Hare to Whatsapp
দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ১৭, : সংবাদমাধ্যম হচ্ছে সমাজের দর্পণ। সমাজে সংবাদমাধ্যমের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে জাতীয় প্রেস দিবস- ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, সমাজ গঠনে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। যেসমস্ত সাংবাদিক এখন আমাদের মধ্যে নেই তাদের আজ স্মরণ করার দিন। তাদের ভাল দিকগুলি আমাদের গ্রহণ করতে হবে। তবেই সমাজ এবং দেশ উপকৃত হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার সংবাদ বান্ধব। সংবাদমাধ্যমের নানাবিধ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যেই নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই সরকার স্বচ্ছতার নীতি নিয়ে চলছে। শান্তি সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রেখে সবাইকে নিয়ে বর্তমান সরকার চলতে চায়। সেদিকে লক্ষ্য রেখে সরকারের পক্ষ থেকে একের পর এক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সমাজে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এরকম সংবাদ বেশী করে পরিবেশন করার উপর গুরুত্ব আরোপ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকেই সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে নিজেদের মতামতকে বেশী করে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এধরণের প্রবণতা অব্যাহত থাকলে এবং প্রকৃত সংবাদ উঠে না এলে আমার ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা বানানোর লক্ষ্যে পৌঁছানো কষ্টকর হয়ে পড়বে।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের কিভাবে আরও ভাল রাখা যায়, তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বুনিয়াদকে শক্তিশালী করা যায় সেই লক্ষ্যে রাজ্যের বর্তমান সরকার কাজ করে চলেছে। সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বেশীসংখ্যক সাংবাদিক যাতে এই বীমার আওতায় আসতে পারেন সেজন্য অ্যাক্রিডিটেশান প্রাপ্ত সাংবাদিকের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সংবাদ বান্ধব পরিবেশ বজায় রাখার জন্য রাজ্য সরকার সব সময় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সংবাদমাধ্যম এবং এর সঙ্গে যুক্তরা যাতে উপকৃত হন সেই জন্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনের যে হার তা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অত্যন্ত ইতিবাচক পরিবেশের মধ্যে আমরা কাজ করতে চাই। রাজ্যবাসীর উন্নয়নের লক্ষ্যে নানাবিধ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আগামী কিছু দিনের মধ্যেই ত্রিপুরার প্রথম ফিল্ম ইনস্টিটিউট চালু হতে চলেছে। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নিজের মতামতকে বেশী গুরুত্ব না দিতে তিনি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আগরতলা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক প্রণব সরকার বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে রাজ্যের বর্তমান সরকার নানাবিধ উদ্যোগ নিয়েছে। সাংবাদিকদের পেনশন বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। তাদের জন্য ফেমিলি পেনশন চালু করা হয়েছে। আগরতলা প্রেস ক্লাবের আধুনিকিকরণ করা হচ্ছে। তাদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালু করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাখেন আগরতলা প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি অরুণ নাথ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে সংবাদ জগতে বিশেষ অবদানের জন্য প্রবীণ সাংবাদিক শেখর দত্ত এবং স্বপন কুমার ভট্ট াচার্যকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা হিসেবে তাঁদের হাতে স্মারক, চাদর ও পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সংবাদ জগতে ২৫ বছর বা তার বেশী সময় ধরে কাজ করেছেন এবং যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশী তাদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে যারা এই কার্ড গ্রহণ করেছেন তারা হলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক অরুণ নাথ, স্রোতরঞ্জন খিসা, সঞ্জীব দেব, শেখর দত্ত, প্রদীপ দত্ত ভৌমিক, জয়ন্ত ভট্টাচার্য, পরিতোষ বিশ্বাস। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ২০ বছর বা তার বেশী সময় ধরে যুক্ত এবং যাদের বয়স ৫০ এর বেশী তাদের মধ্য থেকে প্রণব সরকার, মানস পালের হাতেও অ্যাক্রিডিটেশান কার্ড তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ তাদের হাতে এই কার্ডগুলি তুলে দেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে রাজধানী এবং বিভিন্ন মহকুমায় কর্মরত কয়েকজন সংবাদিকের হাতে প্রেস জ্যাকেট তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন।