Hare to Whatsapp
খেলাধুলা যুব সমাজকে নেশার আসক্তি থেকে দূরে রেখে সুস্থ সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ৫, : আগরতলা শহরের ক্রীড়া পরিকাঠামােয় ৪ নভেম্বর থেকে এক নতুন পালক যুক্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহার হাত ধরে আজ বিকেলে উমাকান্ত মিনি স্টেডিয়ামে সর্বঋতুতে খেলার উপযােগী সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠের উদ্বোধন হয়। প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠ নির্মাণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আজ এই মাঠে দিবারাত্রি খেলার সুবিধার্থে ফ্লাড লাইট স্থাপনের জন্যও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এজন্য ব্যয় হবে ৩ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা। আগামী ২ মাসের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা বলেন, রাজ্যে ক্রীড়া প্রতিভার কোনও অভাব নেই। বিশ্বের দরবারে নিজেদের প্রমাণিত করার জন্য প্রয়ােজন উন্নত ক্রীড়া পরিকাঠামাের। তাই বর্তমান রাজ্য সরকার প্রথম থেকেই শিক্ষার পাশাপাশি ক্রীড়া ক্ষেত্রেরও সার্বিক বিকাশে সমান গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করে আসছে। মুখ্যমন্ত্রী শ্রীসাহা আরও বলেন, যে কোনও ধরনের খেলাধুলা মস্তিষ্কের বিকাশ ও যুব সমাজকে নেশার আসক্তি থেকে দূরে রেখে সুস্থ ও সুষ্ঠু সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা ফিফার নিয়ম অনুযায়ী এই সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠ নির্মাণ করা হয়েছে। আগামীদিনে এই মাঠ সংরক্ষণে ত্রিপুরা ফুটবল অ্যাসােসিয়েশন ও ক্রীড়া দপ্তর যৌথভাবে কাজ করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন, রাজ্যের ক্রীড়া জগতে আজ এক ঐতিহাসিক দিন। বর্তমান সরকারের নানাবিধ আর্থিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও রাজ্যের ক্রীড়া পরিকাঠামাে উন্নয়নে এই সরকার কখনােই কার্পণ্য করেনি। তিনি বলেন, মানব চরিত্র গঠন, যুব সমাজের মধ্যে প্রতিযােগিতা ও সহযােগিতার মানসিকতা তৈরিতে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই সরকার রাজ্যের ক্রীড়ার পরিকাঠামাের বিকাশে খেলাে ত্রিপুরা সুস্থ ত্রিপুরা নামে নতুন পরিকল্পনা রূপায়ণ শুরু করেছে। আজকাল প্রায় প্রতিটি খেলাতেই অর্থ, যশ, প্রতিপত্তি, মানসম্মান থাকায় যে কোনও ধরনের খেলাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করার সুযােগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আলােচনা করতে গিয়ে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের স্পেশাল অ্যাসিস্টেন্স স্কিমে আগরতলা সহ জিরানীয়া, মােহনপুর ও বিলােনীয়ায় এই ধরনের সিন্থেটিক টার্ফ ফুটবল মাঠ নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নানাবিধ কারণে এই স্কিম থেকে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাজ্য বাজেট থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই মাঠগুলি নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে আজ উমাকান্ত মিনি স্টেডিয়ামে সিন্থেটিক টার্ক ফুটবল মাঠের উদ্বোধন হলাে। এই মাঠগুলি নির্মাণে আর্থিক বন্দোবস্ত করে দেওয়ায় তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। রাজ্যের সর্বত্র ক্রীড়া পরিকাঠামাের উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলােচনা করতে গিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন ক্রীড়া পরিকাঠামাের উন্নয়নে রাজ্যে গত ১ বছরে প্রায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দপ্তরের অধিকর্তা সুবিকাশ দেববর্মা, পদ্মশ্রী দীপা কর্মকার, ত্রিপুরা স্পাের্টস কাউন্সিলের সচিব অমিত রক্ষিত এবং ত্রিপুরা ফুটবল অ্যাসােসিয়েশনের সভাপতি প্রণব সরকার। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী এবং উপমুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন ক্রীড়ামন্ত্রী। পরে অতিথিগণ ফুটবল মাঠটি ঘুরে দেখেন এবং আজ থেকে শুরু হওয়া বি ডিভিশন ক্লাব লিগ ফুটবলের উদ্বোধনী খেলা উপভােগ করেন।