Hare to Whatsapp
সরকারের মূল অভিমুখ হচ্ছে জনমুখী প্রকল্পগুলির সুফল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ১৮, : রাজ্য সরকার ‘আমার সরকার'। এই অনুভূতি যেন সমস্ত মানুষের মধ্যে তৈরি হয়। এই অনুভূতি তৈরি করার জন্য সরকার সাধারণ মানুষের চাহিদা এবং বিভিন্ন সমস্যাদি দ্রুত নিরসনে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। আজ আগরতলার মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে গ্রামোন্নয়ন (পঞ্চায়েত) দপ্তরের উদ্যোগে ‘আমার সরকার' ওয়েব পোর্টালের আনুষ্ঠানিক সূচনা করে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা।
উল্লেখ্য, https://amarsarkar.tripura.gov.in/ এই ইউআরএল-এর মধ্যে গ্রাম ও ভিলেজ কমিটিস্তরের কর্মচারিদের মাধ্যমে মানুষের বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগ নথিবদ্ধ করা হবে। গ্রামোন্নয়ন (পঞ্চয়েত) দপ্তর সহ মোট ৭৮টি দপ্তরকে এই পোর্টালের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকারের মূল অভিমুখই হচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের জনমুখী প্রকল্পগুলির সুফল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সেটা সম্ভব প্রযুক্তির মাধ্যমে। প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেক সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব। সরকার চাইছে কোন জায়গায় যেন খামতি না থাকে, তারজন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ‘আমার সরকার' ওয়েব পোর্টালটি চালু করা হয়েছে। জনগণের সঙ্গে সরকারের সেতু হিসেবে কাজ করবে এই পোর্টালটি। মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি গ্রাম ও ভিলেজ কমিটির স্তরে সঠিক বাস্তবায়নের পাশাপাশি জনগণের বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগগুলি গ্রাম ও ভিলেজস্তর থেকে ব্লক, জেলা হয়ে রাজ্যস্তরে এই পোর্টালের মাধ্যমে উঠে আসলে সময় এবং অর্থ যেমন লাঘব হবে তেমনি সমস্যাগুলির দ্রুত নিরসনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার গতিমুখী, উন্নয়নমুখী ও জনমুখী একটি সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সবকা সাথ সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াস এই সরকারের মূলমন্ত্র। তিনি বলেন, রাজ্যে বাস্তবায়িত প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযান কর্মসূচিতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির সুবিধা ১০০ শতাংশ যোগ্য সুবিধাভোগীরা যাতে পেতে পারেন তার জন্য প্রশাসন কাজ করছে। বিভিন্ন মেলা ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি আয়োজনের মাধ্যমে প্রতি ঘরে সুশাসন কর্মসূচি সবার সম্মিলিত প্রয়াসে বর্তমানে সফল হয়েছে বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। মুখ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে জনগণের মৌলিক সমস্যা নিরসনে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার শান্তি, শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিরন্তর প্রয়াস জারি রেখেছে। জাতি, জনজাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার লক্ষ্যে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ার ক্ষেত্রেও নানাবিধ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন, রাজ্য সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছানো। গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে সচিবালয়ের যোগসূত্র সাধিত হবে ‘আমার সরকার’ পোর্টালটির মাধ্যমে। তাই এই পোর্টাল ব্যবহারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের উপর তিনি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার পরিকল্পনা বিকেন্দ্রীকরণে বিশ্বাসী। তাই পরিকল্পনা তৃণমূলস্তর থেকে উঠে আসুক সেটাই সরকারের মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতকে মানুষের কণ্ঠস্বর বানানোর ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান (জিপিডিপি) মানোন্নয়ন অত্যন্ত জরুরী। গ্রাম পঞ্চায়েত ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানের পাশাপাশি সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস অর্থাৎ স্থিতিশীল উন্নয়নে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটি এলাকার মানুষের সমস্যার দ্রুত সমাধানে ‘আমার সরকার’ ওয়েব পোর্টালটি বড় ভূমিকা নেবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের অতিরিক্ত অধিকর্তা প্রসূন দে ‘আমার সরকার' ওয়েব পোর্টাল সম্পর্কিত একটি রূপরেখা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের বিশেষ সচিব ড. সন্দীপ আর রাঠোর। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের উপঅধিকর্তা জয়দীপ চক্রবর্তী।