Hare to Whatsapp
উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা একটা রাজ্যের উন্নতির মূল সোপান : পরিবহণ মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জানুয়ারি ৭, : উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা একটা রাজ্যের উন্নতির মূল সোপান। যে রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা যত বেশী উন্নত সে রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তত বেশী ত্বরান্বিত হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছেন। আমরাও প্রধানমন্ত্রীর পথ অনুসরণ করে এগিয়ে চলেছি। তবে বর্তমান রাজ্য সরকার শুধু সড়ক যোগাযোগ নয়, জলপথ, রেলপথ ও আকাশ পথে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ৬ জানুয়ারি আস্তাবলস্থিত পরিবহণ ভবনে রাজ্যের প্রথম কমিশনারেট অব ট্রান্সপোর্ট অফিস এবং পশ্চিম জেলা পরিবহণ কার্যালয়ের উদ্বোধন করে পরিবহণ মন্ত্ৰী প্রণজিৎ সিংহরায় একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, নতুন কমিশনারেট অব ট্রান্সপোর্ট অফিস চালু হবার ফলে এখন সাধারণ জনগণ পরিবহণ দপ্তরের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সহজে পাবেন। আগে পরিবহণ দপ্তরে কোন ডাইরেক্টরেট অব ট্রান্সপোর্ট বা কমিশনারেট অব ট্রান্সপোর্ট অফিস ছিল না। সচিবালয় থেকে পরিবহণ দপ্তরের কাজকর্ম পরিচালনা করা হতো। ফিতা কেটে ও ফলক উন্মোচন করে এই দুটি কার্যালয়ের উদ্বোধন করে পরিবহণ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় বলেন, এই দুটি কার্যালয় এখানে চালু হবার ফলে পরিবহণ মালিক, যান চালক, মোটর শ্রমিক ও সাধারণ নাগরিক উপকৃত হবেন। আগে তাদের অনেক অসুবিধা ভোগ করতে হতো। পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, আগে রাজ্যে আসাম-আগরতলা একটি মাত্র জাতীয় সড়ক ছিল। এখন রাজ্যে ৬টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। আরো ৭টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন দিয়েছে। এখন রাজ্যে ১৬টি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে ১১টি ট্রেন বহির্রাজ্যের সাথে চলাচল করে। এছাড়া আগরতলা থেকে মুম্বাই, আগরতলা থেকে কাশ্মীর এবং আগরতলা থেকে পুরী পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রেল এর সিঙ্গেল লেনকে ডাবল লেন করার জন্য ভারত সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। ইতিমধ্যে ভারত সরকার এর সার্ভের কাজ সম্পন্ন করেছে। আগরতলা- আখাউড়া রেল সংযোগ প্রকল্পটির কাজ চলছে। বর্তমানে এই প্রকল্পটির ভারতীয় অংশের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগরতলা-চিটাগাঙ-আগরতলা বিমান পরিষেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগরতলা থেকে দুবাই রুটে বিমান পরিষেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরিবহণ দপ্তরের রাজস্বের পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি টাকা। এক বছর পর তা বেড়ে হয় ৮৪ কোটি টাকা। এখন রাজস্বের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০০ কোটির উপর।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার পরিবহণ দপ্তরের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। রাজ্য সরকারের সকল দপ্তর স্বচ্ছতা বজায় রেখে জনকল্যাণে কাজ করছে। স্বাগত ভাষণে পরিবহণ দপ্তরের সচিব উত্তম কুমার চাকমা বলেন, চলন্ত গাড়ি ট্র্যাকিং করার জন্য গতকাল পরিবহণ দপ্তর ও ডিমটেস এর মধ্যে ভ্যাহিক্যাল লোকেশান ট্র্যাকিং সিস্টেম বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা সড়ক পরিবহণ নিগমের ভাইস চেয়ারম্যান সমর রায় ছাড়াও বহু মোটর শ্রমিক, গাড়ি চালক ও গাড়ির মালিকগণ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন কুজন কালচারাল একাডেমীর শিল্পীগণ। এই নতুন কমিশনারেট এর ট্রান্সপোর্ট কমিশনার নিযুক্ত হয়েছেন সুব্রত চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ত্রিপুরা সড়ক পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান অভিজিৎ দেব। সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ট্রান্সপোর্ট কমিশনার সুব্রত চৌধুরী। অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী পরিবহণ দপ্তরের সাড়ে চার বছরের সাফল্যের একটি পুস্তিকার আবরণ উন্মোচন করেন।