Hare to Whatsapp
রাজ্যে কৃষির বিকাশে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি কৃষকদের বিজ্ঞানসম্মত চাষাবাদে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ডিসেম্বর ২, : দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নির্ভর করে কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের সার্বিক বিকাশের উপর। আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। তাই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কৃষির বিকাশ ও কৃষকের কল্যাণে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। ১ ডিসেম্বর খোয়াই জেলার চেবরিতে কৃষক জ্ঞানার্জন কেন্দ্রের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে কৃষির বিকাশে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি কৃষকদের বিজ্ঞানসম্মত চাষাবাদে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে। এই লক্ষ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন ব্লক ও কৃষি মহকুমাগুলিতে কৃষক জ্ঞানার্জন কেন্দ্র চালু করা হচ্ছে। এই সমস্ত কেন্দ্রগুলি থেকে কৃষকরা আধুনিক চাষাবাদের বিষয়ে যেমন পরামর্শ পাবেন তেমনি বিজ্ঞানসম্মত চাষাবাদে নিজেদেরকে দক্ষ করে তুলতে সক্ষম হবেন। চেবরিতে কৃষক জ্ঞানার্জন কেন্দ্র চালু হওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকগণ উপকৃত হবেন। উল্লেখ্য, এই কৃষক জ্ঞানার্জন কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৫৮ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকের কল্যাণ ও কৃষির বিকাশে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে। এ সমস্ত প্রকল্পের সুযোগ রাজ্যের সমস্ত কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা ও পিএম কিষাণ প্রকল্পের আর্থিক সহায়তা সরাসরি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হচ্ছে। ন্যূনতম সহায়কমূল্যে ধান ক্রয় রাজ্যের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের জন্য চাই শান্তি ও শৃঙ্খলা। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে শান্তি ও শৃঙ্খলা অটুট রাখতে হবে। রাজ্যের শান্তি, শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মানুষকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার স্বচ্ছতা বজায় রেখে উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণে অগ্রাধিকার দিয়েছে। স্বচ্ছতা বজায় রেখে কর্মসূচি রূপায়ণে সরকার আমার সরকার ওয়েব পোর্টাল চালু করেছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের ৭টি জাতীয় সড়কের অনুমোদন দিয়েছে। এজন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ১০ হাজার ২২২ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। কৃষক জ্ঞানার্জন কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে দেশের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
রাজ্য সরকারও এই লক্ষ্যে কাজ করছে। রাজ্যে কৃষকদের গড় আয় ৬ হাজার ৫৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১১ হাজার ৯৬ টাকা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যে কৃষির উন্নয়নে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৬২ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে রাজ্যের কৃষকদের কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খোয়াই জিলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি হরিশংকর পাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস। উপস্থিত ছিলেন খোয়াই জিলা পরিষদের সভাধিপতি জয়দেব দেববর্মা, বিধানসভার সরকারি মুখ্যসচেতক বিধায়ক কল্যাণী রায়, খোয়াই জেলার জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা, সমাজসেবী জীবন দেবনাথ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অতিথিগণ প্রায়োরিটি গ্রুপের ৫ জন সুবিধাভোগীর হাতে রেশন কার্ড, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনায় ৫ জন সুবিধাভোগীকে গ্যাস সংযোগ তুলে দেন। তাছাড়াও কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর থেকে রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় ৮৫ হাজার টাকা ভর্তুকিতে ২ জন কৃষককে পাওয়ারটিলার দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও কৃষকদের মধ্যে ৩টি পেডি উইডার, ২টি পাম্পসেট ও হর্টি কিট বিতরণ করা হয়।