Hare to Whatsapp
চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় মোট ভোটারের সংখ্যা ২৮, ১৩, ৪৭৮ জন : মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক কিরণ গিত্যে
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জানুয়ারি ৭, : আসন্ন ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে রাজ্যের ৬০টি বিধানসভা নির্বাচন ক্ষেত্রের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা গতকাল প্রকাশিত হয়েছে। চূড়ান্ত ভোটের তালিকা অনুযায়ী রাজ্যে মোট ভোটারের সংখ্যা ২৮,১৩,৪৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৪,১৪,৫৭৬ জন এবং মহিলা ভোটার ১৩,৯৮,৮২৫ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ৭৭ জন। খসড়া ভোটার তালিকার তুলনায় ভোটারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৯,৫৮৭ জন। বৃদ্ধির হার ২.৯১ শতাংশ। ৬ জানুয়ারি সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক কিরণ গিত্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি জানান, ভোটার তালিকা সংশোধনির জন্য স্পেশাল সামারি রিভিশন-২০২৩ এ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের ফলে প্রতি ১ হাজার জনসংখ্যার পেছনে ভোটারের সংখ্যা ৬৬৬ জন। খসড়া ভোটার তালিকায় সেই সংখ্যা ছিল ৬৪৭ জন৷ তিনি জানান, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় মহিলা ভোটারের সংখ্যা প্রতি হাজার পুরুষে বেড়ে হয়েছে ৯৮৯ জন। যা খসড়া ভোটার তালিকায় ছিল ৯৮১ জন। তিনি জানান, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী ১৮ বছর উর্ধ্ব বয়সী ভোটারের সংখ্যা ৬৫,০৪৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৪,৭০৪ জন এবং মহিলা ভোটার ৩০,৩২৮ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১২ জন। নথিভুক্ত মহিলা ভোটরের সংখ্যা পুরুষ ভোটারের চেয়ে ১০,৭৬৬ জন বেশী। তিনি জানান, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ৮০ বছর উর্ধ্বে ভোটার রয়েছেন ৩৮,০৩৯ জন। একশ বছরের উর্ধ্বে ভোটারের সংখ্যা ৬৭৯ জন। দিব্যাঙ্গ ভোটার রয়েছেন ১৭,২৯৭ জন।
সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানান রাজ্যে মোট ভোট গ্রহণ কেন্দ্ৰ রয়েছে ৩৩২৮টি। প্রতি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের আওতায় গড়ে ভোটারের সংখ্যা ৮৪৫ জন৷ তিনি জানান, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী সার্ভিস ভোটার হচ্ছেন ১০,৩৪৪ জন। মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক জানান, আসন্ন ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ৮০ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সী প্রবীণ নাগরিকদের এবং দিব্যাঙ্গদের জন্য ঘরে বসে ভোটদানের সুবিধা করা হয়েছে। প্রতিটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে হুইল চেয়ার, র্যাম্পের ব্যবস্থা থাকবে। পানীয় জল, বিদ্যুৎ, স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থাও রাখা হবে। তিনি জানান, ভোটার তালিকায় আপডেশনের কাজ চলবে। এক্ষেত্রে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় যদি কেউ বাদ পড়ে থাকেন তবে তারা নিজেদের নাম অর্ন্তভুক্ত করতে পারবেন প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ পর্যন্ত। তিনি জানান, ৫,৫০৫ ব্লু শরণার্থীদের পরিবারের প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ সদস্যকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাকি প্রায় ৮০০ ব্রু পরিবার এখনো রাজ্য সরকারের চিহ্নিত ১২টি পুণর্বাসন দেওয়া এলাকায় না যাওয়ার ফলে তাদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি।
মুখ্যনির্বাচন আধিকারিক শ্রী গিত্যে জানান, হিংসামুক্ত ভোট পরিচালনা করার জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানুষ যাতে নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তার জন্য রাজনৈতিক দল সহ সকল নাগরিকদের কাছে শ্রী গিত্যে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হিংসামুক্ত ভোট করার ক্ষেত্রে ত্রিপুরার ঐতিহ্য রয়েছে। এর সুনাম যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।তিনি জানান ইতিমধ্যেই গত ডিসেম্বর মাসে ৫০ কোম্পানী নিরাপত্তা বাহিনী রাজ্যে এসেছে। আরো ৫০ কোম্পানী আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ান বিশেষ ট্রেনে রাজ্যে আসবে।
ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহিত করার জন্য ১৪ তারিখ পৌষ সংক্রান্তির দিন প্রতিটি বাড়িতে রঙ্গোলি উৎসব আয়োজন করার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন দপ্তর। প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে ১০টি রঙ্গোলি উৎসব আয়োজন করার জন্য পুরস্কৃতও করা হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শ্রী গিত্যে জানান, আগামী ১১ই জানুয়ারী ৩ সদস্যের নির্বাচন কমিশন রাজ্যে আসছেন। তারা দু'দিন রাজ্যে অবস্থান করে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। সাংবাদিক সম্মেলনে অতিরিক্ত মূখ্যনির্বাচন আধিকারিক ঊষাজেন মগ এবং উপ মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুমন বণিক উপস্থিত ছিলেন।