Hare to Whatsapp
২০২৩-এ বিজেপি-কে রুখতে ত্রিপুরায় গণতান্ত্রিক ঐকমঞ্চ গড়ে উঠতেই পারে : মানিক সরকার
By Our Correspondent
আগরতলা, ডিসেম্বর ১, : সিপিএম দল সরকারিভাবে এ বিষয়ে এখনও কিছু না বললেও দলের পলিট ব্যুরো সদস্য এবং চার বারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বিজেপি-কে রুখতে ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ত্রিপুরায় বৃহত্তর গণতান্ত্রিক ঐক্যমঞ্চ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা বাতিল করলেন না। গত 30 নভেম্বর সন্ধ্যার পর আগরতলা মেলার মাঠে দলের রাজ্য দফতরে সাংবাদিকদের নানান জিজ্ঞাসার জবাব দিচ্ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি শেষ হওয়া ২০টি পুর ও নগর সংস্থার নির্বাচনে শাসক বিজেপি-র ৯৮.৫ শতাংশ আসন জেতা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মানিক বলেন, ভোটই হল না, প্রতিক্রিয়া দেবো কী ! ৪৪ মাস ধরে ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাস চলছে। একদলীয় স্বৈরশাসন আরও জাঁকিয়ে বসছে। এর আগে লোকসভা ভোটেও প্রহসন হয়েছে। এবার, ২০টার মধ্যে ৭ টা পুর সংস্থার একটি আসনেও বিরোধীদের মনোনয়ন পেশ করতে দেওয়া হলো না। ভোটের আগেই গুণ্ডামি করে সব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করা হলো। প্রচারের সময় বিরোধী প্রার্থীরা, তাঁদের প্রস্তাবকরা, কর্মী সমর্থকরা আক্রান্ত হলেন, বাড়িঘর ভাঙা হল, আগুন দেওয়া হলো। ভোটের আগে পাড়ায় পাড়ায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে শাসক দলের বাইক বাহিনী দুষ্কৃতীরা পরদিন ভোট দেবার জন্য ঘর থেকে বেরোলে লাশ ফেলার হুমকি দিল। ভোটের দিন অধিকাংশ ভোটারকে ভোট দিতেই দেওয়া হলো না। এটা কীসের ভোট ? কোথায় নির্বাচন ? সংবিধানকে পদদলিত করা এই ভোটে কে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় তার হিসেব করা মানে এই প্রহসনকে স্বীকৃতি দেওয়া ।
মানিক বলেন, পুলিশকে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে অথর্ব বানিয়ে রেখে মানুষের ভোট লুট করা হয়েছে। মানুষ কিছুতেই এটা মেনে নেবে না। বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, তিনি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে দিল্লি থেকে ২২ মিনিট ৫০ সেকেন্ড বক্তৃতা দিয়ে ত্রিপুরার সরকারি প্রকল্প ঘোষণা করলেন । এরপর প্রহসনের ভোটে জয়ের জন্য অভিনন্দিত করলেন। এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে ! প্রহসনের ভোট-ফলাফলেও রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস অল্প সময়েই গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হয়ে ওঠার স্বাক্ষর রেখেছে। সামাজিক মাধ্যমে বাম-তৃণমূলের ঐক্য সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা রয়েছে। স্বভাবতই এই সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মানিক সরকারকেও। জিজ্ঞাসা আসে, ত্রিপুরায় এখন তিনটি প্রধান রাজনৈতিক শক্তি, বিজেপি, বামফ্রন্ট এবং তৃণমূল কংগ্রেস, এটা আপনি মানেন ? মানিকের সাফ জবাব, না মানার কী আছে ? প্রশ্ন : সামনাসামনি সন্ত্রাস মোকাবিলায় আপনাদের তো সেভাবে দেখা যাচ্ছে না! মানিক বলেন, আমরা মাঠে ছিলাম,আছি,থাকবো। আছি বলেই তো আক্রান্ত হচ্ছি। ২০১৮-তে যারা বিজেপি-কে ভোট দিয়েছিলেন, সেইসব মানুষের উপরও তারা এখন এক বিন্দু ভরসা করতে পারছে না। সেজন্যই গায়ের জোরে ভোট করছে। কিন্তু, এই রকম ভোটলুট ঠেকাবেন কী করে ? মানিকের উত্তর, এটা নির্বাচন কমিশনের কাজ। মানুষও ঐক্যবদ্ধভাবে রুখবে। এরপরই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, ২০২৩-এর আগে বিজেপি-র বিরুদ্ধে রাজ্যে কোনও বৃহত্তর গণতান্ত্রিক ঐকমঞ্চ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে কি ? মানিকবাবু একটু থেমে জোরের সঙ্গেই বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ত্রিপুরায় ব্যক্তি সংগঠন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একই ঐকমঞ্চে আসতেই পারে। আমি তো কোনও অসুবিধা দেখছি না।