Hare to Whatsapp
রাজ্যের সমস্ত অংশের জনগণের কল্যাণে সরকার বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ডিসেম্বর ৭, : রাজ্যের সমস্ত অংশের জনগণের কল্যাণে সরকার বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। সরকার স্বচ্ছতার সাথে অন্তিম ব্যক্তির কাছে সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবার সুযোগ পৌঁছে দিচ্ছে। ৬ ডিসেম্বর ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের ছনতৈল উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযানে সুশাসন মেলার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাজ্যে সামাজিক ভাতাপ্রাপ্তদের ভাতা ৭০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০০ টাকা করা হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একমাত্র উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাই রাজ্যের সার্বিক বিকাশের পথকে ত্বরান্বিত করবে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের উদ্যোগের ফলে এনএফ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আগরতলা রেল স্টেশনকে উন্নতমানের করে গড়ে তুলছে। রাজ্য থেকে এখন ১২টি দূরপাল্লার ট্রেন চলছে। রাজ্যে ৬টি জাতীয় সড়কের কাজ চলছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যে আরও ৭টি জাতীয় সড়কের জন্য ১০,২২২ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভর করে তুলতে সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। এই লক্ষ্যে ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশনের মাধ্যমে রাজ্যে স্বসহায়ক দলের সাথে মহিলাদের যুক্ত করা হচ্ছে। রাজ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি সহ সর্বক্ষেত্রেই অগ্রগতি হয়েছে।
সুশাসন মেলায় মুখ্যমন্ত্রী সুবিধাভোগীদের হাতে ব্যাঙ্ক ঋণের চেক, ই-শ্ৰম কার্ড, আয়ুষ্মান কার্ড, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মঞ্জুরিপত্র, দিব্যাঙ্গজনদের মধ্যে চলন সামগ্রী, কৃষি সহায়ক যন্ত্র প্রভৃতি তুলে দেন। সুশাসন মেলায় ১ কোটি টাকারও বেশি সহায়তা প্রদান করা
হয়েছে। সুশাসন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চন্ডিপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান লাকি পাল দাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার। উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায়, ঊনকোটি জিলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি শ্যামল দাস, জেলা পুলিশ সুপার কান্তা জাঙ্গির প্রমুখ। ধন্যবাদ জানান ঊনকোটি জিলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস। সুশাসন মেলায় বিভিন্ন দপ্তরের ১৯টি প্রদর্শনী স্টল খোলা হয়৷
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আজ সকালে কৈলাসহরে পৌঁছেই প্রথমে মনুভ্যালি ভৈরবথলি কমিউনিটি হলের উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত সরকারের আমলে কোনও উন্নয়ন হয়নি চন্ডিপুরে। আগামীদিনে চন্ডিপুরের চেহারা পাল্টে যাবে। এখানে মুখ্যমন্ত্রী কয়েকজন সুবিধাভোগীর সাথেও মতবিনিময় করেন। মনুভ্যালিতে এই কমিউনিটি হল নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৬ লক্ষ ২৭ হাজার ৬৯৮ টাকা।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন ঊনকোটি জেলা সফরে এসে শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতে কৃষক জ্ঞানার্জন কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী কৃষক জ্ঞানার্জন কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন। ভারত সরকারের কৃষি বিকাশ যোজনায় এই কৃষক জ্ঞানার্জন কেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪৪ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী কৈলাসহরের চিরাকুটিতে শ্রীল ভুবনেশ্বর সাধুঠাকুর সাংস্কৃতিক বিকাশ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। এই কেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৮৩ লক্ষ ৯৮ হাজার ৫১৮ টাকা।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা এরপর কৈলাসহরের আইটিআই প্রাঙ্গণে সংকল্প প্রকল্পে ঊনকোটি জেলাভিত্তিক স্কিল, লোন ও জব মেলার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধকের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষকে আত্মনির্ভর করাই এই মেলার উদ্দেশ্য। এটি ভারত সরকারের উদ্যোগ। আত্মনির্ভর হতে হলে প্রশিক্ষণেরও প্রয়োজন রয়েছে। প্রশিক্ষিত ব্যক্তির কাজের মানও উন্নত হয়। তিনি বলেন, সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। আজ প্রতিটি অনুষ্ঠানেই মহিলাদের উপস্থিতি তার প্রমাণ দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণ যাতে সমস্যার কথা সরকারকে জানাতে পারে তারজন্য ‘আমার সরকার' নামে একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী একজন সুবিধাভোগীর হাতে চাকরির অফার তুলে দিয়ে বিভিন্ন সহায়তা প্রদানের সূচনা করেন।
ঊনকোটি জেলাভিত্তিক স্কিল, লোন ও জব মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তপশিলি জাতি কল্যাণমন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস, বিধায়ক সুধাংশু দাস, বিধায়ক মবস্বর আলি, ঊনকোটি জিলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি শ্যামল দাস, কৈলাসহর পুরপরিষদের চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায়, টিআইডিসির চেয়ারম্যান টিংকু রায়, জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার, জেলা পুলিশ সুপার কান্তা জাঙ্গির প্রমুখ। মেলায় বিভিন্ন দপ্তরের ৪০টি স্টল খোলা হয়েছে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্কিল ডেভেলপমেন্টের অধিকর্তা সঞ্জয় চক্রবর্তী।