বর্তমান সরকার জনজাতিদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আন্তরিক : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, এপ্রিল ১৩, : বৈসু, বিজু, গড়িয়া, নববর্ষ ইত্যাদি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির প্রকাশ ঘটে। বর্তমান সরকার এই কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য কাজ করছে। ১২ এপ্রিল করবুকের জলেয়াস্থিত বাঁশি চন্দ্র পাড়া ইংরেজি মাধ্যম স্কুল প্রাঙ্গণে ২দিনব্যাপী রাজ্যভিত্তিক বৈসু উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে এই কথাগুলি বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। ত্রিপুরা চুবলাই বুথু কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক বৈসু উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার সবকা সাথ, সবকা বিকাশের নীতিতে কাজ করছে। রাজ্য সরকার করবুকে একটি নতুন কলেজ খোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে এলাকার ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবে। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের সমস্যা ছিলো তার কিছুটা সমাধান হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার জনজাতিদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আন্তরিক। সরকার বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য বজায় রেখে কাজ করছে। সংস্কৃতি চর্চার দিকে লক্ষ্য রেখে সরকার এবার বাজেটে বাদ্যযন্ত্র বিতরণের জন্য ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। পুতুল নাচ, যাত্রাপালা, নাটক যেসব সংস্কৃতিগুলি হারিয়ে যাচ্ছিলো তা পুনরুদ্ধারের জন্য সরকার চেষ্টা করছে। রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে তা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মাধ্যমে গত এক বছরে ৫০১টি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ১২২টি বিভিন্ন ইভেন্ট রাজ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থাকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হয়েছে। ১০ হাজারের উপরে বিভিন্ন শিল্পী রাজ্য সরকারের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছর নভেম্বর মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৩৩০ জন শিল্পীকে রাজ্যের বাইরে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে। এতে বেশিরভাগ‍ই জনজাতি অংশের শিল্পীরা রয়েছেন। রাজ্যে ডোনার মন্ত্রকের সহায়তায় একটি কালচারাল হাব তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্যে এখন ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা, ললিত কলা একাডেমি, সাহিত্য একাডেমি, সঙ্গীত নাটক একাডেমি আছে। রাজ্যে ত্রিপুরা ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট রয়েছে। এতে আগামী প্রজন্ম উপকৃত হবে। তিনি বলেন, শান্তি সম্প্রীতি ছাড়া কোনও রাজ্য উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে পারে না। ত্রিপুরাতে এখন শান্তি সম্প্রীতি বিরাজ করছে। তাই এখানে উন্নয়ন হচ্ছে। জনজাতিদের যাতে আগামীদিনে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটে সেই লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা বলেন, এই ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই সমাজের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে হবে। তিনি নবীন প্রজন্মকে এই কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান রাখেন। অনুষ্ঠানে রাজ্যের টি.আর.পি. এবং পি.টি.জি. দপ্তরের মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া বলেন, বর্তমান সরকার প্রত্যেক জনজাতি গোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে সম্মান করে এবং তা ধরে রাখার জন্য কাজ করছে। বর্তমান সরকারের সময়ে জনজাতি গোষ্ঠীর উন্নয়ন হচ্ছে।

এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এ.ডি.সি.-র সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের কার্যনির্বাহী সদস্য ডলি রিয়াৎ, প্রাক্তন সাংসদ তথা ত্রিপুরা চুবলাই বুথুর প্রাক্তন জেনারেল সেক্রেটারি রেবতী ত্রিপুরা, বিধায়ক সঞ্জয় মানিক ত্রিপুরা, ত্রিপুরা দফার সমাজপতি বীরেন্দ্র ত্রিপুরা প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা চুবলাই বুথুর জেনারেল সেক্রেটারি তরুণীসেন ত্রিপুরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ত্রিপুরা চুবলাই বুথুর কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডেন্ট শচীন্দ্র ত্রিপুরা। তাছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এম.ডি.সি. পদ্মলোচন ত্রিপুরা, গোমতী জেলার জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা, শিলাছড়ি ব্লকের বি.এ.সি. চেয়ারম্যান থৈঙগ্য মগ, করবুক ব্লকের বি.এ.সি.-র ভাইস চেয়ারম্যান প্রণব ত্রিপুরা, সমাজসেবী অসীম ত্রিপুরা, করবুক মহকুমা শাসক শ্যামজয় জমাতিয়া প্রমুখ।

আরও পড়ুন...


Post Your Comments Below

নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।

বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।

Free Download Avro Keyboard

Fields with * are mandatory





Posted comments

Till now no approved comments is available.