Hare to Whatsapp
জনজাতিদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে রাজ্য সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ডিসেম্বর ২৩, : রাজ্যের সব অংশের মানুষের উন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করছে। সবকা সাথ সবকা বিকাশ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে রাজ্যে বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ এগিয়ে চলেছে। ২২ ডিসেম্বর সাব্রুম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে জনজাতি ছাত্রীদের জন্য ১০০ শয্যাবিশিষ্ট বালিকা আবাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন এই বিদ্যালয়ে বীনাপানি স্বসহায়ক দলের কেন্টিনেরও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনজাতিদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বর্তমান রাজ্য সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা যাতে জনজাতিদের ঘরে ঘরে গিয়ে পৌঁছায় তার জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরায় জাতি-জনজাতি উভয় অংশের মেলবন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করার উপর গুরুত্বারোপ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিক নির্দেশনায় বর্তমান রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে দেশের মধ্যে সামনের সারির একটি রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার জন্য কাজ করে চলেছে। এতে সব অংশের মানুষের সহযোগিতা কামনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে ত্রিপুরার পারফরমেন্স দেশের মধ্যে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। এরাজ্যের ছেলেমেয়েরা যাতে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে সেজন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারি চাকুরিতে তাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত করা হয়েছে। মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে তাদের নিয়ে গড়া স্বসহায়ক দলের সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার প্রতি ঘরে সুশাসন কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধা মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছে। শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য ১২৫টি বিদ্যালয়কে বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয় প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। তিনি বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধূলা, গানবাজনা, যোগ ব্যায়াম ইত্যাদির মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিভাবে আরও বিকশিত করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের মধুর সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
সাব্রুমের ধম্মদীপা ইন্টারন্যাশনাল বুদ্ধিষ্ট ইউনিভার্সিটির ডিউলিয়ান একাডেমিক ব্লক ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী এই বিদ্যালয়টি নালন্দা ও তক্ষশিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য বজায় রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই বিদ্যালয়টি ত্রিপুরা তথা ভারতের গৌরব বিশ্বের দরবারে তুলে ধরবে। বৌদ্ধিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। মুখ্যমন্ত্রী আজ সারুম মহকুমা হাসপাতালে গীতা স্বসহায়ক দলের কেন্টিন ও হাসপাতালের স্যাটেলাইট ওপিওয়েভ সাবস্টিটিউশান সেন্টারের উদ্বোধন করেন।
সাব্রুম মহকুমা হাসপাতালে এদিন মুখ্যমন্ত্রী ৩ জন বিদ্যাঙ্গজনের মধ্যে হুইল চেয়ার বিতরণ করেন। এরপর মুখ্যমন্ত্রী সাব্রুম নগরপঞ্চায়েতের ৯নং ওয়ার্ডের কাঠালফাড়ি এসবি স্কুলের নতুন অতিরিক্ত ৪টি ক্লাস রুমের উদ্বোধন করেন। তাছাড়ও মুখ্যমন্ত্রী সাব্রুমের পুরাতন নগরপঞ্চায়েতের অফিস, ত্রিপুরা আরবান লাইভলিহুড মিশনের প্রকল্পটি পরিদর্শন করেন। সেখানে জ্যোতি মহিলা এএলএফ কোপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড'র পেভার ব্লক ইউনিটের কর্মীদের সাথে মিলিত হন এবং তাদের কাজকর্ম ও বিভিন্ন সমস্যাদি সম্পর্কে অবহিত হন।
আজ সাব্রুম সফরকালে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন বিধায়ক শংকর রায়, বিধায়ক ডা. অতুল দেববর্মা, দক্ষিণ ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি কাকলি দাস দত্ত, সাব্রুম নগরপঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন রমা পোদ্দার দে, দক্ষিণ জেলার জেলাশাসক সাজু বাহিদ এ এবং বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ।