Hare to Whatsapp
সরকারের উন্নয়ন কর্মসুচির অভিমুখ হল প্রান্তিক এলাকার জনগণের সার্বিক বিকাশ : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, মে ১১, : রাজ্যেকে একটি স্বনির্ভর রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে। সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির অভিমুখ হল প্রান্তিক এলাকার জনগণের সার্বিক বিকাশ। ১০ মে জিরানীয়া অগ্নিবীনা হলে বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের সুবিধাভােগীদের সাথে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে গত চার বছরে ত্রিপুরাতে দুই লক্ষ আটাশ হাজার ঘরের অনুমােদন দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫২ শতাংশ বাড়িতে পানীয় সংযােগ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক বাড়িতে জলের সংযােগ দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী প্রকল্প যেমন পিএম কিষাণ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যােজনা- গ্রামীণ প্রকল্পে সুবিধাভােগীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় আজ বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আগে কেমন ছিলাম, এখন কেমন আছি তা তুলনা করে দেখতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মােদীজীর দুরদর্শী প্রশাসনের ফলেই আমরা দ্বিতীয় জীবন পেয়েছি। করােনা অতিমারীর সময় আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল প্রাণ বাঁচার। সেটা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রাণ থাকলে তাে বাকী সব কিছু চাওয়া পাওয়া। প্রধানমন্ত্রী আবাস যােজনা, কৃষক সম্মান নিধি, জলজীবন মিশন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যােজনা নিয়ে তিনি বলেন, এগুলি কেন্দ্রীয় প্রকল্প। কিন্তু আমরা এই ছােট্ট রাজ্যেও কিছু প্রকল্প তৈরী করেছি। মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যােজনা, মুখ্যমন্ত্রী আদর্শ গ্রাম যােজনা, মুখ্যমন্ত্রী ফসল বীমা যােজনা, উন্নত গােধন প্রকল্প, মুখ্যমন্ত্রী মাতৃ পুষ্টি উপহার, মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক প্রকল্প। এগুলি চালু করা হয়েছে রাজ্যের মানুষের কল্যাণের জন্য।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জীবনে সব সময় কি পেয়েছি তার হিসাব রাখা উচিত। কি পাইনি তার হিসেব করলে অসন্তষ্টিতে ভুগতে হবে। অনেকে জীবনে অল্পেতে হতাশ হয়ে যান। কি করা উচিত তার প্রয়াস নেন না। এ প্রসঙ্গে এক বৃদ্ধার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ৮০ বৎসরের বৃদ্ধা জীবনবালা চক্রবর্তী যার ৪৫ বৎসরের একমাত্র ছেলে স্ট্রোকে মারা যান। তিনি এখন বৃদ্ধ ভাতা পান। এই ভাতা দিয়ে দুই নাতিকে নিয়ে থাকেন। তাছাড়া সংসারের জন্য এই বৃদ্ধ বয়সেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাপড় বিক্রি করেন। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা একটি ছােট রাজ্য। যদি ত্রিপুরাকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদীজীর সাথ অবশ্যই লাগবে। সকল প্রকল্পই মােদীজী দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানের প্রথম ভাগে তিনি কিছু সুবিধাভােগীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। তাদের পরিবারের খোঁজ খবর নেন এবং কি কি সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে তা জেনে নেন। আজ জিরানীয়া মহকুমার বিভিন্ন জায়গা থেকে সরকারি প্রকল্পের প্রাপ্ত সুবিধাভােগীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। মুখ্যমন্ত্রী মতবিনিময় সভায় নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন এবং সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের যে সুবিধা নিচ্ছেন তা মুখ্যমন্ত্রীর সামনে জানান দেন।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, জনসাধারণের সাথে উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মতবিনিময় এক অভিনব উদ্যোগ। এর আগে কোন দিন এরকম কর্মসূচি রাজ্যে হয়নি। একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুবিধাভােগীদের সাথে সরাসরি গিয়ে কথা বলছেন এটা ভাবাই যায় না। সেজন্য তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। অনুষ্ঠান শুরুর আগে মখ্যমন্ত্রী এবং তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী জিরানীয়া ব্লকের জয়নগর গ্রামপঞ্চায়েতে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। একজন সন্তান সম্ভাবনা মা কে সাধ ভক্ষণ করান। মুখ্যমন্ত্রী এদিন একটি শিশুর অন্নপ্রাশনেও অংশ গ্রহণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী অন্ত্যোদয় শ্রদ্ধাঞ্জলি যােজনায় একজনকে ২০০০ হাজার টাকা প্রদান করেন। একজন গর্ভবতী মহিলাকে মুখ্যমন্ত্রী মাতৃ পুষ্ঠি উপহারের সামগ্রীও তুলে দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যােজনায় ঘর প্রাপ্তদের ঘর পরিদর্শন করেন। অগ্নিবীনা হলে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন। ধন্যবাদসূচক বক্তৃতা রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস। তাছাড়া উপস্থিত ছিলেন জিরানীয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান মঞ্জু দাস, ভাইস চেয়ারম্যান প্রীতম দেবনাথ, জিরানীয়া নগরপঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন রতন কুমার দাস, সমাজসেবী গৌরাঙ্গ ভৌমিক প্রমুখ।