Hare to Whatsapp
মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলাই রাজ্য সরকারের অন্যতম লক্ষ্য : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ১৯, : মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলাই রাজ্য সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে নারী ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন। বর্তমান রাজ্য সরকার এই লক্ষ্যে কাজ করছে। ১৮ নভেম্বর হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে ১৭তম আঞ্চলিক সরস মেলার উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার মহিলা স্বশক্তিকরণে গুরুত্ব দিয়েছে। ভারতের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ গ্রামাঞ্চলে বসবাস করে। গ্রামাঞ্চলের মহিলারা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হলে দেশ ও রাজ্যের অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত হবে। বর্তমান রাজ্য সরকার গ্রামাঞ্চলের মহিলাদের উন্নয়নে আন্তরিক প্রয়াস নিয়েছে। যা আগে লক্ষ্য করা যেতোনা। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের স্বসহায়ক দলের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজ্যে স্বসহায়ক দলগুলিতে মহিলা সদস্য সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৮২ জন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মহিলা সদস্যদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার হয়েছে। ২০১৭-১৮ পর্যন্ত রাজ্যে স্বসহায়ক দলের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ১৫৩টি। বর্তমান সরকার আসার পর বেড়ে হয়েছে ৩৮ হাজার ৬৫৭টি। ২০১৭-১৮ তে স্বসহায়ক দলের রিভলভিং ফান্ড দেওয়া হয়েছিল ৩২ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। বর্তমান সরকার আসার পর রিভলভিং ফান্ডে ৩৪৭ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার কাজে বিশ্বাসী। কাজের মাধ্যমেই সরকারের উন্নয়নের ছবি প্রমাণিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এখন সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা সরাসরি সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌছানো হচ্ছে। সরকারের উপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস বাড়ছে। এইসব কিছুই সম্ভবপর হচ্ছে বর্তমান সরকারের স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গির জন্য। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কৃষকের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। কৃষকের আয় ৬ হাজার থেকে বেড়ে ১১ হাজার টাকা হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রতিও মানুষের বিশ্বাস বাড়ছে। আগের থেকে বাইরে চিকিৎসা করতে যাওয়ার প্রবণতা কমেছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিকে ওয়েলনেস সেন্টারে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সারা রাজ্যে ৭টি জাতীয় সড়কের কাজ চলছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতেও এই সরকার খুবই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করে চলেছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরাকে ১০ হাজার ২২২ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছে। মাদক বিরোধী অভিযানে সফলতাও অর্জন করেছে। দেশের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে নিচের দিক থেকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ত্রিপুরা ৫ম স্থানে রয়েছে। এই সরকার গঠনমূলক চিন্তায় বিশ্বাসী। এই প্রসঙ্গে তিনি ‘আমার সরকার’ ওয়েব পোর্টালের কথা তুলে ধরেন। যার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ তার সমস্যা সরকারের কাছে সরাসরি জানাতে সক্ষম হবেন। তিনি আশা ব্যক্ত করেন এতে মানুষের সাথে সরকারের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী স্বসহায়ক দলের মহিলাদের সাফল্যের কাহিনী নিয়ে ‘লাখপতি দিদি’ শীর্ষক বইয়ের আবরণ উন্মোচন করেন। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী ১৭তম আঞ্চলিক সরস মেলার থিম প্যাভিলিয়নের সূচনা করেন। আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এই মেলা চলবে। এ বছর মেলায় ৩৪২টি স্টল রয়েছে। এরমধ্যে স্বসহায়ক দলের স্টল সংখ্যা ৩২১টি। বহির্রাজ্যের স্বসহায়ক দলের স্টল রয়েছে ৬টি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশনের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক স্মিতা মল। তাছাড়াও বক্তব্য রাখেন গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের বিশেষ সচিব ড. সন্দীপ আর রাঠোর। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তা দেবপ্রিয় বর্ধন। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাএর সভাধিপতি অন্তরা সরকার দেব, বিধায়ক মিমি মজুমদার, পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার প্রমুখ।