Hare to Whatsapp
ভোক্তাদের নিজেদের অধিকার সম্বন্ধে সচেতন হতে হবে : খাদ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জানুয়ারি ১৩, : ভোক্তা কমিশনের মূল উদ্দেশ্য হলো ভোক্তা সাধারণকে সচেতন করে তোলা। ভোক্তাদের নিজেদের অধিকার সম্বন্ধে সচেতন হতে হবে। ভোক্তাদের সচেতন করে তুলতে সরকার রাজ্যে একটি রাজ্য ভোক্তা কমিশন ছাড়াও পশ্চিম জেলা, ধলাই জেলা, ঊনকোটি জেলা এবং গোমতী জেলায় ৪টি জেলা ভোক্তা কমিশন গঠন করেছে। ইতিমধ্যেই ভোক্তাদের দায়েরকৃত ৯৫ শতাংশ মামলা কমিশন নিষ্পত্তি করেছে। অবশিষ্ট জেলায় খুব শীঘ্রই ভোক্তা কমিশন গঠন করা হবে। ১২
জানুয়ারি গোর্খাবস্তিস্থিত খাদ্য ও ভোক্তা ভবনের চতুর্থ তলায় স্টেট কনজিউমার ডিসপিউটস রিড্রেসাল কমিশন ও পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা কনজিউমার ডিসপিউটস রিড্রেসাল কমিশনের নতুন কার্যালয় ভবনের উদ্বোধন করে খাদ্যমন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব একথা বলেন। উল্লেখ্য, ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই দুটি ভবনের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই দুটি ভবন নির্মাণে মোট ৪ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার বহন করেছে ২ কোটি ১০ লক্ষ টাকা এবং অবশিষ্ট ব্যয় খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ দপ্তর বহন করেছে।
অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন, গণবন্টন ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য খাদ্য দপ্তর বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাজ্য সরকার ভোক্তা সহ সকলের সার্বিক উন্নয়নে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ওয়ান ন্যাশন, ওয়ান রেশন কার্ড দেশে প্রথম ত্রিপুরায় চালু করা হয়েছে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৬২ হাজার ভুয়ো রেশন কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এতে ২ লক্ষ ৮১ হাজার মানুষ যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে প্রথম সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়। এখন পর্যন্ত খাদ্য দপ্তরের উদ্যোগে এবং কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সহযোগিতায় সহায়ক মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হয়েছে। এই মরশুমে প্রতি কিলোগ্রাম ধান ২০ টাকা ৪০ পয়সা দরে মোট ৩৫ হাজার মেট্রিক টন ধান ক্রয় করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে রেশনশপে ন্যায্যমূল্যে চাল, ডাল, সয়াবিন ইত্যাদি দেওয়া হচ্ছে। সরিষার তৈল ও গুঁড়া মশলা দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বসহায়ক দলের উৎপাদিত সামগ্রী রেশনশপে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মহিলাদের স্বশক্তিকরণের লক্ষ্যে রাজ্যে আড়াইশোর উপর মহিলা পরিচালিত রেশনশপ চালু করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনায় এখন পর্যন্ত ২ লক্ষ ৭৯ হাজার ৭৭৮টি পরিবারে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে স্টেট কনজিউমার ডিসপিউটস রিড্রেসাল কমিশনের সভাপতি তথা ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম লোধ বলেন, ভোক্তারা অনেক সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে দ্রব্য বা পরিষেবা গ্রহণে ঠকেন ও বঞ্চিত হন। ভোক্তারা এ লক্ষ্যে ঘরে বসে কমিশনে মামলা করতে পারেন। এজন্য জাতীয়, রাজ্য ও জেলাস্তরে তিনটি কমিশন রয়েছে। বিশেষ অতিথির ভাষণে আইন সচিব বিশ্বজিৎ পালিত বলেন, রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে।
অনুষ্ঠানে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা ভোক্তা কমিশনের সভাপতি রুহিদাস পাল বলেন, এই কমিশনে ভোক্তারা ২০২০ সালে ৬৮টি, ২০২১ সালে ২১৪টি এবং ২০২২ সালে ৪১৪টি মামলা নথিভুক্ত করেন। প্রায় সব মামলার নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আইনজীবী অমৃত পাল সাহা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের বিশেষ সচিব ড. সন্দীপ আর রাঠোর। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী শ্রীদেব খাদ্য দপ্তরের ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত একটি রিপোর্ট কার্ডের আবরণ উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতাস্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের অধিকর্তা নির্মল অধিকারী উপস্থিত ছিলেন।