Hare to Whatsapp
মানুষের কল্যানে কাজ করার জন্যই ক্ষমতাঃ তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ৫, : তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ৩৮ জন লােকশিল্পী ২০০৭ সাল থেকে তাদের প্রাপ্য সম্মান, পদমর্যাদা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ৪ ফেব্রুয়ারি তাদের সেই সম্মান ও পদমর্যাদা ফিরিয়ে দিতে পেরে নিজেকে খুব গর্বিত মনে করছি। আজ তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের বিনােদন সংস্থার উদ্যোগে আয়ােজিত এক অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী একথা বলেন। ৩৮ জন লােকশিল্পীকে চতুর্থ শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদায় উন্নীতকরণের জন্য আজ এই অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। গান্ধীঘাটস্থিত তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়ােজন করা হয়। অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী শ্ৰীচৌধুরী বলেন, সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় বঞ্চিত লােকশিল্পীদের প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী শ্ৰীচৌধুরী বলেন, গত প্রায় পঁচিশ বছরে সরকারি কর্মচারিদের প্রমােশন প্রক্রিয়াকে একটা প্রহসনে পরিণত করা হয়েছিলাে। বর্তমান সরকার কর্মচারিদের এই প্রমােশনের দরজা খুলে দিয়েছে। এছাড়াও কর্মচারিদের বেতনভাতা বৃদ্ধি সহ এবছর ফেস্টিভেল অ্যাডভান্সও বাড়ানাে হয়েছে। এজন্য কর্মচারিদের কোনও আন্দোলন করতে হয়নি। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সব সময় বলেন, আমাদের এই ক্ষমতার চেয়ারটি মানুষকে দমনপীড়নের জন্য নয়। মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্যই ক্ষমতা। তাই আমাদের সকলের দায়িত্ব মানুষের জন্য কিছু করে যাওয়া। নিজেদের দায়িত্বটুকু সঠিকভাবে পালন করা। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের যেমন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক তেমনি আমাদের রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের দুটি শাখা আছে। তথ্য শাখাটি সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির সংবাদ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। আর সংস্কৃতি শাখা রাজ্যের ঐতিহ্যময় মিশ্র সংস্কৃতির ধারাকে তুলে ধরছে।
লুপ্তপ্রায় সংস্কৃতির পুনরুদ্ধারে কাজ করছে। এ সমস্ত কাজ দপ্তরের কর্মীগণ সংঘবদ্ধভাবে করে যাচ্ছেন। বলা যেতে পারে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর সরকারের দর্পণ। তিনি আশা করেন সব সময় তারা এভাবে সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে যাবেন। অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের আরও শ্রীবৃদ্ধিতে তিনি যথাসাধ্য প্রয়াস নেবেন বলে জানান। তিনি সকলকে সরকারের উপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই বিশ্বাস ও আস্থার উপর নির্ভর করেই আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়ে উঠবে। এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার জন্য সরকারের যে সদিচ্ছা সেই স্বপ্নও পূরণ হবে। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় ফিল্ম ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে। সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সহযােগিতায় এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তােলা হবে। এজন্য রাজ্য সরকার ৫ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা অর্থ বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ফিল্ম ইনস্টিটিউট গড়ে উঠলে কর্মসংস্থানের সুযােগও তৈরি হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা খাদি বাের্ডের চেয়ারম্যান রাজীব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, এই দপ্তরের লােকশিল্পীদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান হলাে। তিনি বলেন, সরকার কর্মচারিদের পাশে রয়েছে। কর্মচারিদের মধ্যে কাজ করার মানসিকতাও জাগ্রত হয়েছে। তিনি কর্মচারিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সরকার যেমনভাবে কর্মচারিদের পাশে রয়েছে। তাই কর্মচারিদেরও দায়িত্ব রয়েছে সরকারের পাশে থেকে সমস্ত সরকারি কর্মসুচি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের লােকশিল্পীদের এই দীর্ঘদিনের বঞ্চনার অবসান ঘটানাের জন্য। তিনি মন্ত্রী শ্ৰীচৌধুরীকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ভারতীয় মজদুর সংঘের সভাপতি শংকর দেব।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ৩৮ জন লােকশিল্পীগণের হাতে চতুর্থ শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণীতে উন্নীতকরণের আদেশপত্র তুলে দেন। সংশ্লিষ্ট লােকশিল্পীদের পক্ষ থেকে মন্ত্রী শ্রীচৌধুরীর হাতে মানপত্র তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে দপ্তরের সাংস্কৃতিক সহায়ক পুষ্পল দেবকে জাতীয়স্তরে প্রিন্ট মেকিং ওয়ার্কশপে উল্লেখযােগ্য সাফল্যের জন্য সংবর্ধনা দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, এই ওয়ার্কশপে পুষ্পল দেবের উডকাটের কাজটি ললিতকলা একাডেমির ফেইসবুক পেজে আপলােড করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে দপ্তরের প্রাক্তন যুগ অধিকর্তা বিষ্ণুপদ দাস মন্ত্রী শ্ৰীচৌধুরীর হাতে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের জন্য ১০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের শিল্পীগণ। অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী শ্রীচৌধুরী তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের কর্মীদের সাথে স্বচ্ছ ভারত অভিযানে সাফাই কর্মসূচিতে অংশ নেন।