Hare to Whatsapp
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে গ্রেফতার, তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া হচ্ছে দ্রুত। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি চাই সামাজিক বিশ্বাসঃ মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, ডিসেম্বর ২২, : রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পর মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলায় দ্রুত আসামি গ্রেফতার হচ্ছে। শুধু তাই নয়, তদন্ত এবং মামলার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে দ্রুত। বাড়ছে কনভিকশন রেট। নারী সশক্তিকরণের মধ্য দিয়ে সামাজিক বিশ্বাস তৈরীর মাধ্যমে নারী নির্যাতন মুক্ত রাজ্য তৈরি করার আহ্বান রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। ত্রিপুরা শিশু কল্যাণ পরিষদ আয়োজিত অঙ্কন প্রতিযোগিতায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।
এদিন রাজধানীর সুকান্ত একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পর, মহিলাদের সুরক্ষা এবং স্বয়ম্ভরতার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ হচ্ছে। দীর্ঘকাল যাবৎ এ রাজ্য উল্টো দিশায় চলছিল। তাকে সঠিক পথে আনতে যাবতীয় কাজ করে চলেছে সরকার।
এর মধ্যে অন্যতম হলো এই সময়ের মধ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধীক মামলায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু তাই নয় ধর্মনগরে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় ১১ মাসের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সাজা ঘোষণা হয়ে গেছে। এছাড়া মহিলাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে নির্যাতিতাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি কনভিকশন রেট ২৯ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৯ শতাংশ।
তিনি বলেন, পুলিশ আগেও এ ধরনের কাজ করতে পারত। কিন্তু আগে এটা হয়নি। তার কারণ, বিভিন্ন ধরনের হস্তক্ষেপ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি মহিলাদের উপর অত্যাচার একেবারেই বন্ধ করার জন্য বদ্ধপরিকর। এই লক্ষ্যে সামাজিক সম্পর্ক মজবুত করার ওপর জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন সমাজে বিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে সবকা সাথ সবকা বিশ্বাস, এই মন্ত্রকে সামাজিক স্তরে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন আগে সামাজিক জীবনে ব্যাপকভাবে রাজনীতি ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। যা এ ধরনের অপরাধের জন্ম দিয়েছে। রাজনীতি নিয়ে জীবন নির্ধারণ হয় না, নীতি তৈরি হয়। বর্তমান সমাজের সেই পরিবর্তনের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হওয়ার পেছনে অন্যতম দায়ী হল অবৈধ ড্রাগস কারবার। নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথম দিন থেকে এই অবৈধ কারবারের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে কাজ করে চলেছে। মাত্র ২/৩ দিনে কনস্টেবল থেকে উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিক পর্যন্ত ১৭৫ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সরকার কিছুতেই এই অপরাধের প্রবৃত্তিকে বরদাস্ত করবে না।
তিনি বলেন, ভারত মাতৃতান্ত্রিক দেশ। দেশের সরকার সেই বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে চলেছে। ২০১৪ সালে শ্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, নারী সশক্তিকরণের উপর জোর দেয়া হয়েছে। এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নারীদেরকে আর্থিকভাবে সচ্ছল করে তোলার মধ্য দিয়ে, সেই পথে পা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন - প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, উজ্জ্বলা যোজনা, সৌভাগ্য যোজনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সুবিধাভোগী হিসেবে নারীদের অগ্রাধিকার দেবার ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া রয়েছে বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও ইত্যাদি কর্মসূচি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন আগে যেখানে ৭০% ব্যাংক একাউন্ট হত পুরুষের নামে, বর্তমানে জনধন যোজনায় দেশের বেশিরভাগ মহিলাদের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসছে। রাজ্যও সেই দিশাতেই চলছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ কমানোর ক্ষেত্রে সামাজিক সমন্বয়ের একটি ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। যা তৈরি করা হবে, এই লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।