Hare to Whatsapp
মহিলাদের স্বশক্তিকরণে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার প্রথম থেকেই গুরুত্ব দিয়েছে : উপমুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, মে ২, : মহিলাদের স্বশক্তিকরণে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার প্রথম থেকেই গুরুত্ব দিয়েছে। ১ মে সরকারি অতিথিশালার কনফারেন্স হলে উত্তর-পূর্ব উৎসব উপলক্ষে আয়ােজিত সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা। উল্লেখ্য, রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে ডােনার, এনইসি, টিআরএলএম, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আজাদি কা অমৃত মহােৎসবের অঙ্গ হিসাবে উত্তর-পূর্ব উৎসব আয়ােজিত হয়। কর্মসূচির থিম হল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে মহিলাদের ভূমিকা।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপমুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই কর্মসূচি গত ২৮ এপ্রিল, ২০২২ থেকে শুরু হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে এই উপলক্ষে বিভিন্ন থিমকে ভিত্তি করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়ােজিত হচ্ছে। ৪ মে গুয়াহাটিতে সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার মহিলাদের স্বশক্তিকরণে নীতিগতভাবে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যের যেকোন ধরণের চাকুরির ক্ষেত্রে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ, উচ্চশিক্ষায় মােট সুদের হার থেকে ৩ শতাংশ কম করা, মহিলাদের ব্যবসার জন্য সরকারি মার্কেট স্টল বন্টনের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও ১টি ১০০ শয্যার মা ও শিশুর জন্য সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, ৩টি বৃদ্ধাশ্রম, ৪টি মহিলা হােস্টেল তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও প্রতিটি থানায় হেল্প ডেস্ক খােলা, মহিলাদের সুরক্ষার জন্য নির্ভয়া ফান্ড, মানসিক হাসপাতাল ইত্যাদি চালু করার ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপমুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, বর্তমান সরকারের আমলে স্বসহায়ক দলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩,৯২৬টি। যা পূর্বতন সরকারের আমলে ছিল মাত্র চার হাজার। এছাড়াও ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে এসব স্বসহায়ক দলগুলিকে ৪০৮.০৮ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে ৭ দিনের মধ্যে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেদিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযােগ্য বিষয় মহিলা পরিচালিত স্বসহায়ক দলগুলাের এনপিএ হার মাত্র ১.৮৪ শতাংশ। এরথেকে স্বসহায়ক দলের সদস্যদের কর্তব্যবােধ এবং ব্যবসায়িক সাফল্যকে অনুধাবন করা যায়। ফলে ব্যাঙ্কগুলাে তাদেরকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ উৎসাহিত হচ্ছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপমুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, স্বসহায়ক দলের উৎপাদিত সামগ্রীর রাজ্য ও বহিরাজ্যে বাজারজাতকরণে সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। রাজ্যকে নেশামুক্ত করার সংক্রান্ত সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে উপমুখ্যন্ত্রী বলেন, সমাজ এবং প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। এইক্ষেত্রে মায়েদের ভূমিকা অতন্ত্য গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়াও নেশার কুপ্রভাব সম্পর্কে যুবসমাজকে সচেতন ও শিক্ষিত করার মাধ্যমে এই সামাজিক ব্যাধি থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার আন্তরিকভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে চলছে। সাংবাদিক সম্মেলনে টিআরএলএম-এর মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক ড. বিশাল কুমার বলেন, রিসাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি দেওয়ার লক্ষ্যে জিআই ট্যাগিং করানাের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আগামী জুন মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই সম্পর্কিত প্রয়ােজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়া হবে। তাছাড়াও স্বসহায়ক দলের সামগ্রীগুলির বাজারজাত করার লক্ষ্যে পণ্যের গুণগতমান বৃদ্ধি এবং প্রচারের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামী এক দুই বছরের মধ্যেই এর সুফল লক্ষ্য করা যাবে। সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের উপঅধিকর্তা রূপক ভট্টাচার্য।