Hare to Whatsapp
ত্রয়োদশ ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচন আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি : মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক কিরণ গিত্যে
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জানুয়ারি ১৯, : ত্রয়োদশ ত্রিপুরা বিধানসভা গঠনের লক্ষ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩। ভারতের নির্বাচন কমিশন ১৮ জানুয়ারি নয়াদিল্লীতে রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন নির্ঘন্ট ঘোষণা করেন। ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মহাকরণে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক কিরণ গিত্যে রাজ্যে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত নির্ঘন্ট অনুসারে ভোট গ্রহণ হবে ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বৃহস্পতিবার। ভোট গ্রহণের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞাপ্তি জারি হবে আগামী ২১ জানুয়ারি,২০২৩ শনিবার। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ পর্যন্ত। মনোনয়ন পত্র পরীক্ষা করা হবে ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের তারিখ হল ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩। ভোট গণনা হবে আগামী ২রা মার্চ,২০২৩।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক শ্রী গিত্যে জানান, এবারের নির্বাচনের বিশেষ সংযোজন হচ্ছে দৃষ্টিহীনদের জন্য ব্রেইল ভোটার ইনফরমেশন স্লিপ। দৃষ্টিহীন ভোটারগণ নিজ নিজ ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে এই পদ্ধিতিতে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। এছাড়াও এইবার প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্র ভিত্তিক একজন করে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। ৮০ বছরের উর্ধ্ব ভোটারগণ এবং দিব্যাঙ্গজনরা বাড়িতে থেকেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক আরও জানান, আজ নির্বাচন কমিশনের নির্ঘন্ট প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আদর্শ আচরণবিধি চালু করা হয়েছে। সেই অনুসারে সরকারি সম্পত্তিতে কোন রাজনৈতিক দল তার ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন, ব্যানার ইত্যাদি লাগালে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা সরিয়ে ফেলতে হবে। পাবলিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে ৪৮ ঘন্টা এবং অনুমতিহীন প্রাইভেট সেন্টারের ক্ষেত্রে ৭২ ঘন্টার মধ্যে সমস্ত প্রচার সজ্জা সরিয়ে নিতে হবে। অন্যথায় নির্বাচন দপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। রাত ১০ টা থেকে ভোর ৬ টা পর্যন্ত কোন প্রকার ভোট প্রচার কর্মসূচি করা যাবেনা। রাজ্যে মিডিয়া কমিটি বানানো হয়েছে। জেলাশাসক, রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং পুলিশ অফিসারদের প্রশিক্ষণ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। অন্যান্য কর্মচারিদেরও প্রশিক্ষণ করানো হবে। প্রয়োজনের থেকে ৩০ শতাংশের অধিক পোলিং অফিসার নির্দিষ্ট করা হয়েছে বলে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানান। ইভিএম মেশিন সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার কাজও সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোট গণনা কেন্দ্র আগের মতই থাকবে। ভোট সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যের জন্য নির্বাচন দপ্তর থেকে বিভিন্ন অ্যাপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানান, দ্বাদশ বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২২ মার্চ, ২০২৩। এবারের নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হবে ৪ মার্চ, ২০২৩।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক শ্রী গিত্যে জানান, এবারের নির্বাচনে ছয় ধরণের পর্যবেক্ষক থাকবেন। এরা হলেন জেনারেল পর্যবেক্ষক, কাউন্টিং পর্যবেক্ষক, পুলিশ পর্যবেক্ষক, মাইক্রো পর্যবেক্ষক, বিশেষ কাজ দেখার জন্য স্পেশাল পর্যবেক্ষক। তাছাড়া থাকবে ব্যয় সংক্রান্ত বিষয় দেখার জন্য এক্সপেন্ডিচার পর্যবেক্ষক তিনি জানান, অনলাইনে প্রার্থীগণ তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। এজন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রয়োজনের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি ইভিএম মেশিন পরিক্ষা করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এবারের নির্বাচনে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বলয় মোতায়েন করা হবে। প্রথম স্তরে আধাসামরিক বাহিনী দ্বিতীয় স্তরে টি এস আর বাহিনী এবং তৃতীয় স্তরে থাকবে পুলিশ বাহিনী।
রাজ্যে হিংসামুক্ত অবাধ, সুষ্ঠ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট প্রক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন দপ্তর সমস্ত রকমের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সবাইকে উৎসবের মেজাজে ভোটদান করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক শ্রী গিত্যে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানান, রাজ্যের প্রতিটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ওয়েব কাস্টিং এর ব্যবস্থা থাকবে। যেসব ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে মোবাইল নেটওয়ার্ক থাকবে না সেখানে অফ লাইনের মাধ্যমে ওয়েব কাস্টিং করা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক ঊষাজেন মগ এবং অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন।