Hare to Whatsapp
অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করতে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে : উপমুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, অক্টোম্বর ২৭, : অর্থনৈতিক বিকাশকে তুরান্বিত করতে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকার চায় প্রতি ঘরে সুশাসন। রাজ্যের প্রান্তিক জনপদের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবার সুযােগ পৌছে দিতে রাজ্যের সর্বত্র বিকাশ মেলা এবং সুশাসন শিবির অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২৬ অক্টোবর খােয়াই জেলার ধলাবিল গ্রাম পঞ্চায়েতে জেলা পঞ্চায়েত রিসাের্স সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষু দেববর্মা একথা বলেন। উল্লেখ্য, এই জেলা পঞ্চায়েত রিসাের্স সেন্টারটি নির্মাণে ব্যয় হবে ২ কোটি টাকা। এদিন ধলাবিল গ্রাম পঞ্চায়েতে সুশাসন শিবিরও অনুষ্ঠিত হয়। সুশাসন শিবিরে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ২৪টি প্রদর্শনী স্টল খােলা হয়েছিল। উপমুখ্যমন্ত্রী সুশাসন শিবিরে প্রদর্শনী স্টলগুলি পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে গ্রামীণ এলাকা উন্নত হলেই শহর উন্নত হবে। তাই গ্রামীণ এলাকার মানুষের জীবন জীবিকার মান উন্নয়নে সরকার বহুমুখী কর্মসূচি নিয়েছে। এ সমস্ত উন্নয়ন কর্মসূচিতে মা-বােনদের যুক্ত করা হচ্ছে। উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহিলারা স্বনির্ভর হলেই একটি রাজ্যের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। তাই মহিলা স্বশক্তিকরণ সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। অনুষ্ঠানে উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ১২টি পিছিয়ে পড়া ব্লকের উন্নয়নে সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের সখি পাড়ায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ছিলনা। বর্তমান সরকার সৌরশক্তির সাহায্যে এই গ্রামকে আলােকিত করেছে। অনুষ্ঠানে খােয়াই জিলা পরিষদের সভাধিপতি জয়দেব দেববর্মা বলেন, প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযানে নাগরিকদের কাছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং পরিষেবার সুযােগ পৌছে। দেওয়া হচ্ছে। এই লক্ষ্যেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিকাশ মেলা ও সুশাসন শিবির। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের বিশেষ সচিব ড. সন্দীপ আর রাঠোর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন খােয়াই জেলার জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী, বিধায়ক কল্যাণী রায়, বিধায়ক প্রশান্ত দেববর্মা, বিধায়ক নির্মল বিশ্বাস, রাজ্য ক্রীড়া পর্ষদের সচিব অমিত রক্ষিত, খােয়াই পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন দেবাশিস নাথ শর্মা, গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার স্বপন কুমার দাস, পঞ্চায়েত দপ্তরের অধিকর্তা দেবেন্দ্র রিয়াং, জেলা পুলিশ সুপার রতিরঞ্জন দেবনাথ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যােজনায় ১ জন সুবিধাভােগীকে মাছ পরিবহণের ভ্যান, ২ জন অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিককে ই-শ্রম কার্ড, ২ জন কৃষককে সয়েল হেলথ কার্ড ও খােয়াই ব্লকের ৮টি স্বসহায়ক দলকে ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা সুবিধাভােগীদের হাতে চেক, মাছ পরিবহণের ভ্যান ও অন্যান্য সুবিধাগুলি তুলে দেন।
ধলাবিল গ্রাম পঞ্চায়েতে অনুষ্ঠিত সুশাসন শিবিরে ৪০টি পরিবারকে মােরগ পালনে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সুবিধাভােগী পরিবারগুলিকে ১০টি করে মােরগ ও মােরগ পালনে সহায়ক সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। স্বাবলম্বন প্রকল্পে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক থেকে ২ জন সুবিধাভােগীকে অটোরিক্সা ও ১ জন উদ্যোগীকে ধূপকাঠির শলা তৈরি প্রকল্পে ২২ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। বন দপ্তর থেকে জেএফএমসি’র অধীনে ১৩টি স্বসহায়ক দলকে ১২ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৪০ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া বায়ােফ্রক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষের জন্য ১ জন সুবিধাভােগীকে ১০ লক্ষ টাকা ও ১টি স্বসহায়ক দলকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর থেকে ২০জন কৃষককে পাওয়ারটিলার ও ৯৬ জন কৃষককে কিষান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ১, ১৮৫ জন কৃষকের মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সয়েল হেলথ কার্ডের জন্য। সয়েল হেলথ কার্ড দেওয়া হয়েছে ১১ জন কৃষককে। মৎস্য দপ্তর থেকে ৮ জন মৎস্য চাষীকে প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যােজনায় মাছের পােনা ও ঔষধ দেওয়া হয়। শিবিরে প্রধানমন্ত্রী অনুসূচিত জাতি অভ্যুদয় যােজনায় ১২ জন সুবিধাভােগীকে মৎস্যচাষের জলাশয় সংস্কারের জন্য ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সুশাসন শিবিরে মহকুমা প্রশাসন থেকে এসসি, এসটি, পিআরটিসি, ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে।