Share Whatsapp

সবকটি পুর নিগম ও নগর পঞ্চায়েতেই বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভের পথে শাসক দল বিজেপি,পুর এলাকায় প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে তৃণমূল

By Our Correspondent

আগরতলা, নভেম্বর ২৮, : আগরতলা পুর নিগম সহ রাজ্যের সবকটি পুর নিগম ও নগর পঞ্চায়েতেই বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভের পথে শাসক দল বিজেপি। আজ দুটা পর্যন্ত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী আগরতলা পুর নিগমের ৫১টি ওয়ার্ডের মধ্যে একান্নটিতেই জয়ী হয়ার পথে বিজেপি। একই সাথে ২টি নগর পঞ্চায়েত ও ৫ টি পুর পরিষদে ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষিত হয়েছে বিজেপি। বাদ বাকি আটটি পুর পরিষদ ও চারটি নগর পঞ্চায়েতেও জয়লাভের পথে বিজেপি। তবে আজ দুপুর দুটা পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, বহু পুর ও নগর পঞ্চায়েত ভোটেই সিপিএম, কংগ্রেস ও তৃণমূলের প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট বিজেপি-র থেকে বেশী। অর্থাৎ ভোট ভাগাভাগির সুফল পেয়েছে বিজেপি। তা না হলে বিজেপি-র প্রার্থীর বহু আসনে পরাজয় হতো।

আজ দুটা পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী আগরতলা পুর নিগমের এক থেকে নয় নং ওয়ার্ডের সবক’টি ওয়ার্ডেই বিজেপি প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে। এই নয়টি ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থীরা পেয়েছেন ২৭,০৮১ টি ভোট। আর তৃণমূল প্রার্থীরা পেয়েছেন ৮৯৮৩টি ভোট ও সিপিএম প্রার্থীরা পেয়েছে ৮৪৮১ টি ভোট, সিপিআই ৬১৬টি ভোট ও কংগ্রেস পেয়েছে ১৫৭৯টি ভোট। নির্দল ১১৮ ও নোটায় গেছে ৬১৭টি ভোট। পুর নিগমের ৭ নং ওয়ার্ডে ও ৫নং ওয়ার্ডে বিরোধী কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএম- প্রার্থীর সন্মিলিত ভোট বিজেপি প্রার্থীর থেকে অনেক বেশি।

একই রকমভাবে আগরতলা পুর নিগমের ১৮ থেকে ২৮ নং ওয়ার্ডের গণনার সর্বশেষ যে ফলাফল বেলা বারটা নাগাদ আমাদের হাতে এসেছে তা থেকে দেখা গেছে, এই দশটি কেন্দ্রের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১২,৮৪৩, বিজেপি ২৩,৯৮৭, সিপিআউই ৯৩২, সিপিএম ৮৯৩৪, কংগ্রেস ১১২৯, নির্দল ১৪৪৭ এবং নোটায় গেছে ৯২৭টি ভোট।

এখানে ১৯ নং ওয়ার্ড, ২২ নং ওয়ার্ড, ২৩ নং ওয়ার্ড, ২৪ নং ওয়ার্ড, ২৫ নং ওয়ার্ড এর বিরোধীদের সন্মিলিত ভোট বিজেপি-র থেকে বেশী। অর্থাৎ এক্ষেত্রে বিজেপি ভোট ভাগাভাগির সুফল পেয়েছে।

একইরকম ভাবে পুর নিগমের ৩৫ থেকে ৫১ পর্যন্ত ১৭টি আসনের মধ্যে ৬টি আসনে গননা শুরু হয়েছে তার মধ্যে সবক’টি আসনেই বিজেপি এগিয়ে।

এদিকে যে ক’টি পুর পরিষদ ও নগর পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে তার মধ্যে ধর্মনগর পুর পরিষদদের সবক’টি আসনেই বিজেপি জয়ী হয়েছে। ধর্মনগর পুর পরিষদের মোট ভোটার ২৯,৭৯৩। এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ৮০২, বিজেপি ১৩,৮৯৬, সিপিআই(এম) ৪,১০০৭, কংগ্রেস ৫৯৩, নির্দল ২৭০ ও নোটায় গেছে ৬৭১টি ভোট। ২৯৭৯৩ জন ভোটারের মধ্যে ২০৩৭২ জন ভোটার এখানে ভোট দিয়েছেন।

পানিসাগর নগর পঞ্চায়েতের মোট ভোটার ছিল ৫৭৯০ জন। এর মধ্যে ৪৭৫৬ জন ভোট দিয়েছেন। এখানে নগর পঞ্চায়েতের ১৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে দুই নং ওয়ার্ডটি সিপিআই(এম) এর দখলে গেছে। বাদবাকি সবক’টি ওয়ার্ডই পেয়েছে বিজেপি। প্রদত্ত ৪৭৫৬ ভোটারের মধ্যে বিজেপির প্রার্থীরা পেয়েছেন ৩১০৬টি ভোট, সিপিএম ১৪৩৩টি ভোট, কংগ্রেস পেয়েছে ১৩৮টি ভোট ও নোটায় গেছে ৭৯টি ভোট।

কৈলাসহর পুর পরিষদের ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬নং ওয়ার্ডটি পেয়েছে সিপিএম। তবে এখানকার সিপিআইএম ও কংগ্রেসের সন্মিলিত ভোট বেশ কিছু ক্ষেত্রেই বিজেপি-র থেকে বেশি। মোট ১৭০৮১ জন ভোটারের মধ্যে এখানে ১৩,৭৯৯ জন ভোট দিয়েছে। তার মধ্যে তৃণমূল ৯৯টি, বিজেপি ৭৭২৬টি, সিপিএম ৩৯৭৫টি, কংগ্রেস ১৬৯০টি নির্দল ২৫টি ও নোটায় গেছে ২৮৪টি ভোট।

আমবাসা পুর পরিষদে ১৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে তিন নং ওয়ার্ডটি পেয়েছে তিপ্রা মথা। বাকি সবক’টি আসনই পেয়েছে বিজেপি। এখানেও বিজেপি ভোট ভাগাভাগির সুফল পেয়েছে। তবে এখানে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তৃণমূল। তৃণমূল পেয়েছে মোট বৈধ ভোট ৯৪১৮ টির মধ্যে ২৫৭৫টি ভোট, সিপিএম ২১৪৫টি ভোট ও বিজেপি পেয়েছে ৪২৪০টি।

খোয়াই পুর পরিষদের ৭টি আসনে ভোট হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপি প্রার্থীরা আগেই জয়ী হয়েছে। যে ৮টি ওয়ার্ডে ভোট হয়েছে তার মধ্যে ভোটার ছিলেন ৭৫৩৭ জন। এর মধ্যে বিজেপি প্রার্থীরা পেয়েছেন ৫২৭৩ টি ভোট, সিপিএম ১২৭৮টি ভোট। তৃণমূল এখানে কোন প্রার্থী দেয়নি। সবক’টি আসনেই বিজেপি প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।

তেলিয়ামুড়া পুর পরিষদের ১৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে সবক’টি ওয়ার্ডেই বিজেপি প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। মোট ১৫৯২৫ জন ভোটারের মধ্যে এখানে ১৩৬৪৬ জন ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে তৃণমূল ৩৭০৫টি ভোট, বিজেপি পেইয়েছে ৯৩১০টি ভোট, সিপিএম পেয়েছে ২৩৭০টি ভোট। অর্থাৎ এখানে তৃণমূল দ্বিতীয় বৃহত্তর দল হিসাবে উঠে এসেছে।

জিরানিয়া নগর পঞ্চায়েতের একটি মাত্র ওয়ার্ডে ভোট হয়েছে। এখানে দশনং ওয়ার্ডে মোট ভোটার ছিলেন ৬১১ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছে ৪৫৪ জন। এক্ষেত্রে বিজেপি পেয়েছে ৩১৮টি ভোট। নির্দল প্রার্থী পেয়েছে ১২৫টী ভোট আর নোটায় গেছে ১১টি ভোট।

মেলাঘর পুর পরিষদের ১৩টি আসনের সবকটিতেই জয়ী হয়েছে বিজেপি প্রার্থীরা। এখানে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১১৭৩০ জন। এর মধ্যে ১০০২২ জন ভোট দিয়েছেন। তার মধ্যে বিজেপি প্রার্থীরা পেয়েছেন ৭৯৪১টি ভোট, সিপিএম ১৪৫৮টি ভোট, কংগ্রেস পেয়েছে ৪৪০টি ভোট।

সোনামুড়া নগর পঞ্চায়েতের ১৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে সবক’টি ওয়ার্ডেই জয়ী হয়েছে বিজেপি। এখানে মোট ভোটার ছিল ৮৩৫৪ জন। তার মধ্যে তৃণমূল প্রার্থীরা পেয়েছে ১৪৩৩ টি ভোট, বিজেপি পেয়েছে ৩৬৩২টি ভোট, সিপিএম পেয়েছে ১৯৫৫টি ভোট, কংগ্রেস পেয়েছে ১৫৩টি ভোট। অর্থাৎ সিপিএম এখানে দ্বিতীয় বৃহত্তর দল হিসাবে উঠে এসেছে।

অমরপুর নগর পঞ্চায়েতের ১৩টির মধ্যে সবক’টি ওয়ার্ডেই জয়ী হয়েছে বিজেপি। এখানে মোট ভোটার ছিল ৮১৭২ জন। তার মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৩৮৪টি ভোট, বিজেপি ৪৯৭৫ টি ভোট, সিপিএম ১৬২৫ টি ভোট অর্থাৎ এখানেও সিপিএম প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে।

বিলোনিয়া পুর পরিষদের ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে সবকটিতেই জয়ী হয়েছে বিজেপি। মোট ১৬১৩৫ জন ভোটারের মধ্যে এখানে ভোট দিয়েছেন ১২,৮২৮ জন। এর মধ্যে তৃণমূল ৫০৪টি ভোট, বিজেপি ৮৩৬১টি ভোট, সিপিএম ২৯৬৪ টি ভোট, কংগ্রেস পেয়েছে ১০৬টি ভোট। এখানেও প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে সিপিএম।

সাব্রুম নগর পঞ্চায়েতের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে সবকটিতে জয়ী হয়েছে বিজেপি। এখানে মোট ভোটার ছিল ৫৪৫৯ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৪৮০৩ হজন। বিজেপি মোট ভোট পেয়েছে ৩০১০টি, সিপিএম ১৫৭৪টি, কংগ্রেস ও তৃণমূল এখানে কোন প্রার্থী দেয়নি।

সিপিএম যেসব জায়গায় প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে এর মধ্যে রয়েছে- ধর্মনগর, পানিসাগর, কৈলাসহর, কুমারঘাট, খোয়াই, জিরানিয়া, মেলাঘর, সোনামুড়া, অমরপুর, বিলোনিয়া ও সাব্রুম। তৃণমূল যেসব জায়গায় প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে তার মধ্যে রয়েছে- আমবাসা ও তেলিয়ামুড়া।

বেলা দুইটা পর্যন্ত আগরতলা শহরের যে ৮০ শতাংশ আসনের গননা প্রায় শেষ হয়েছে সেই সব আসনের প্রদত্ত ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, রাজধানী পুর নিগম এলাকায় প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে তৃণমূল এবং তৃতীয় স্থানে চলে গেছে সিপিএম। পুর নিগমের যে ৮০% আসনে গননা শেষ হয়েছে তার সবক’টি আসন মিলিয়ে সিপিএম মোট ভোট পেয়েছে ৩৯৭১২টি। আর তৃণমূল ভোট পেয়েছে ৪৬৮২৮টি। এই হিসাবে রাজধানী শহরের পুর এলাকায় প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে তৃণমূল।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.