Hare to Whatsapp
দুই শেষ সুপ্রাচীন মৈত্রীর সম্পর্ক বাণিতিক অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে : মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ৪, : ভারত ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও আত্মিক হৃদ্যতা বাণিজ্যিক প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে আন্তর্জাতিক জলপথ, ট্রেন সহ বিভিন্ন মাধ্যম, বাণিজ্যিক অগ্রগতি ও শিল্প সম্ভাবনার বিকাশে সহায়ক। আজ কমলপুর (ভারত)- কুমারঘাট (বাংলাদেশ) সীমান্ত হাটের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। এলিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী টিপু মুনসি সহ প্রতিনিধিদল। ধলাই জেলার অন্তর্গত কমলপুর মরাছড়ায় ৬৮৫ কানি জমিতে এই সীমান্ত হাটটি নির্মিত হবে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫.৩০ কোটি টাকা। সপ্তাহের প্রত্যেক মঙ্গলবার ভারতীয় সময় অনুসারে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই হটি খােলা থাকবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ভারতের দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় দুই দেশের সুপ্রাচীন মৈত্রীর সম্পর্ক বাণিজ্যিক অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে। বাংলাদেশ হয়ে আন্তর্জাতিক জলপথ, স্পেশাল ইকোনমিক জোন, মৈত্রী সেতু, আখাউড়া হয়ে রেল সংযােগ সহ আগামীদিনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে যােগাযােগ এ বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নয়া দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে যা দুই রাষ্ট্রের মূঙ্গিতেই অগ্রণী ভূমিকা নেবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ৮টি সীমান্ত হটি নির্মাণের জনা প্রস্তাব পাঠানাে হয়েছিলাে। এরমধ্যে ২টি সক্রিয় রয়েছে এবং আরও ২টি সীমান্ত হটি চালুর প্রক্রিয়া চলছে। দুই রাষ্ট্রি একত্রিতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে কম অগ্রসরমান। এরই ফলশ্রুতিতে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সম্প্রতি বিশেষ অগ্রগতি এসেছে। উল্লেখযােগ্যভাবে বেড়েছে বাণিজ্যিক রপ্তানির পরিমাণ।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে যেখানে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হয়ে হলদিয়া বন্দরে পৌঁছাতে প্রায় ১৬০০ কিলােমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়, সেখানে মৈত্রী সেতু উন্মােচিত হলে প্রায় ৬৭ কিলোমিটার হয়ে যাবে সড়ক পথের দৈর্ঘ্য। এ সময় বের পাশাপাশি অনৈতিকভাবেও সাশ্রয় হবে। দুই রাষ্ট্রের সুসম্পর্কে চির ধরানাের বহু অপপ্রয়াস করা হলেও দুই বন্ধু রাষ্ট্রের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিকদের ও সম আধুনিক প্রবাহমানত তী সফল হতে দেয়নি। বর্তমানে আগরতলা থেকে দিল্লি পর্যন্ত সরাসরি চালু হওয়া বিমান সংযােগের ফলে, পর্যটন, চিকিৎসা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ত্রিপুরায় আসা বাংলাদেশের নাগরিকরাও এর সুফল পাবেন। কৈলাসহর বিমানবন্দরটি চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২২-২৩ সালের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত বাজেট আগামীর এক স্বচ্ছ পথ রেখা। ত্রিপুরা সরকারও বর্তমান প্রজনাের সামনে ভবিষ্যত পরিকল্পনার একটি স্বহু ছবি তুলে ধরার লক্ষ্যে ২০৪৭ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন রূপরেখা তৈরি করেছে৷
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পাশাপাশি দুই রাষ্ট্রের সুদীর্ঘ সম্পর্কের বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করে জাতিরজনক বঙ্গবন্দর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী টিপু মুনসি বলেন, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে ভারত যেভাবে পাঁড়িয়েছিলাে তা কখনও ভােলার নয়। মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিলাে ভারত। এর একটি বড় সংখ্যা মিলুরায় আশ্রয় নিয়েছিলাে। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার সম্পর্ককে আরও আত্মিক করে তুলেছে বাংলা ভাষী। তিনি বলেন, এই সীমান্ত হাট সহ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক এবং আন্তরীণ সম্পর্কের বিকাশে গুহীত বিভিন্ন পরিকল্পনা শিল্প সম্ভাবনা উদােষের পাশাপাশি আভ্যন্তরীণ সম্পর্ক সুকরণে অগ্রণী ভূমিকা নেবে। আগামী দিনে দুই রাষ্ট্র মিলে একসাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আগামীদিনে দুই দেশের আরও নৈকট্যের মধ্য দিয়ে এই সীমান্ত হাট বাণিজ্যিক দিক উন্মােচনের পাশাপাশি হৃদয়ের মেলবন্ধনের সুযোগ করে দিয়েছে। দুই রাষ্ট্রের নাগরিকরাই এর সুযােগ গ্রহণ করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী মনােজ কান্তি দেব বলেন, শিল্পক্ষেত্রে বিকাশে একাধিক পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নে অগ্রাধিকারের ভিওিতে কাজ করছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই রাজ্যে সম্পন্ন হওয়া ইনভেস্টমেন্ট সামিট রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনার বিকাশে এক উল্লেখযােগ্য পদক্ষেপ। মৈত্রী সেতু থেকে শুরু করে একাধিক পদক্ষেপ ভারত বাংলাদেশের অন্তিরীণ ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা নেবে। আগামীদিনে আগরতলা বিমানবন্দরকে কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবার শুরুর মাধ্যমে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের আরও বিকাশ হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। এদিনের অনুষ্ঠানে নিপুরা ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা শুভেচ্ছা ও স্মারক বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংসদ সদসা আদুস সহিল, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম সােরাইস্বামী, ত্রিপুরা শিল্প ও বাণিজ্য নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায়, বিধায়ক পরিমল দেববর্মা, ধলাই জিলা পরিষদের সভাধিপতি জবি ঘােষ, ধলাই জেলার জেলাশাসক গােভেকার ময়ূর রতিলাল প্রমুখ।