Hare to Whatsapp
পশুপাখির সুরক্ষা এবং রোগ সংক্রমণের সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য রাজ্যে মোবাইল ভেটেরিনারী ইউনিট ও কল সেন্টার প্রকল্প চালু হতে চলেছে : প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, জানুয়ারি ৭, : রাজ্যের সমস্ত প্রকার পশুপাখীর সুরক্ষা এবং রোগ সংক্রমণের সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য রাজ্যে শীঘ্রই মোবাইল ভেটেরিনারী ইউনিট ও কল সেন্টার প্রকল্প চালু হতে চলেছে। এই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবর্ষে প্রাথমিকভাবে রাজ্যকে ১ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা অনুদান হিসাবে প্রদান করেছে। গত ৬ জানুয়ারি সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস এই সংবাদ জানান। তিনি জানান, এই প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাণী স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদানে ১২টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়েছে। এই ১২টি অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বাৎসরিক খরচের ৯০ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার বহন করবে। বাকী ১০ শতাংশ রাজ্য সরকার বহন করবে। ১২টি অ্যাম্বুলেন্স রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পরিভ্রমন করবে। প্রতিটি অ্যাম্বুলেন্স-এ একজন প্রাণী চিকিৎসক, একজন প্রাণী চিকিৎসা সহায়ক এবং একজন চালক ২৪ ঘন্টা পরিষেবা প্রদানে নিয়োজিত থাকবেন। মন্ত্রী শ্রী দাস জানান, এই অ্যাম্বুলেন্সগুলি একটি কেন্দ্রীয় কল সেন্টার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। গ্রামের কোন কৃষক (প্রাণী পালক) একটি সুনির্দিষ্ট টোল-ফ্রি নম্বরে কল করার সঙ্গে সঙ্গে ঐ এলাকায় কর্তব্যরত ভ্রাম্যমান চিকিৎসকের কাছে কল পৌছে যাবে এবং সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসক, সহ-চিকিৎসক এবং চালক সহ অ্যাম্বুলেন্স কৃষকের (প্রাণী পালকের) বাড়িতে পৌছে যাবে এবং অসুস্থ প্রাণীর চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করবেন। সমস্ত প্রকারের আধুনিক প্রাণী চিকিৎসা ব্যবস্থা কৃষকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প চালু করার মূল উদ্দেশ্য বলে মন্ত্রী জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী আরও জানান, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যের গ্রাম-শহর এলাকার মানুষকে কিভাবে আরও অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল করা যায় তার জন্য বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। পরিকাঠামোগত উন্নয়নে যে সমস্ত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যে ডিম উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গান্ধীগ্রামস্থিত রাজ্যিক পোল্ট্রি ফার্মের আধুনিকীকরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরজন্য ৪ কোটি ৪৩ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে। অধিক সংখ্যক শুকর ছানা উৎপাদন ও কৃষকদের মধ্যে বিতরণের লক্ষ্যে সিপাহীজলা জেলার আমতলিতে ২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন পিগ ফার্ম স্থাপন করা হবে। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনার মাধ্যমে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তর সুবিধাভোগীদের মধ্যে হাঁসের বাচ্চা বিতরণ করার কাজ করছে। এরমধ্যে অধিকাংশ হাঁসের বাচ্চাই রাজ্যের বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে। রাজ্যেই অধিক সংখ্যক হাঁসের বাচ্চা উৎপাদনের লক্ষ্যে উনকোটি জেলার দুধপুর গ্রামে একটি নতুন ডাক ফার্ম স্থাপন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দপ্তর। এরজন্য ২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী শ্রীদাস আরও জানান, রাজ্যে পশুপাখীর চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্প্রসারনের লক্ষ্যে খোয়াই, উদয়পুর, বিলোনীয়া, সাব্রুম এবং ধর্মনগরে ৫টি নতুন পশু হাসপাতাল তৈরী করা হবে। এরজন্য ব্যয় হবে ৬ কোটি ৫ লক্ষ টাকা। এছাড়াও ১১ কোটি ২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ১৩টি ভেটেরিনারি ডিসপেনসারি তৈরী করা হবে। পাশাপাশি পশুপাখীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ১৭টি ভেটেরিনারি সাব-সেন্টার নির্মাণ হবে। এরজন্য ৩ কোটি ১১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা ব্যয় হবে।