Hare to Whatsapp
দেশের প্রতি শ্রদ্ধা জাগ্রত করার লক্ষ্যেই এই কর্মসুচি : কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশভক্তির ভাবনা জাগ্রত করতেই হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসুচি : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুলাই ১৮, : আজাদি কা অমৃত মহােৎসব উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সরকার দেশব্যাপী ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এই অভিযানকে সর্বাত্মকভাবে সফল করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ১৭ জুলাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। রাজ্যের সচিবালয়ের ভিডিও কনফারেন্স হলে আয়ােজিত ভিডিও কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব অভিষেক চন্দ্র এবং স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যগুলির উদ্দেশ্যে বলেন, আজাদি কা অমৃত মহােৎসব পালন দেশের নাগরিকদের জন্য এক গৌরবময় বিষয়। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদিজী আজাদি কা অমৃত মহােৎসব পালনের নতুন নতুন বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছেন। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে শহীদদের বীরগাঁথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে দেশ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদেশনীতি, যােগাযােগ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কি অবস্থানে রয়েছে তা তুলে ধরার সংকল্প নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিকদের মধ্যে দেশভক্তি ও দেশের প্রতি শ্রদ্ধা আরও বেশি করে জাগ্রত করার লক্ষ্যেই ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে আগামী ১৩-১৫ আগস্ট, ২০২২ দেশের ২০ কোটি পরিবারে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচি সফল করা এককভাবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। দেশের প্রতিটি নাগরিককে একসাথে মিলে কাজ করতে হবে। এই কর্মসূচিকে সফল করার লক্ষ্যে রাজ্যগুলিকে প্রচার, উৎপাদন এবং প্রতিটি বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন-এই তিনটি বিষয়ের উপর প্রাধান্য দিতে হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ২২ জুলাই, ২০২২ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানের প্রচারাভিযান শুরু করা হবে। এই অভিযানের ব্যাপক প্রচারের লক্ষ্যে রাজ্যগুলিকে সংবাদ মাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম, টিভি চ্যানেল, সরকারি সমস্ত বিজ্ঞাপন, শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত হাের্ডিং, পােস্টারের ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
ভিডিও কনফারেন্সে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিরঙ্গা তৈরির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকেও রাজ্যগুলিকে সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়াও তিরঙ্গা তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে স্ব-সহায়ক দল, সমবায় সমিতি, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ইত্যাদিকে কাজে লাগানাের জন্য রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীগণ এই অভিযানের প্রস্তুতি বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানের প্রস্তুতি তুলে ধরে বলেন, রাজ্যের জনগণের মধ্যে দেশভক্তির ভাবনা আরও বেশি করে জাগ্রত করার লক্ষ্যে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানের মাধ্যমে রাজ্যের ৪ লক্ষ বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এই ৪ লক্ষ জাতীয় পতাকা স্ব-সহায়ক দল, হস্ততাত ও কারুশিল্প দপ্তর, তপশিলী জাতি কল্যাণ দপ্তর, পঞ্চায়েত এবং বিভিন্ন বেসরকারি উৎপাদকের মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ৪ লক্ষ জাতীয় পতাকা রেশনসপ, পােস্ট অফিস, পঞ্চায়েত অফিস ইত্যাদির মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। এক্ষেত্রে জন সচেতনতার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার গ্রাম সভার আয়ােজন করবে। এছাড়াও এই অভিযানকে সর্বাত্মক সফল করার লক্ষ্যে প্রচার অভিযানের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। রাজব্যাপী এই অভিযানের প্রচারের লক্ষ্যে বাংলা ও ককবরক ভাষায় বিভিন্ন প্রেরণামূলক ভিডিও তৈরি করা হবে, রাস্তার পাশে পােস্টার এবং স্ট্যান্ডিজ লাগানাে হবে, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সচেতনতামূলক বক্তব্য তুলে ধরা হবে এবং স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলিতে প্রচার অভিযান করা হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানে, সরকার অধিগৃহীত সংস্থায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে একটি বিস্তৃত নির্দেশাবলীও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।
ভিডিও কনফারেন্সে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব গােবিন্দ মােহন ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানের বিষয়ে বিস্তৃতভাবে তুলে ধরেন এবং এই অভিযানকে সফল করে তুলতে রাজ্যগুলির প্রতি আহ্বান জানান।