Hare to Whatsapp
রাজ্যে একটি চা নিলাম কেন্দ্র গড়ে তােলার পরিকল্পনা রয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুলাই ১১, : রাজ্যের চা বাগানগুলিতে কর্মরত শ্রমিকদের আর্থ সামাজিক অবস্থার মানােন্নয়নে রাজ্য সরকার আন্তরিক ও দায়বদ্ধ। চা শ্রমিকদের কল্যাণে সরকার মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পের সুবিধা যাতে চা বাগানে কর্মরত সমস্ত শ্রমিকগণ পেতে পারেন সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখতে হবে। ১০ জুলাই বিকালে দুর্গাবাড়ি চা বাগানে টিটিডিসি পরিচালিত গ্যাসভিত্তিক চা প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, চা শ্রমিকদের সর্বাঙ্গিন উন্নতির জন্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যে সমস্ত প্রকল্প রয়েছে সেগুলি যাতে যথাযথভাবে রূপায়িত হতে পারে সে ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট রয়েছে। ২০১৮ সালের পর থেকে রাজ্যে রুগ্ন চা বাগানগুলি ক্রমশঃ পুনরুজ্জীবিত হতে শুরু করেছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার আপনাদের পাশে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আজ গ্যাসভিত্তিক চা প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্প চালুর ফলে চা শিল্পের আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ অগ্রসর হয়েছে। তিনি বলেন, চা প্রক্রিয়াকরণে কয়লার ব্যবহারে যে সব সমস্যা হত গ্যাসভিত্তিক এই ব্যবস্থা চালুর ফলে তার অনেকটাই লাঘব হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে ইতিমধ্যে রেগা প্রকল্পে অনেকগুলি ক্ষুদ্র চা বাগিচা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১,২০০ একর জমিতে রেগার মাধ্যমে চা বাগিচা গড়ে উঠেছে। রাজ্যের চা শিল্পের প্রসার এবং প্রচারে আরও ব্যাপকভাবে এগিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের মধ্যে চা উৎপাদনে ত্রিপুরা বর্তমানে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে চা রপ্তানি করার পাশাপাশি চা শিল্পে যাতে আরও বেশি করে কর্মসংস্থানের সুযােগ সৃষ্টি করা যায় সে বিষয়ে সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চায়ের গুণগত মান বৃদ্ধি করার সঙ্গে সঙ্গে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির ফলে চায়ের উৎপাদন এবং বাজার প্রসারিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে রাজ্যে একটি চা নিলাম কেন্দ্র গড়ে তােলার পরিকল্পনা রয়েছে।
সম্মানিত অতিথির ভাষণে বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার সব অংশের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার চা শ্রমিকদের বাসস্থানের জন্য জায়গা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা ঐতিহাসিক। স্বাগত ভাষণে অনুষ্ঠানের সভাপতি ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহা বলেন, ২০১৭-১৮ সালে রাজ্যে চায়ের উৎপাদন ছিল ১ লক্ষ ৪৭ হাজার কেজি। ২০২২-২৩ সালে এই পরিমাণ বেড়ে গিয়ে দাড়িয়েছে ৪ লক্ষ ৪৫ হাজার কেজিতে। ২০১৭-১৮ সালে নিলাম বাজারে রাজ্যে উৎপাদিত চায়ের দাম ছিল ১৪৭ টাকা প্রতি কেজি। ২০২১-২২ সালে কোলকাতা নিলাম সেন্টারে এই চা বিক্রি হয়েছে ২৭৪ টাকা কেজি দরে। এই সময়ে চা শ্রমিকদের মজুরিও ১০৫ টাকা থেকে বেড়ে ১৭৬ টাকা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মানিক লাল দাস।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বামুটিয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান শীলা দাস, দুর্গাবাড়ি চা শ্রমিক সমবায় সমিতির অ্যাডভাইজার গােপাল চক্রবর্তী এবং সভাপতি গৌতম কান্দু প্রমুখ। মুখ্যমন্ত্রী আজ বিকেলে দুর্গাবাড়ি চা বাগানে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম লিমিটেড পরিচালিত গ্যাস ভিত্তিক চা প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি দুর্গাবাড়ি চা শ্রমিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের আরেকটি গ্যাসভিত্তিক চা প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানের শেষে মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাবাড়ি চা শ্রমিক সমবায় সমিতি পরিচালিত গ্যাসভিত্তিক চা প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পটি ঘুরে দেখেন এবং সমিতির কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন।