Hare to Whatsapp
ওষুধের দোকানেও গলাকাটা অবস্থা, ইনসুলিন চাইলে পাওয়া যায় না
By Our Correspondent
আগরতলা, মার্চ ২৪, : যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে আজ ভোরেই দাবী করা হয়েছে একমাত্র ভারতই পারে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সফলও কার্যকরী ব্যবস্হা নিতে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে রাজ্যের প্রধান বানিজ্য কেন্দ্র মহারাজগন্জ বাজারে এক ঘন্টায় যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তাতে স্পষ্টতই বলা যেতে পারে রাজ্যে সংক্রমণ রোধ খুব কঠিন ব্যাপার। কেননা সোসাল ডিসটেন্ট মেইনটেইন করা দূরহ।একে অপরের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে, দিব্যি বাজার করছে।কারো কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।বললে কথার বানে জর্জরিত হতে হয়।
সকালে বাজারে পরে কেনাকাটার ধুম।কার আগে কে কেনাকাটা করতে পারে।এক কেজির জায়গায় দশ কেজি আলু কিনে নিচ্ছে।যে কিনছে তার সাকুল্যে দশদিনে দুকেজি প্রয়োজন। পেঁয়াজ ও নিচ্ছে দশ কেজি।অথচ বিক্রেতা বলছে এত তো আপনার দরকার নেই,তবু কেন নিচ্ছেন? চরম বাক বিতণ্ডা। লোকজন জমে যাচ্ছে।কার কথা কে শোনে?অথচ প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মুখ্যমন্তী এ ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।শাক সবজির বাজারে ও একই অবস্থা।
কিন্তু উদ্বেগের বিষয় একে অপরের গা ঘেঁষে বাজার করছেন,গা ঠেলে চলে যাচ্ছেন মাছ বাজারের এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্ত।যতই বলা হয় দূরত্ব বজায় রাখতে ততই অগ্নিশর্মা।না আছে পুলিশ,না নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তারা।এ এক অদ্ভুত ব্যাপার।অথচ দূরত্ব বজায় রাখাই সংক্রমণ রোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী।
গোটা পৃথিবী তখন গভীর অনিশ্চয়তায়, মৃত্যু মিছিল,কারো কোনো নিশ্চয়তা নেই,নেই জীবনের গ্যারান্টি তখন এই রাজ্যের চিত্র কিন্তু ভয়ন্কর।এরা নিজেরাই মরবে তবে সেইসাথে অন্যদের সংক্রমিত করবে।এই আশন্কাই প্রবল হয়ে উঠছে।ব্যবসায়ীরা তো সুযোগ খুজবেই।আপনি/আমি সুযোগ দিলে তারা তো বেজায় খুশি।
সোমবার বিকেলে তো মহারাজগন্জ বাজারে আলু , পেঁয়াজ কিলোপ্রতি বিকিয়েছে পন্চাশ টাকা কিলো দূরে।কারো কোন সম্বিত নেই, শুধু কেনার প্রতিযোগীতা। একেকজন বাড়ীর জন্য তিন থেকে চার বস্তা করে চাল কিনছেন,দিব্যি স্কুটিতে করে বাড়ী নিয়ে যাচ্ছে।সব ক্ষেত্রেই এক অবস্থা। ওষুধের দোকান তো গলাকাটা অবস্থা। ইনসুলিন চাইলে পাওয়া যায় না। ইতস্তত করে কর্মচারী। ইনসুলিন ষ্ট্রীপের ক্ষেত্রে ও একই চিত্র।বলে দেয়া হচ্ছে অল্প নিয়ে যান।তবে আগামীতে পাওয়া যাবেনা।একজন দোকানীর কি ভাবে বলে দিচ্ছে বা হুঁশিয়ারি দিচ্ছে আগামী দিনের?
সরকারের সদিচ্ছা আছে ঠিকই কিন্তু রুপায়নকারীদে রং সদিচ্ছা তো দূরের কথা বরং তাদের গয়ংগচ্ছ মনোভাব।
বলা হচ্ছে সংক্রমণ রোধে যদি নিরুপিত দূরত্ব বজায় না হয় তাহলে তো পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠার আশন্কা প্রবল। আমাদের রাজ্যের ভৌগলিক অবস্থান তেমন সুবিধাজনক অবস্থায় নয়।তদোপরি তিন দিকেই বাংলাদেশ। ওখানে ও করোনা থাবা বসিয়েছে। রাজ্যের স্বাস্হ্য পরিকাঠামো ও তেমন নয়।এত লোকবল ও নেই।সুয়াব পরীক্ষার ল্যাবরেটরী আছে কিনা তাও জানা নেই। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র সচেতনতা মূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা ভয়ন্কর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে পারি।যে রাজ্যে প্রশাসন এখনো বাজারে মাক্স,সেনিটাইজার প্রাপ্তি সহজলভ্য করতে পারেনি সেখানে সাধারণ মানুষ কি ভাবে সংক্রমণ রোধ করবে,এটাই লাখো টাকার প্রশ্ন।
বলাই বাহুল্য উওর পূর্ব ভারতে কিন্তু করোনা জাল বিস্তার শুরু করেছে।আজ সকালেই খবর এসেছে মনিপুর থেকে। সেখানে সনাক্ত হয়েছে করোনা পজিটিভ। মনিপুর প্রতিবেশী রাজ্য ই নয়, রাজ্যের একটা বড় অংশের লোকজনের মনিপুরে যাতায়াত রয়েছে তেমনি মনিপুরের লোকজনের রাজ্যে আসা যাওয়া করছে। এখানকার বহু ছাত্র ছাত্রী মনিপুরে মেডিক্যাল পড়ছে তেমনি মনিপুরের বহু ছাত্র-ছাত্রী রাজ্যে পড়াশুনা করছে আবার চাকরীও করছে। একজন সংক্রমনের আশন্কা প্রবল থেকে প্রবলতর হয়ে উঠতে শুরু করেছে।