Hare to Whatsapp
করোনা ভাইরাস: সুযোগ বুঝে ঔষধ ব্যবসায়ীরাও নেই নেই রব তুলে দিয়েছেন, ফ্যাসাদে রোগীরা
By Our Correspondent
আগরতলা, মার্চ ৩০, : বিশ্ব জুড়ে মানব সভ্যতার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার অভাবিত মরনপন লড়াইএ যখন অভূতপূর্ব পরিস্থিতি ঠিক তখন একশ্রেনীর ওষুধ ব্যবসায়ী নেই নেই রব তুলে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে যে তার ভাবে পকেট কাটায় উঠে পড়ে লেগেছে। প্রশাসন সব দেখেও না দেখার ভান করে আছে হয়তো বা। কিন্তু মূল দায়িত্ব যে স্বাস্হ্য দপ্তরের, বিশেষ করে ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের কাছে। এদের তৎপরতা সম্পর্কে যত কম বলা যায় ততই ভালো। কারণ পরবর্তী সময়ে ওযুধ চাইলে মৃদু হেসে যদি বাইরে থেকে বিদায় করে দেয় তাহলে নত মস্তকে ফিরে আসা ছাড়া কিছুই বলার থাকবে না।
রাজধানী আগরতলায় ওষুধের দোকান নেহাত কম নয়। গত দুবছরে প্রচুর মেডিক্যাল স্টোর হয়েছে। হাত বাড়ালেই মেডিক্যাল ষ্টোর। কিন্তু এখন এই ক্রান্তিকালে এদের দরজা খোলা কম থাকে। থাকলেও এক ঝাঁপ থাকে খোলা।ওযুধ পাবেনই না।পেলেও দাম একটু আধটু বেশি লাগবেই। বক্তব্য একটাই পাওয়া যায় না, বেশী দিয়ে আনতে হয়েছে। বলার কিছুই নেই, তবু তো পেলেন।
এবার তুলে ধরা যাক কামান চৌমুহনী, বটতলা, জিবি এলাকার ষ্টোর গুলির কথা। প্রানদায়ী ঔষধগুলো নেইই বলা চলে। এই যেমন গারডিয়ান মোট ১২.৫। সুগারের ওষুধ। ১০টার ষ্ট্রিপ ৪০০ টাকা এখন এটাই ৬০০ টাকা। AZtoGold 20. হার্টের ঔষুধ। ভেজাল ঔষুধ ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনিতেই আগরতলা শহরে ভেজাল ওষুধর রমরমা। দোকানীরাই বলে থাকেন। সিলাকার ১০ বলছে ১৫০ টাকা, তাও দশটি টেবলেটর জন্য।
ইনসুলিন লুপিসিলিন ৭০/৩০ একটা এম্পল ৫০০ টাকার কম নয়। তাও পাবেন কি না গ্যারান্টি নেই। চক্কর কাটতেই হবে কামান চৌমুহনী থেকে বটতলা, বটতলা থেকে জিবি। দোকানে দোকানে। মেমো চাইলে দেওয়া হয়না। কার্ড পেমেন্ট করতে চাইলে বলে দেয়া হচ্ছে মেশিন নষ্ট। সারা বছরই এদের মেশিন নষ্ট থাকে। আসল কথা হল নগদ নারায়ন পেলে অনেক কিছু ফাঁকি দিতে পারে এরা।জিবি শ্যামলী বাজার এলাকার এক ব্যবসায়ী আছেন, তার হরেক রকম ব্যবসা রয়েছে। জিবিতে যে সব ঔষুধ দেওয়া হয় সব কিছু ওদের ওখান থেকে আনতে হয়। লোকে বলে থাকে টাকার পাহাড়। কত প্লট রয়েছে ওই গেরুয়া নেতার তা ওই এলাকার বসবাসকারী ও ঠিক মত জানেন না। এর উপর কোন আধিকারিক কথাই বলতে পারেন না। কোন অফিসার কিছু বললেই বুদ্ধমন্দির লাগোয়া এলাকা থেকে দাদার ফোন চলে আসে।কার ঘাড়ে কটি মাথা যে দোকানীর বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেবেন। বরং পালিয়ে গেলেই বাঁচে।
জীবন দায়ী ঔষুধগুলির নিশ্চয়তা কেন থাকবে না? অবশ্যই থাকতে হবে। সব রাজ্যে আছে নিশ্চয়তা, এ রাজ্যে নেই কেন? কিডনীর রোগীদের ঔষুধও বাড়ন্ত। বেশী দাম দিতে চাইলেও পাওয়া যাচ্ছে না। সিকেডি র রোগীদের অবস্থা ভয়ঙ্কর। এরা না পারছেন বহিঃরাজ্যে যেতে। অন লাইনেও আনা যাচ্ছে না। রেল নেই, গাড়ী নেই, বিমান নেই আসবে কি করে? এমন সমস্যা তো কখনো হয়নি। আরো কত যে সমস্যা নিকট ভবিষ্যতে তা এখনই বোঝা যাচ্ছে।
এরিথ্রোমাইসিন, টেট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ওষুধ ও নেই।এইচ আই ভি, এইডস রোগীদের যে সব ঔষুধ দেওয়া হয় সেগুলো ও উধাও। কেননা এগুলির এখন প্রচুর চাহিদা। কারন হিসাবে বলা হচ্ছে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় নাকি এগুলি ব্যবহার হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে এসব খবর দেখেই এগুলোর চাহিদা নাকি বেড়েছে।
আরো খবর হলো ইনহেলার সংকটের। প্রাথমিক শ্বাসকষ্টের জন্য চিকিৎসক সাধারনত প্রথম দিকে ইনহেলার দিয়ে থাকেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার রোধে বা অল্পবিস্তর যাদের লক্ষন আছে তাদের একটি অংশ না বুঝেই ইনহেলার প্রথম দিকে কিনেছেন। সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীরাও নেই নেই রব তুলে দিয়েছেন। ফ্যাসাদে পড়েছেন প্রকৃত রোগীরা যাদের শ্বাসকষ্ট রয়েছে। এবার তাঁরা পাচ্ছেন না।
এই যে সার্বিক পরিস্থিতি তা নিয়ে কবে কে দেখবেন, কে ব্যবস্হা নেবেন, কে কালোবাজারীদের জেলে দেবেন তা অনিশ্চিত।
ঔষুধ তো জরুরী পরিষেবার অন্যতম। কিন্তু এই দিকটিই এখন অবহেলিত।