Hare to Whatsapp
বুথে সংগঠন মজবুত করুন, ভালোবাসার জায়গায় নিয়ে যান নিজেকে। তবেই তৈরি হবে শক্তিশালী বিজেপিঃ মুখ্যমন্ত্রী।
By Our Correspondent
আগরতলা, ডিসেম্বর ২৩, : নেতা হতে গেলে যোগ্যতা থাকতে হবে। পরিবার বা বাবার সুপারিশে নেতা হওয়া যায়না। যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন মানুষের সুখ দুঃখে পাশে থেকে তাদের ভালোবাসা অর্জন করা। তবেই কেউ নেতা হতে পারে। ভারতীয় জনতা পার্টি বিশ্বাস করে মানুষের পাশে থেকেই প্রকৃত অর্থে নেতা হওয়া যায়। সোমবার রাজধানীর রবীন্দ্র ভবন চত্বরে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা আয়োজিত সৃজনী উন্নয়ন র্যালীতে প্রধান বক্তা হিসাবে যোগ দিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।
তিনি বলেন চাকরি করার জন্য রাজনীতিতে আসতে হবে না, যোগ্যতা থাকলে বাড়িতেই চাকরি যাবে। যারা দেশকে ভালোবাসে এবং এর সেবা করতে চায়, তারাই রাজনীতিতে আসুন। সবার মানসিকতা এভাবে তৈরি করুন।নেতার সঙ্গে সেলফি উঠিয়ে নেতা হওয়া যায় না।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন সরকার উন্নয়নমূলক কাজ করছে। পারদর্শী সরকারের সঙ্গে পারদর্শী সংগঠন প্রয়োজন। শক্তিশালী সংগঠন বুথ স্তর পর্যন্ত বিস্তৃত করার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি বলেন ভারতীয় জনতা পার্টি থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ৮০ শতাংশই হচ্ছে ৫০ বছরের নিচের। যা রাজ্যকে দ্রুত উন্নয়নের পথে নিয়ে যাবে। বিজেপির সাধারণ কর্মকর্তারাও প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন যেসব দলীয় জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন সরকারি দায়িত্বে বর্তমান সময়ে রয়েছেন, তাদের একইসঙ্গে সংগঠনের কাজকর্মকেও গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে। জনতার কাছে নিয়ে যেতে হবে সংগঠনকে। মানুষের সুখ দুঃখের সঙ্গী হতে পারলেই নেতা হয়ে যাবেন। মানুষের ভালোবাসার জায়গায় নিজেকে গড়ে তুলুন। সেলফি তুলে নেতা হতে পারবেন না।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন "যারা বলছেন নতুন সরকার বেতন-ভাতা দেয়নি, চাকরি দেয়নি, তাদের উদ্দেশ্যে বলি কেন্দ্রীয় সরকার ২৪০০ কোটি টাকা না দিলে কর্মচারীদের বেতন দেওয়া সম্ভব হতো না। এমন জায়গায় রাজ্যটাকে নিয়ে এসেছিল পূর্বেকার সরকার"। তিনি অনেকটা হুঙ্কারের সুরেই বলেন "যেটা দিয়েছি এটাও দেওয়ার ক্ষমতা ছিলো না ওদের"।
দলের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারি কাজের মূল্যায়ন করুন এবং শক্তিশালী বুথ গঠন করুন। তবে এই রাজ্যে বিজেপি সরকার দীর্ঘস্থায়ী হবে। তিনি বলেন গত ২০ মাসে ২৩০০ এর উপর চাকরি হয়েছে, এর মধ্যে নিয়মিত প্রায় ২০০০। তৈরি হচ্ছে জব ক্রিয়েটর, যুবকরা হচ্ছেন স্বাবলম্বী। বলেন রাজ্য সরকার বর্তমানে শিক্ষার গুনগত মান বৃদ্ধিতে যে কাজগুলি করে চলেছে তা যদি আগের সরকার করত তবে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অপর্যাপ্ততা থাকত না। তিনি বলেন রাজ্যে যাতে একজনও বেরোজগার না থাকে না থাকে, সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে তাঁর সরকার। এক্ষেত্রে সংগঠনকেও ইতিবাচক ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
বক্তব্যের মাঝে মধ্যেই তিনি কর্মকর্তাদের বলেন মানুষের জন্য কাজ করতে। কংগ্রেস পরিবার এবং সিপিএমে পলিটব্যুরো থেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়। বিজেপির ক্ষেত্রে সাধারণ কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ পদ অলংকৃত করতে পারেন। এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী চাণক্য নীতি অনুসরণ করে রাজনীতি করার পরামর্শ দেন।
এদিন জাতীয় রাজনীতি সম্পর্কে শ্রী বিপ্লব কুমার দেব বলে, কোন কোন রাজ্যে বিজেপি হারলে বিরোধীরা খুশি হয়ে যায়। " এই প্রসঙ্গে আমার এল কে আদভানিজির একটি কথা মনে পড়ে। নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে তিনি বলেছিলেন, এখন বিরোধীরা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়ছে, একদিন এমন সময় আসবে যখন বিজেপির বিরুদ্ধে সবাই একসঙ্গে লড়বে। সেই সময় এসে গেছে।" মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে "কংগ্রেসের এমন দুর্দিন গেছে যে ছোট ছোট রাজনৈতিক দলের বশ্যতা স্বীকার করে কাজ করতে হচ্ছে। "
এদিন এছাড়াও ছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা, মন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়, সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি টিংকু রায় সহ অন্যরা।