Hare to Whatsapp
চিকিৎসকদের চিকিৎসা পরিষেবায় মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুলাই ২১, : চিকিৎসকদের চিকিৎসা পরিষেবায় মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। তা না হলে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে পরিকাঠামােগত উন্নয়নের কোন সুফল পাওয়া যাবেনা। চিকিৎসকদের মহান পেশার মাধ্যমেই মানুষের বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব। ২০ জুলাই ইন্দিরা গান্ধী মেমােরিয়াল হাসপাতালে ১০৫০ এল পি এস ক্ষমতাবিশিষ্ট পিএসইউ অক্সিজেন প্ল্যান্ট ও হাসপাতাল কমপ্লেক্সের জলাশয়টির সৌন্দর্যায়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা তার ভাষণে বলেন, আইজিএম হাসপাতালটি রাজ্যের একটি ঐতিহ্যবাহী হাসপাতাল। কিন্তু বিগত দিনে আইজিএম হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানে পরিকাঠামােগত বিভিন্ন সমস্যা দেখা যেত। আইজিএম হাসপাতালের বিল্ডিং তৈরীর সময়ও সঠিক পরিকল্পনার অভাব ছিল। হাসপাতালে কোন র্যাম্পও ছিল না। ফলে অর্থোপেডিক্সের রােগীদের নানা সমস্যায় পড়তে হত। বর্তমানে আইজিএম এ যে নতুন বিল্ডিংটি তৈরী করা হয়েছে তার সদব্যবহারের উপর স্বাস্থ্য দপ্তরকে গুরুত্ব দিতে হবে। স্বাস্থ্য পরিষেবার বিভিন্ন বিভাগকে শীঘ্রই এই নতুন বিল্ডিং-এ স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের সদর্থক প্রয়াসের ফলে রাজ্যে এখন উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। রাজ্যে বর্তমানে ২২টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র সহ বিভিন্ন হাসপাতালগুলােতে গুণগতমানসম্পন্ন স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে রাজ্য সরকার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকদেরও নিজেদেরকে সময়ের গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ রেখে পরিষেবা প্রদানে আরও আন্তরিক হতে হবে। রােগী-চিকিৎসকের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। নার্সিং-এ পাঠরত ছাত্রছাত্রীদেরকেও এই বিষয়ে শুরু থেকে সঠিক প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পাশাপাশি হাসপাতালগুলিতে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন বিষয়ের উপর সচেতনতামূলক কর্মসূচি সংগঠিত করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের চিকিৎসক সহ চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর জনগণের বিশ্বাস রাখা প্রয়ােজন। বর্তমানে রাজ্যের চিকিৎসকদের দ্বারাই হাসপাতালে জটিল রােগের চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিধায়ক ডা. দিলীপ দাস বলেন, রাজ্য সরকার আই জি এম হাসপাতালকে একটি মডেল হাসপাতালে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমান রাজ্য সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আইজিএম হাসপাতালের সার্জিক্যাল বিভাগে ২৪ ঘন্টার পরিষেবা প্রদান শুরু করা হয়। আই জি এম হাসপাতালের নবনির্মিত ভবনটির শীঘ্রই উদ্বোধন করার প্রচেষ্টা চলছে।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, বিগত ৪ বছরে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নত হওয়ার ফলে বহিরাজ্যে রেফারের সংখ্যা উল্লেখযােগ্যভাবে কমেছে। রাজ্যেই এখন বিভিন্ন জটিল রােগের চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে।
জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন ডিরেক্টর শুভাশিষ দাস বলেন, আইজিএম- এ ১০৫০ এল পি এল ক্ষমতাবিশিষ্ট যে পিএসইউ অক্সিজেন প্ল্যান্টটি স্থাপন করা হয়েছে সেটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সর্ববৃহৎ অক্সিজেন প্ল্যান্ট। এর জন্য ইউনাইটেড ন্যাশন ডেভেলপমেন্ট প্রােগ্রামের মাধ্যমে ২ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়াও বিল্ডিং, পাইপলাইন ও সিভিল ওয়ার্কের জন্য জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনে প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারতে নিযুক্ত জাপানী রাষ্ট্রদূত আকাইশি ইতােশিও এবং ইউনাইটেড ন্যাশন ডেভেলপমেন্ট প্রােগ্রামের প্রতিনিধি শুকো নােডা বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, স্বাস্থ্য সচিব ড. দেবাশিষ বসু, ত্রিপুরা হেলথ সার্ভিসের ডিরেক্টর ডা. শুভাশিষ দেববর্মা, আইজিএম হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট ডা. শর্মিলা সরকার।