Hare to Whatsapp
সারা রাজ্যে ২১ মার্চ থেকে সপ্তাহব্যাপী মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব, সুস্থ কৈশাের অভিযান
By Our Correspondent
আগরতলা, মার্চ ২০, : আগামী ২১ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সারা রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব- সুস্থ কৈশাের অভিযান-২.০ র সপ্তাহব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি সংগঠিত করা হবে। কৃমিনাশক কর্মসূচি, ভিটামিন-এ পরিপূরক কর্মসূচি, আয়রণ ফলিক আসিড (আই এফ এ) পরিপূরক কর্মসূচি এবং তীব্রতর ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ পক্ষকাল (আই ডি সি এফ) এবং পােষন অভিযান কর্মসূচিগুলিকে ‘মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশাের অভিযান (এম এস এস এস কে) ২.০ এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। আজ জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের প্রধান কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানান জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা, ডা: সিদ্ধার্থ শিব জয়সবাল। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্টেট ইমিউনাইজেশন অফিসার ডা: মৌসুমী সরকার, স্টেট প্রােগ্রাম অফিসার ডা: সঞ্জয় রুদ্র পাল প্রমুখ।
তিনি জানান, এই কর্মসূচিতে ৪ হাজার ৬৭৮টি সরকারি, বেসরকারি, আধা সরকারি বিদ্যালয়, ৯ হাজার ৯৯১টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং প্রায় ৬০ টি ডিগ্রী, কারিগরি, পলিট্যাকনিক, ভােকেশনাল, আই টি আই ইত্যাদি কলেজে এই কর্মসূচি চলবে। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন চা-বাগান, ইটভাট্টা ইত্যাদি জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশাের অভিযান ২.০ চলবে।
সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচিতে ০-১৯ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে।এই কর্মসূচিতে ৯ লক্ষ ৬০ হাজার ৯৪৩ জনকে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানাে হবে। ভিটামিন-এ পরিপূরক কর্মসূচির আওতায় রাজ্যের ২ লক্ষ ৪০ হাজার ১৯ জন ছেলেমেয়েকে আনা হবে। আয়রণ ফলিক আসিড (আই এফ এ) পরিপূরক কর্মসূচির আওতায় রাজ্যের ১০ লক্ষ ১৫ হাজার ৪৮৮ জন ছেলেমেয়েকে নিয়ে আসা হবে। পােষন অভিযান-এর আওতায় ৩ লক্ষ ৪ হাজার ৫০৩ জন শিশুর ওজন এবং উচ্চতা পরিমাপ করা হবে।
সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচির প্রথম তিন দিন সরকারি, বেসরকারি, আধা সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকশিক্ষিকা, ডিগ্রী, কারিগরি, পলিট্যাকনিক, ভােকেশনাল, আই টি আই ইত্যাদি কলেজে এমপিরএএনএম কর্মী এবং অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন ওষুধ খাওয়াবেন।
শেষের ৪ দিন আশাকর্মীরা তাদের নিজ নিজ এলাকায় সেইসব শিশুদের সনাক্ত করবেন যাদের অ্যালবেন্ডাজল ট্যাবলেট, ভিটামিন এ ক্যাপসুল এবং অন্যান্য পরিপূরক ওষুধ যেমন আই এফ এ সাপ্লিমেন্ট সিরাপ, গােলাপী এবং নীল ট্যাবলেট ইত্যাদি পরিষেবা প্রদান করা যায়নি। যেসমস্ত শিশুরা ডায়েরিয়ার ভুগছে সেসমস্ত শিশুদের জিঙ্ক এবং ও আর এস খাওয়ানাে হবে।
এমপিডর এবং এএনএম কর্মীরা রাজ্যের বিভিন্ন চা বাগান, ইটভাট্টা, বস্তি এলাকা, অনাথআশ্রম, বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্যাম্প সংগঠিত করা হবে। এছাড়া পােষন অভিযান-র অধীন একটি ওজন যন্ত্র, ইনফ্যান্টোমিটার এবং স্টেডিওমিটার দিয়ে ০-৬ বছরের শিশুদের উচ্চতা ও ওজন পরিমাপ করা হবে।
অন্ত্রে কৃমি সংক্রমণ, ভিটামিন-এ-র অভাব, শৈশবে ডায়রিয়া এবং আয়রণ ও ফলিক অ্যাসিডের অভাব ভারতের মতাে দেশে মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য একটি উদ্বেগজনক বিষয়। এইসব ঘাটতি শিশুর পুষ্টি গ্রহণে বাধাসৃষ্টি করে এবং শিশু বা কিশাের-কিশােরীরা অপুষ্টি, রক্তাল্পতায় ভােগে। সেইসঙ্গে তাদের শিক্ষাগত, শারীরিক ও মানসিক বিকাশও ব্যাহত হয়। নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ সেবন, ভিটামিন-এ, ওআরএস ও জিঙ্ক, আইএফএ পরিপূরক গ্রহণ করলে শিশু ও কিশাের কিশােরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। সেইসঙ্গে শিশু ও কিশাের কিশােরীদের পুষ্টি, সামগ্রিক বিকাশ এবং জীবনমান উন্নত হবে।
| এইসব ওষুধ ও ভিটামিন-এ, আইএফএ পরিপূরক, শিশু ও কিশাের কিশােরীদের জন্য নিরাপদ এবং সুরক্ষিত। তবে যদি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় সেইক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব- সুস্থ কৈশাের অভিযানের অন্তর্গত সব ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রতিকূল পরিস্থিতি মােকাবিলা করতে প্রতিটি জেলা ও ব্লক পর্যায়ে প্রতিকূল পরিস্থিতি রােধে ব্যবস্থাপনা রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব- সুস্থ কৈশাের অভিযান-র পক্ষকালব্যাপী বিশেষ কর্মসূচি সংগঠিত করা হয়েছিল। এই কর্মসূচিতে জাতীয় কৃমিনাশক দিবসে ৯৯.৫ % ছেলেমেয়েদের কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানাে হয়েছে।৯০.৩৩ % ১২ মাস বয়স থেকে ৫ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানাে হয়েছে। ইনটেনসিফায়েড ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ পক্ষকাল কর্মসূচির আওতায় ৯৯, ৯০% ০-৫ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের ও আর এস খাওয়ানাে হয়েছে। আয়রণ ফলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্টেশন কর্মসূচির আওতায় ৯৯, ৪৫% ৬ মাস বয়স থেকে ১৯ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের আই এফ এ সিরাপ, গােলাপী এবং নীল ট্যাবলেট খাওয়ানাে হয়।