রাজ্যের গরীব মানুষের কল্যাণে এই সময়ে সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এগুলির কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন রাজ্য সরকার ১৫ দিনের জন্য ইপিডিএস সিস্টেমের আওতায় আসা বিপিএল, অন্তোদয়, প্রায়োরিটি হাউজহোল্ডদের বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী দেওয়ার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু অনেকে এক মাসের খাদ্য সামগ্রী তুলে নেওয়ার ফলে তাদের প্রতি কিলো দুই টাকা করে দিতে হয়েছে। তবে সরকার এই অর্থ রাশি তাদের ব্যাংক একাউন্টে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি ৫০ হাজার এপিএল গরিব পরিবারকেও বিনামূল্যে ১ মাসের খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেব বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এনএসএস-এর স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে সরকার এই কাজ করবে। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন যে রাজধানীর কিছু ক্লাব ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই কাজে তাদের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োজিত করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
"রাজ্যের সমস্ত বরিষ্ঠ নাগরিকগনের যে কোন রকম দৈনন্দিন বা মাসিক ঔষধের প্রয়োজন হলে ১১২ নম্বরে ফোন করুন, ঔষধ ঘরে পৌঁছে যাবে। বিভিন্ন মুদির দোকানের ফোন নম্বর লিফলেটের মাধ্যমে বিলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার, যাতে করে ঘর থেকে অর্ডার করা যায়।" ভিডিও বার্তায় এই কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বহিঃরাজ্যের বিভিন্ন ত্রিপুরা ভবনে যারা আটকে পরেছেন, তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে যারা রয়েছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের একাউন্টে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে বলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান।
রাজ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলোর মধ্যে কিছু কিছু ভক্তরা আটকে গেছে। রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যের যেকোন প্রান্তে, যেকোন ধর্মের, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে আটকে পরা যে ভক্তরা রয়েছেন তাদের বাস্তবিক পরিস্থিতি অনুমান করে সেখানে বিনামূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, করোনা ভাইরাস সম্বন্ধিত এই কর্মযজ্ঞে ভাগ নেওয়ার জন্য ত্রিপুরার বিধায়করা প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল, মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল এবং মহকুমা শাসকের মাধ্যমে মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্তক্রমে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে খরচ বা দান করতে পারবে,এই কঠিন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
তিনি বলেন "আপনি যদি সরকারি কর্মচারী হন তাহলে কিভাবে কাজে পারদর্শিতা আনা যাবে সেগুলি শেয়ার করুন, যদি কোন ব্যবসায়ী লক ডাউনে ঘরে আছেন তাহলে এই এক মাসের লোকসান থেকে কিভাবে উত্তরন করবেন সেটা ভাবুন ও শেয়ার করুন, যে ছাত্র বা ছাত্রীরা লকডাউনের কারনে পিছিয়ে যাওয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে তাঁরা আরও ভালো করে প্রস্তুতি নিতে পারে, কোনও বেরোজগার ভাই কিভাবে স্বরোজগারি হয়ে উঠবে সে বিষয়ে চিন্তা করতে পারে। নরেন্দ্র ভাই মোদি ১৩০ কোটি ভারতবাসীকে রক্ষা করার জন্য লকডাউন করেছেন। বিশাল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে জেনেও তিনি যে লকডাউনের আপিলটা করেছেন সেটা আমাদের সন্তানের ও আমাদের ভালোর জন্যই করেছেন।"
এদিন মুখ্যমন্ত্রী - চিকিৎসক, পুলিশকর্মী, জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত কর্মীরা এবং সাংবাদিক সহ যারা রাজ্যের মঙ্গলে দিনরাত কাজ করে চলেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আহবান করেন, "এই লকডাউন চলাকালীন যে ক্ষতি হয়েছে রাজ্য ও দেশের, তা পূরণের পরিকল্পনা তৈরি করুন বাড়িতে থেকে। এই সময়ের মধ্যে কেউ বাড়ি থেকে বের না হয়ে করোনা প্রতিরোধে ত্রিপুরাকে এগিয়ে রাখুন।"
মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেব আশা প্রকাশ করেন, সমস্ত ত্রিপুরাবাসী সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তগুলিকে প্রয়োগ করতে সহযোগিতা করবে।
তিনি ফের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহবান জানান। বলেন, "সারা রাজ্যে বড় বাজার গুলিকে খোলা জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাই এক পরিবার থেকে একজন একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাজারে গিয়ে শাকসবজি ক্রয় করবেন। তার পাশাপাশি আপনার দোরগোড়ায় বাজার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাতো রয়েছেই।"