Hare to Whatsapp
মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর, মহারানী কাঞ্চন প্রভাদেবী উন্নত, মডেল রাজ্যের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছিঃ মুখ্যমন্ত্রী।
By Our Correspondent
আগরতলা, ডিসেম্বর ২১, : রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের একেবারে আপন হয়ে যাওয়ার ধারা জাড়ি রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব। গত বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। কথা বলছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তাদের সুখ-দুঃখ সবকিছুরই খোঁজখবর নিচ্ছেন।কিছু সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান করছেন, কিছু ক্ষেত্রে দ্রুত সেই সমস্ত বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন স্থানীয় প্রশাসনকে।
তিনি বলেন যে "রাজধানীতে বসে কেবলমাত্র মিডিয়া ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কথা জানা যায় না। এজন্য তাদের মধ্যেই যেতে হয়। সেজন্যই আমি মানুষের কাছে যাচ্ছি। তাদের কথা শুনছি।" এই ধারা অব্যাহত রেখে শনিবার তিনি গেলেন গোমতী জেলার অমরপুর মহকুমার অম্পিনগর এবং তৈদু এলাকায়। প্রথমেই তিনি যান অম্পিনগরের ফটিকলাল সাহার বাড়িতে। এরপর মনোরঞ্জন রুদ্র পালের বাড়িতে। সেখানে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন মানুষের সঙ্গেও কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী যাওয়ার তাৎক্ষণিক খবরে এলাকায় রীতিমতো ভিড় জমে যায়। তাঁর একেকটি পদচারণা যেন রোড শোতে পরিণত হচ্ছিল।
সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী চলে যান তৈদু এলাকায়। কিছুদিন আগে নাশকতার আগুনে পুড়ে যাওয়া তৈদু বাজার ঘুরে দেখেন তিনি। কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে। তাদের সমস্যার কথা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি। এরপর উত্তর তৈদুতে রবিচন্দ্র কলইর বাড়িতে যান। দুপুরের আহার সম্পন্ন করেন স্থানীয় নীল নন্দ কাইপেং এর বাড়িতে।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর, মহারানী কাঞ্চন প্রভাদেবী উন্নত মডেল রাজ্যের স্বপ্ন দেখেছিলেন। এই উন্নত মডেল রাজ্য গঠনের জন্য তিনি কাজ করছেন। কিন্তু একটা ছোট্ট অংশের মানুষ নিজেদের স্বার্থে উন্নয়নকে বিঘ্নিত করার জন্য শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করে চলেছে। "সেই চেষ্টাকে পরাজিত করা আমার দায়িত্ব। সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমি সেই দায়িত্ব পালন করব এবং উন্নয়নের পথে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাব।"
মুখ্যমন্ত্রী বলেন "আমি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছি, যাতে কেউ কোনো বিভেদ তৈরি করতে না পারে। সেজন্য সবার সঙ্গে কথা বলছি। মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে না। মানুষ উন্নয়ন চায় শান্তি চায়। সবাই নিজেদের মতো করে রাস্তাঘাটের দাবি করছেন, পানীয় জলের দাবি করছেন, আবার কোথাও ভাতা, ঋণ, চাকরির দাবি করছেন। এমনকি স্বাবলম্বীও হয়েছেন অনেকে। সরকার উন্নয়নের প্রতি দায়বদ্ধ। এজন্য মানুষের কাছে এসছি এবং তাদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া নিচ্ছি। তৈরি হয়েছে জনতার সরকার"।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, গণতন্ত্রে অধিকার নিয়ে মানুষ দাবি করতেই পারে। কিন্তু ব্যক্তিস্বার্থে ষড়যন্ত্র করে শান্তি সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টার বিরুদ্ধে সরকার এবং সাধারণ মানুষের যৌথ প্রতিবাদ চলবেই। এদিন তিনি বলেন যে, তাঁর এই আকস্মিক সফর জারি থাকবে আগামী দিনেও। শীঘ্রই তিনি কাঞ্চনপুর যাবেন বলেও জানান।
এদিন তৈদু এলাকায় তাঁর কাছে দাবি জানানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য। তাৎক্ষণিক এ সংক্রান্ত বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয় পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন ছিলেন বিধায়ক বিপ্লব ঘোষ সহ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে এলাকায় মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা যায়।