Hare to Whatsapp
সাব্রুমে আইসিপি স্থাপনের জন্য ৩৬৫ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীঃ মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, মার্চ ১১, : আগরতলা, ১১ মার্চঃ
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ, সাব্রুমে প্রস্তাবিত সীমান্ত বন্দর নির্মাণের জন্য সিঙ্গেল স্কিমে ৩৬৫ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছেন। গত ২ বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্য পেয়েছে অতিরিক্ত ২৫০০ কোটি টাকা। দ্রুত উন্নয়নশীল শহর ও রাজ্য হিসেবে যথাক্রমে আগরতলা ও ত্রিপুরাকে পুরস্কৃত করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী ডেকে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে।বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বিবেকানন্দ ময়দানে আয়োজিত জনজাতি সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন করে এই গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।
তিনি বলেন বর্তমান সরকার রাজ্যের জনজাতিদের ভাবাবেগকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ করে চলেছে। তাদের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করছে সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে এডিসির নাম পরিবর্তন করে ত্রিপুরা টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল করার জন্য কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। কারণ শুধুমাত্র নির্দিষ্ট একটি জেলা নিয়ে নয়, গোটা ত্রিপুরার ৮ টি জেলার সঙ্গেই যুক্ত রয়েছে এডিসি। তাই এটিকে টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল করার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য রাজ্য, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ৮৬০০ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ চেয়ে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি ৪২ টি দপ্তরও তাদের হাতে দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে এতে।
এই সময়ের মধ্যে আগরতলা বিমানবন্দরের নাম পাল্টে মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের নামে নামাঙ্কিত করা, তাঁর পূর্ণাবয়ব মূর্তি স্থাপন করা, তাঁর জন্মদিনে ছুটি ঘোষণা করা, গড়িয়া পূজার জন্য দুই দিন ছুটি ঘোষণা করা, সরকারি অনুষ্ঠানে রিসার ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে এই জনজাতি সংস্কৃতিকে বৃহত্তর মঞ্চে পৌঁছে দেওয়া, ইত্যাদির কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, এরই অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো চারদিনব্যাপী এই জনজাতি সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে আলাদা আলাদা জনজাতির নিজস্ব কৃষ্টি সংস্কৃতি মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে। যা অন্য কোন জায়গায় দেখা যায় না। রাজ্যের দুইজন জনজাতিকে পর পর দুই বছর পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ত্রিপুরার জনজাতীদের জাতীয় ক্ষেত্রে তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে সম্প্রতি দিল্লি সফর চলাকালীন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে সাব্রুমে সুসংহত সীমান্ত বন্দর তৈরীর বিষয়ে কথা বলেছিলেন। মাত্র তিনদিনের মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, সিঙ্গেল স্কিমে ৩৬৫ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। শ্রী দেব বলেন যে, এখন মাত্র তিন চারদিনে কেন্দ্রীয় অনুমোদন পাওয়া যায়। যারা বলেন যে দিল্লি থেকে মুখ্যমন্ত্রী কি এনেছেন? তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গত দুই বছরে অতিরিক্ত ২৫০০ কোটি টাকা রাজ্যে এসেছে, যা ২৫ বছরেও তারা আনতে পারেনি।
তিনি অভিযোগ করেন যে এতদিন এডিসিকে পিছিয়ে রাখা হয়েছে। এখন এডিসিকেও উন্নয়নের ধারায় নিয়ে যেতে হবে। আগরতলা ও খুমুলুং একই ধারায় উন্নয়নের পথে হাঁটবে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন যে এখন ত্রিপুরা সুশাসনের জন্য পুরস্কার পায়, কৃষি ক্ষেত্রে দ্রুত উন্নয়নের জন্য, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য পুরস্কার পায়। মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেব জানান যে আগামী ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে দিল্লি ডেকে পাঠিয়েছেন। ত্রিপুরা ও আগরতলাকে যথাক্রমে দ্রুত উন্নয়নশীল রাজ্য ও শহর হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
৭২ টি স্টলে জনজাতিদের চিরাচরিত খাদ্য, পোশাক, অলংকার, বই ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পসরা সাজিয়ে চারদিনব্যাপী বিবেকানন্দ ময়দানে এই প্রথম জনজাতি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত এই উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন সরকার আসার পর জনজাতিদের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কাজ করে চলেছে। এই সময়ের মধ্যে মোট ১৯ টি জনজাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও একটি নাম। কুকিদেরও সংযুক্ত করে এখন রাজ্যে ২০ টি রেজিস্টার্ড জনজাতিগোষ্ঠী রয়েছে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
চার দিনব্যাপী আয়োজিত এই সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন করে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব। সঙ্গে ছিলেন রাজস্ব মন্ত্রী শ্রী এনসি দেববর্মা, এবং জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী শ্রী মেবার কুমার জমাতিয়া সহ অন্যান্যরা।