Hare to Whatsapp
সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি যাতে অক্ষুন্ন থাকে সেই লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ৩, : রাজ্যের বর্তমান সরকার সব সময় মানুষের পাশে রয়েছে। তাদের কল্যাণে কাজ করছে। এই সরকার আমার সরকার এই অনুভূতি যাতে প্রত্যেকের মধ্যে কাজ করে সেজন্য যা যা করা দরকার তাই বর্তমান সরকার করে চলেছে। ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ প্রাঙ্গণে শারদ সম্মান-২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন। শারদ সম্মান-২০২২ ও মায়ের গমনে অংশগ্রহণকারী বিজয়ী ক্লাবদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণে দেশের মধ্যে ভালাে অবস্থানে রয়েছে। এখনও যে সমস্ত বিষয়ে খামতি রয়েছে সেগুলি পূরণ করার লক্ষ্যে প্রতি ঘরে সুশাসন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। মানুষকে যাতে দপ্তরগুলিতে যেতে না হয় সেজন্য বিভিন্ন পরিষেবা মানুষের খুব কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারকে হেয় করতে এবং মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু মানুষ এই সরকারের পাশে রয়েছে। এই সরকারের বিরুদ্ধে কোনও ষড়যন্ত্র মানুষ মেনে নেবেন না।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির দিক নির্দেশনায় রাজ্যের বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সব সময়ই মানুষের মৌলিক সমস্যাগুলি সমাধানের উপর গুরুত্ব আরােপ করে থাকেন। রাজ্য সরকারও সেই নিরিখেই কাজ করছে। তিনি বলেন, সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি যাতে অক্ষুন্ন থাকে সেই লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
শান্তি, সম্প্রীতির পরিবেশ অক্ষুন্ন থাকাতেই এবারের শারদোৎসব কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে। জনজাতি এলাকাগুলিতে পর্যন্ত মহাসমারােহে উৎসবের দিনগুলি অতিবাহিত হয়েছে। সব অংশের মানুষের সক্রিয় সহযােগিতাতেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার নেশার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করেছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এনইসি বৈঠক এবং হরিয়ানার চিন্তন শিবিরেও নেশার বিরুদ্ধে জিরাে টলারেন্স নীতি নেওয়ার কথা ঘােষণা করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরকে ঢেলে সাজানাে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নেশার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে ক্লাবগুলির একটা বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তারা সর্বতােভাবে সহায়তা করলে নেশামুক্ত অভিযানে ব্যাপক সাফল্য আসবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, সবার সক্রিয় সহযােগিতায় সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে এবারের উৎসবের দিনগুলি অতিবাহিত হয়েছে। দুর্গাপুজো মূলত বাঙালিদের প্রধান উৎসব হলেও জনজাতি অংশের মানুষও এই উৎসবে নিজেদের দারুণভাবে সামিল করেছেন।
৭ অক্টোবর মায়ের গমন অনুষ্ঠানে আগরতলা শহরে যে জনঢল নেমেছিল তা দুর্গাপুজোর আগের সমস্ত ইতিহাসকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। মানুষ ভালাে আছেন বলেই বিষয়টা সম্ভব। হয়েছে। মানুষের মধ্যে আনন্দ থাকলেই এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরার স্লোগান স্বার্থক হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিও এই পরিবেশকে বজায় রাখতে চাইছেন। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী বলেন, সরকার পাশে থেকে সবাইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন। রাজ্যে নেশার বিরুদ্ধে জিরাে টলারেন্স নীতি নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে অনেক সাফল্যও এসেছে। তবে এতে ক্ষান্ত থাকলে চলবে না। এই বিষয়ে ক্লাবগুলিকে এবং সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের একটা বড় ভূমিকা নিতে হবে। তিনি বলেন, যে কোনও মূল্যে নেশার ছােবল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নেশা আগামী প্রজন্মকে ধংস করে দিচ্ছে। যারা নেশার কড়াল গ্রাসে আসক্ত তাদের | চিহ্নিত করে তাদের এই অবস্থা থেকে বের করে আনতে হবে।
আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করে প্রচুর মানুষ এবার পুজোর মন্ডপগুলিতে ভিড় জমিয়েছিলেন। রাজ্য, পুলিশ প্রশাসন। সর্বোপরি সবার সক্রিয় সহযােগিতায় যেভাবে নির্বিঘ্নে এবারের পুজোর দিনগুলি অতিবাহিত হয়েছে তা অতীতের সমস্ত রেকর্ডকে ম্লান করে দিয়েছে। আজকের শারদ সম্মান অনুষ্ঠান এবং মায়ের গমন অনুষ্ঠান ঘিরে শহর এবং শহরতলির ক্লাবগুলির মধ্যে একটা সুস্থ।
প্রতিযােগিতা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন দুর্গাপুজো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। স্বাগত বক্তব্যে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী বলেন, বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য আমাদের সংস্কৃতির মূল লক্ষ্য। এই ভাবধারা বজায় রেখে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর নানা কর্মসূচি পালন করে চলেছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মিমি মজুমদার, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস প্রমুখ।